×

সম্পাদকীয়

সেবাদাতাদের দুর্নীতি দুদকের সুপারিশগুলো গুরুত্ব দিন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:৫৮ পিএম

প্রতি বছর দুর্নীতি বন্ধে একাধিক প্রতিষ্ঠানের কাছে সুপারিশ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো দুর্নীতি বন্ধে দুদকের সুপারিশগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ কারণে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি বন্ধ হচ্ছে না। বরং দিন দিন বাড়ার চিত্র আমরা দেখছি। দুদক সেবাদাতাদের দুর্নীতির খাতওয়ারি চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি তা প্রতিরোধে ১৬ দফা সুপারিশ পেশ করেছিল। এসব সুপারিশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্বসহকারে আমলে নেয়া জরুরি। গত সোমবার দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় বলেন, ২০১৯ সালে স্বাস্থ্য খাত, নদী দখল, ওয়াসাসহ ১৪টি খাতে দুর্নীতি চিহ্নিত করে তা বন্ধে দুদক সুপারিশ করেছিল। কিন্তু সরকারি দপ্তরগুলো এসব সুপারিশকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। দুর্নীতির অন্যতম খাত রাজস্ব। এটা খুবই কঠিন ও জটিল। এটা সহজ হলে সবাই ট্যাক্স দেবে। এছাড়া কালো টাকা সাদা করার নামে ঘুষের টাকা বৈধকরণ নিয়েও প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে যে কিছু দৃষ্টান্ত দেখা যাচ্ছে, তার পেছনের রাঘববোয়ালদের বিচারের আওতায় আনা বা জবাবদিহি নিশ্চিত করা বাস্তবে সম্ভব হয়নি। ফিন্যান্সিয়াল, ব্যাংকিং কিংবা ক্রয় খাতের আলোচিত বড় বড় ঘটনার ক্ষেত্রেও সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের ধরাছোঁয়া বা জবাবদিহির বাইরে রয়ে গেছে। যে কারণে বেড়েছে দুর্নীতির ব্যাপকতা। পাসপোর্ট, ভূমি অফিসসহ আমরা এমপি পাপুল, শাহেদদের মোটা দাগের দুর্নীতি দেখেছি। সরকার যদি এদের না ধরত, তাহলে তো আমরা জানতে পারতাম না। বলা যায়, বর্তমানে দুর্নীতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, গণমাধ্যম কর্মী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক টাউট, ব্যবসায়ী, এমনকি সাধারণ মানুষÑ কার মধ্যে দুর্নীতি নেই? দুর্নীতিবাজ হিসেবে যারা প্রমাণিত তাদের এখন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে, যা অন্যদের জন্য বার্তা বয়ে আনবে। কালের প্রবাহে বাংলাদেশে দুর্নীতির রূপ বদলেছে, নানারূপে দুর্নীতি হচ্ছে। সার্বিক দুর্নীতি সেই অর্থে কমার কোনো লক্ষণ নেই। আশার খবর, সেবা খাতগুলোতে আগের তুলনায় বেশি জবাবদিহিতা এবং অবাধ তথ্য আদান-প্রদান ও জানার ক্ষেত্র তৈরি হওয়ায় সাধারণ জনগণ সেবাপ্রাপ্তির অধিকার সম্পর্কে ক্রমেই সচেতন হচ্ছে, যা দুর্নীতি কমিয়ে আনতে এক ধরনের কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। সরকারি অফিসে দুর্নীতিবাজ কর্মচারী যেমন রয়েছেন, দুর্নীতি করেন না, সৎ জীবনযাপন করেন এমন অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীও রয়েছেন। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী দেশের অগ্রগতির জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেন বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দুদকের উপস্থাপিত অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেবা খাতের দুর্নীতি বন্ধ হলে উন্নয়নের উদ্যোগ জনগণের জন্য সুফল বয়ে আনবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App