×

সারাদেশ

চট্টগ্রামে চাল-তেলের বাজার বেতাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৫:২৫ পিএম

চট্টগ্রামে চাল-তেলের বাজার বেতাল

ফাইল ছবি

চট্টগ্রামে আবারো বেড়েছে চালের দাম। সেই সঙ্গে তেল, চিনিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বেশকিছু ভোগ্যপণ্যের দামও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে নগরীর চাক্তাই ও পাহাড়তলীর পাইকারি বাজারে সবধরনের চালের দাম বস্তা প্রতি ২শ’ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। উত্তরবঙ্গের মিল মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।

অপরদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ার অযুহাত দেখিয়ে তেলের বাজারে অস্থিরতা চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। গত কয়েক মাস ধরেই বাজারে উঠানামা করছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। ভোগ্যপণ্যের লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা।

নগরীর পাহাড়তলী চালের পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রামের চাল ব্যবসায়ীরা মূলত নওগাঁ, দিনাজপুর, রাজশাহী, বগুড়া ও নীলফামারি থেকে যাবতীয় চাল চট্টগ্রামে আনা হয়। বর্তমানে জিরাশাইল বস্তা প্রতি ১০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ৫০ টাকা, মিনিকেট (সিদ্ধ) চাল ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৮৫০ টাকা, কাটারি (আতপ) ৩০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ১৫০ টাকা, নাজিরশাইল (আতপ) ২৫০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ১৫০ টাকা, পাইজাম (আতপ) ২০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তাছাড়া পাইজাম (সিদ্ধ) ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৩৫০ টাকা, আতপ (মিনিকেট) ১০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৯০০ টাকা, মেতি আতপ ২০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬০০ টাকা, চিনি আতপ ৩ হাজার ১৫০ টাকা ও সিদ্ধ চাল ৫০ টাকা বেড়ে ২ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়ায় প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। খুচরা বাজারে বিআর-২৮ কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৫২ টাকা, আপেল পাইজাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, সরু মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, আঠাশ মিনিকেট ৫০ থেকে ৫৪ টাকা, নাজির শাইল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, কাটারি ৫৭ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়।

পাইকাররা বলছেন, উত্তরবঙ্গের মিলারদের কারসাজির কারণেই চালের দাম বেড়েছে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির নেপথ্যে মিল মালিকরা জড়িত। মিলে নজরদারি বাড়ানোর দাবি ব্যবসায়ীদের।

চট্টগ্রামের চালের পাইকারি বাজার পাহাড়তলী চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নেজাম উদ্দিন ভোরের কাগজকে বলেন, রাইস মিলগুলো উত্তরবঙ্গে। চালের বাজারে দাম বৃদ্ধির মিলাররা। তাদের কারসাজির কারণে চালের দাম বেড়েছে। এলসির মাধ্যমে চাল আমদানি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মজুদ করে রেখেছে।

মিল মালিকদের কাছে চালের মজুদ থাকলেও তারা বলছে, তাদের কাছে চাল নেই। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে তারা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। উত্তরবঙ্গের মিল মালিকদের নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। যাতে তারা সংকট দেখিয়ে চালের বৃদ্ধি করতে না পারে।

এদিকে চালের পাশাপাশি বেড়েছে সব রকম ভোজ্যতেলের দামও। খাতুনগঞ্জে ব্যবসায়ীরা জানান, দুই সপ্তাহ আগেও ১৮৫ কেজি তেলের ড্রামের দাম ছিল ৪ হাজার ২৫০ টাকা। এখন তা ৪ হাজার ৪৮০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। দুই মাসের ব্যবধানে বেড়েছে পামওয়েলের দামও। পামওয়েল আগে ১৮৫ কেজির দাম ছিল ৩ হাজার ২৫০ টাকা, এখন তার দাম বেড়ে ৩ হাজার ৬২০ টাকা হয়েছে। তাছাড়া বোতলজাত তেল লিটারে ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ১২৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ১০৫ টাকায় বিক্রি হতো।

খাতুনগঞ্জে মক্কা স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ তওকীর বলেন, শীতকালে ভোজ্য তেলের চাহিদা বাড়ে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি ও স্থানীয় বাজারে সরবরাহ কম বিধায় তেলের দাম বেড়েছে। তেলে ভেজাল করা গেলে দাম কিছুটা কমতো। কিন্তু এখন আর সে কাজ করার সুযোগ নেই। আমাদেরকে খাঁটি তেল বিক্রি করতে হয় বিধায় দাম বেড়েছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কায়দায় ক্রেতাদের পকেট কাটছে। এক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ও নজরদারি আরো জোড়দার করার বিকল্প নেই। বিকল্প বাজার হিসেবে টিসিবির মাধ্যমে ভোগ্যপণ্য বিক্রি জোরদার ও বাজার তদারকি জোরদার করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App