×

শিক্ষা

ইবিতে কিশোর আটক, স্বীকারোক্তিতে বেরিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৫:২৬ পিএম

ইবিতে কিশোর আটক, স্বীকারোক্তিতে বেরিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

শাহরিয়ার নাফিস হিমেল

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে চুরি করতে এসে শাহরিয়ার নাফিস হিমেল (১৫) নামে এক কিশোর আটক হয়েছে। সে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া এলাকার চরপাড়া গ্রামের ইউসুফ মন্ডলের ছেলে। বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের পাশে রাখা নির্মাণ সামগ্রী চুরি করতে এলে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ইবি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আনসার সদস্যরা জানান, রাতে একটি ভ্যানে করে ওই ভবনের পাশে থাকা কিছু নির্মাণ সামগ্রী চুরি করতে আসলে দায়িত্বরত আনসার সদস্য তাকে দেখে ফেলেন। এ সময় সে ভ্যান চালককে রেখে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তিনি তার পিছু নিয়ে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি ও আনসার সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে চুরির কথা স্বীকার করে ওই কিশোর। এ ছাড়াও কয়েকমাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হল থেকে সাবমারসিবল পাম্প চুরি এবং কয়েকদিন আগে দুই ভ্যান টাইলস ও আট কার্টন ক্যাবল চুরি সহ বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ সামগ্রী চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথাও স্বীকার করে সে।

এ সময় সে চুরি সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরো বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কর্মচারী তোজামের ভাগ্নে সাব্বির হোসেন, শৈলকুপার সাতগাছী এলাকার সাগর আলী, পদমদী গ্রামের জবার আলীর ছেলে তরিকুল, একই গ্রামের বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝালমুড়ি বিক্রেতা জামালসহ রঞ্জু মিয়া, আকাশ ও সুমনের নাম বলেন।

এদের মধ্যে সাগরের শৈলকুপায় ভাঙারির দোকান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চুরি করা মালামাল গুলো সাগরের দোকানে বিক্রি করা হয়। চুরি করার জন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের থানা গেট, লালন শাহ ও বঙ্গবন্ধু হলের পকেট গেট ব্যবহার করে বলে জানায় সে।

কিশোর জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ঘাস কাটা এবং কাগজ কুড়ানোর নামে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। মূলত ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মালামালের সন্ধান পেতেই হিমেলসহ অন্যরা ক্যাম্পাসে আসত। মামার চাকরির সুবাদে সাব্বিরও এগুলোর খোঁজ খবর রাখত। দিনভর সন্ধান শেষে রাতের বেলা আনসারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ভ্যান ভর্তি মালামাল নিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে বলে জানায় সে।

স্বাীকারোক্তিতে সে আরো জানায়, গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের চুরির ঘটনার সঙ্গেও সম্পৃক্ত সে। তার সঙ্গে সাগরসহ আরো ৪ থেকে ৫ জন ওইদিন চুরি করতে আসে। পাম্প চুরির জন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের পকেট গেট ব্যবহার করে। পরে সেটি মিনি ট্রাকে করে সাগরের দোকানে বিক্রি করে পাঁচ হাজার টাকা কামান।

আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতেই ওই কিশোরকে ইবি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি। যদিও পরে সকালে কিশোর হওয়ায় তাঁকে অভিভাবকের জিম্মায় দিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আটক কিশোরের বিরুদ্ধে আগে থেকে কোন মামলা না থাকায় এবং বয়স কম হওয়ায় তাঁকে অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। আমরা অভিযুক্ত অন্যদের শনাক্ত করতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।

এ দিকে সাবমারসিবল পাম্প চুরির ঘটনায় ইবি থানায় সাধরণ ডায়েরী ও প্রক্টরকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল প্রশাসন। চার মাস হয়ে গেলেও ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা যায়নি। এমন প্রেক্ষাপটে আটক কিশোরকে ছেড়ে দেওয়া নিয়ে ক্যাম্পাসে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘প্রক্টরিয়াল বডি তাঁকে থানায় সোপর্দ করেছিল। কিন্তু থানা থেকে আমাকে জানানো হয়েছে কিশোর হওয়ায় তাকে অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশ অভিযুক্ত অন্যদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App