×

সারাদেশ

আধাবেলাও টিকল না সওজের নির্মাণকাজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৯:৫৭ এএম

আধাবেলাও টিকল না সওজের নির্মাণকাজ

বরাবরই নানা কারণে সমালোচিত সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কাজ না করেই বিল তুলে নেয়া, এক কাজের কথা বলে অন্য কাজ করা নতুন কিছু নয়। তবে এবার সবকিছুকেই ছাড়িয়ে গেছে তাদের কীর্তি। সিলেট নগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রাতে করা কার্পেটিং সকাল হতেই গাড়ির চাকার সঙ্গে উঠে চলে এসেছে।

সিলেট-সুনামগঞ্জ রোডের এই অংশ নিয়ে এর আগেও সমালোচনা কম হয়নি। প্রতি বছর বৃষ্টির দিনে সড়কে হাঁটু পানি জমে। অনেকে সিলেটের কক্সবাজার বলেও টিপ্পনি কাটতে ছাড়েন না। তবে বরাবরই চুপ ছিল সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সমালোচনা বেশি হলে কিছু ইট ফেলে সাময়িক সংস্কার করে দেয়া হয়। তবে এমনটি ঘটেছে তিন বছরে চারবার। প্রতি বারই এক মাসের মধ্যে ইট-সুড়কি ভেঙে হাওয়ায় মিলায়। আর সওজ ফের মেরামত করে। বরাদ্দ নেই বলে স্থায়ী মেরামত আর হয়নি। এ বছর অবশ্য একটু ব্যতিক্রম। ৫৩ লাখ টাকায় রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেন তারা। টেন্ডার ডেকে মো. আমিনুল হক প্রাইভেট লি. নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজও দেয়া হয়। তবে রাতের আঁধারে করা কাজ দিনের আলোতে আর টিকতে পারেনি। সকাল হতেই রাস্তার কার্পেটিং উঠে আগের অবস্থায় চলে এসেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ- মানহীন নামকাওয়াস্তে কাজ করায় সকাল হতেই কার্পেটিং উঠে গেছে। তবে বরাবরের মতোই এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সওজ সিলেট বিভাগের কর্তারা। তাদের ভাষ্য পুরো কাজ ভালো করে হলেও সামান্য কিছু সমস্যা হওয়ায় ফের কাজ করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর গত শুক্রবার থেকে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করার চেষ্টা করেছে। এ নিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে এলাকাবাসীর একাধিকবার বচসা হয়। সঠিকভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও গত মঙ্গলবার রাতে পাঠানটোলা দ্বিপক্ষীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের জায়গায় কার্পেটিং করা হলে সকাল হতেই গাড়ির চাকার সঙ্গে লেগে তা উঠে যায়। সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট শহরের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটিতে প্রায় সবসময়ই ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে এলাকাবাসীর দাবি ছিল কাজ হলে তা যেন টেকসই হয়। তবে মঙ্গলবারের এ ঘটনায় তারা হতবাক। এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী দোকানি আফজাল হোসেন বলেন, গতরাতেই তারা কার্পেটিং করেছেন। দ্রæত কাজ সেরে শ্রমিকরা চলে গেলে সকালের দিকে আমরা দেখতে পাই নতুন কার্পেটিং উঠে চলে আসে। এতদিন অপেক্ষার পরে এই মানের কাজ হবে কেউ ভাবতে পারেনি। এলাকার অনেকেই এসে শ্রমিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করেছেন।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মো. আমিনুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এখানে কাজের মান নিয়ে কোনো সমস্যা নেই, কাজ নিয়মমতোই হচ্ছে। কোনো একটি ভুলের কারণে এমনটি হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে আজ ফের নতুন কাজ শুরু করিয়েছি। তিনি বলেন, এই রাস্তায় পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলে, হয় রাতে সড়কের কার্পেটিং কাঁচা থাকতেই পণ্যবাহী গাড়িগুলো রাস্তার এই অংশে চলাচল করায় এমনটি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, শতভাগ সঠিকভাবেই কাজ সম্পন্ন করা হবে। সঠিকভাবে কাজ করলে ঠিকাদার তার বিল পাবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App