×

রাজধানী

৫ কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ ভিওআইপিসহ গ্রেপ্তার তিন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৫:৩৫ পিএম

৫ কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ ভিওআইপিসহ গ্রেপ্তার তিন

জব্দকৃত মালামালসহ গ্রেপ্তারকৃতরা।

রাজধানীর নিউমার্কেট, তুরাগ ও শাহ আলী থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদিসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মাে. কাজী এম এম মাহামুদ ওরফে ছােটন (৩২), রাকিব হাসান (৩০) ও বাবর উদ্দিন (৩০)।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এ বিষয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানায় র‍্যাব-১০ এর সিও। গ্রেপ্তারকৃতদের গতকাল বুধবার রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর নিউ মার্কেট, তুরাগ ও শাহ আলী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে ভিওআইপি ব্যবসায় ব্যবহৃত ১৯টি সিম বক্স ডিভাইস, ৪১৬টি জিএসএম এন্টেনা, ৩ হাজার ৪০০পিস টেলিটক সিম, ৭ মিনি কম্পিউটার, ৩ টি ওয়ারলেস রাউটার, ৫ টি বাংলা লায়ন মডেম ও রাউটার, ৩ টি ল্যাপটপ, (১টি DELL ও ২ টি Lenevo), ১টি ল্যাপটপ কুলার, ১০ টি বিভিন্ন চার্জার, ৬ টি ইউ এস বি মডেম, ১২ টি পাওয়ার ক্যাবল, ২৪ টি কনসেল ক্যাবল, ৩টি গ্রি-প্ল্যাগ, ৪টি মাল্টিপ্ল্যাগ, ১টি মাউস, ৪টি মােবাইল ও নগদ ২ হাজার ৩০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। বিটিআরসির দেয়া তথ্যমতে, উদ্ধারকৃত আলামতের আনুমানিক মূল্য পাঁচ কোটি টাকা।

 র‍্যাব-১০ এর সিও বলেন, গতকাল বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-১০ জানতে পারে যে, রাজধানীর নিউ মার্কেট থানাধীন কাটাবন এলিফ্যান্ট রােড ২৭৮/৩ সরদার ভিলার ২য় তলার তালহা এন্টারপ্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠানে অবৈধ ভিওআইপির যন্ত্রাংশ বিক্রয় করছে। এমতাবস্থায় ওইদিন দুপুর ২টার দিকে বিটিআরসি এর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ওই ঠিকানায় অভিজান চালিয়ে ৪টি সিম বক্স ডিভাইস (যাহার গায়ে Amplifier Digital Sound System লেখা আছে) ও ২টি মােবাইলসহ রাকিব হাসান ও বাবর উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে, ওই দিন রাত সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর তুরাগ থানাধীন রমজান মার্কেট ভাবনারটেক শামসুল আলমের বাড়ির একটি কক্ষ (যা চলমান ভিওআইপি কন্ট্রোলরুম) থেকে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার চক্রের অন্যতম সদস্য মাে. কাজী এম এম মাহামুদ ছােটনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় ওই কক্ষ থেকে সংযোগ অবস্থায় ৬টি সিম বক্স ডিভাইস, ২০০টি জিএসএম এন্টেনা, ১ হাজার ৪৫৭ পিস টেলিটক সিম, ৩ মিনি কম্পিউটার, ১টি ওয়ারলেস রাউটার, ৫টি বিভিন্ন চার্জার, ২ টি ইউ এস বি মডেম, ৫টি পাওয়ার ক্যাবল, ১০টি কনসেল ক্যাবল, ১টি থ্রি-প্লাগ, ২টি মাল্টিপ্ল্যাগ, ২টি মােবাইল ও নগদ ২ হাজার ৩০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামী অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায়ী মােঃ কাজী এম এম মাহামুদ ছােটনের দেয়া তথ্যমতে আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর শাহ আলী থানাধীন গােদারীঘাট বটতালা এলাকার ১/৩৩ নং বাসার ৫ম তলায় তাহার নিজ ফ্লাট (যা তাহার ভিওআইপি ব্যবসার প্রধান কন্ট্রোল রুম) থেকে ৯টি সিম বক্স ডিভাইস, ২১৬টি জিএসএম এন্টেনা, ১ হাজার ৯৪৩পিস টেলিটক সিম, ৪ মিনি কম্পিউটার, ২ টি ওয়ারলেস রাউটার, ৫ টি বাংলা লায়ন মডেম ও রাউটার, ৩ টি ল্যাপটপ, ১টি ল্যাপটপ কুলার, ৫ বিভিন্ন চার্জার, ৪টি ইউ এস বি মডেম, ৭টি পাওয়ার ক্যাবল, ১৪ টি কনসেল ক্যাবল, ২টি থ্রি-প্ল্যাগ, ২টি মাল্টিপ্ল্যাগ ও ১টি মাউস উদ্ধার করা হয়।

অভিযান পরিচালনাকালে বিটিআরসি এর কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। বিটিআরসি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যমতে উক্ত অবৈধ টেলিযােগাযােগ স্থাপনার মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৬ লাখ আন্তর্জাতিক কল মিনিট অবৈধ ভাবে দেশে টার্মিনেট করা সম্ভব। এর ফলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বর্তমান আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রেট অনুযায়ী দৈনিক প্রায় ৩ লাখ টাকা ও বছরে প্রায় ১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়া সম্ভব। এই উদ্ধার অভিযানকে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক কালের সব থেকে বড় অবৈধ ডিওআইপি ব্যবসায়ী ক্রয় ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার অভিযান বলে মতামত প্রদান করেন। এর ফলে বাংলাদেশ কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার চক্রের মূল হােতা ও ভিওআইপির যন্ত্রা বিক্রয়কারী। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারকে কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে ভিওআইপি এর ব্যবসায়ী চালিয়ে আসছিল বলে জানা যায় । গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App