×

সাময়িকী

সপ্ত সিন্ধু দশ দিগন্তের অনুবাদক কবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:২৬ পিএম

সপ্ত সিন্ধু দশ দিগন্তের অনুবাদক কবি

কবি শঙ্খ ঘোষ

সাহিত্যের পথপরিক্রমায় তিনি সম্পূর্ণ অর্থেই ছিলেন এক সাধক পুরুষ। নিজস্ব অন্তর্নিহিত ভাবাবেগকে সরল ভাষণে অবিরাম প্রকাশ করে গেছেন। ক্লান্তি এবং অবসাদ কখনো দমিত করতে পারেনি তাকে। অবিচল নিষ্ঠায় এগিয়ে গেছেন তিনি। বিশ্বাস করতেন যে অবারিত প্রান্তরের পারেই রয়েছে উদ্ভাসিক দিগন্ত। কাব্য রচনার একান্ত শ্রমনিষ্ঠ নিরন্তর এক পথযাত্রী তিনি। সর্বদাই নিজেকে অতিক্রম করে যাওয়ার প্রবল প্রচেষ্টা ছিল তার। কবিতার ছন্দ প্রয়োগে নিয়ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। বিষয়বস্তুতে এনেছেন বৈচিত্র্য। রচনাশৈলী ক্রমাগতভাবে হয়েছে অর্থপূর্ণ। নতুন চিন্তা-চেতনার ধারক। স্বগতোক্তি উচ্চারণের ভাষ্যে প্রকাশ করেছেন জীবনের গভীর সত্যকে। তাই তার কবিতা অকপট বিশ্বাসে সমুজ্জ্বল। অন্তর্নিহিত দ্যোতনায় ভাস্বর। স্বচ্ছ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করেছেন চলমান জীবন স্পন্দনকে। তার অনুভবশক্তি ছিল গভীর জীবনবোধ প্রসূত। অর্জন করেছেন অভিজ্ঞতা। আর সেই নিবিড় পর্যবেক্ষণ শক্তিকে কবিতার নির্যাসে প্রবহমান করেছেন। কবিতাকে অনায়াসে করে তুলেছেন উপলব্ধির বহিঃপ্রকাশের অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম। পাঠকদের সম্পৃক্ত করতে পেরেছেন নিজস্ব বিশ্বাস জগতের সাথে। সুদূরের লক্ষ্যপানে তার যাত্রা যেন ছিল এক সন্তপুরুষের মতো। বৈদিক নিষ্ঠায় কর্তব্যকর্ম সূচারুরূপে সম্পাদন করতে ব্রতী ছিলেন। বহমান সময়কে অন্তরঙ্গ উদ্ভাসনে জড়িয়ে ছিলেন। যেন বা সেটাই ছিল তার ওপরে অর্পিত দায়িত্ব। কবি শঙ্খ ঘোষ কখনো সেই দায়িত্ববোধ থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হননি। বিচ্ছিন্ন হননি। ক্রমশ গাঢ় হয়েছেন সেই অমোঘ শক্তিতে। সতেজ, সাবলীল হয়েছেন। সে কারণে একদা গভীর প্রত্যয়ের সাথে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘আমি শিকড় দিয়ে জড়িয়ে আছি।’ তার সর্বাঙ্গীণ পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে নিজস্ব অস্তিত্বের ভেতর দিয়ে। জটিল পথে যাত্রা ছিল তার। দীর্ঘ ষাট বছরের একাগ্রচিত্তের শ্রমে তৈরি করেছেন এক নিবিড় অনুভব সঞ্চারের পথ। তিনি ছিলেন শৈশবতাড়িত এক মানুষ। কবি শঙ্খ ঘোষের শৈশবকাল অতিবাহিত হয়েছে বাংলাদেশের ঈশ^রদীর ছোট নিরিবিলি রেলওয়ে ছিমছাম শহর পাকশিতে। পাকশির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাকে আকৃষ্ট করেছিল। পাকশির নিসর্গশোভিত প্রসন্নতা তাকে বিমুগ্ধ করেছিল। পাকশির প্রকৃতি তার দৃষ্টি উন্মোচনের ক্ষেত্রে সহায়ক ভ‚মিকা রেখেছিল। তিনি এই ঋণের কথা বহুভাবে স্মরণ করেছেন। কবি শঙ্খ ঘোষের সোনালি উদ্বেলিত শৈশবকাল কেটেছিল মামাবাড়ি পাকশির বানারীপাড়াতে। সেখানে ছিল বিশাল সুপারিবাগান। বাতাসের দোলায় আন্দোলিত দীঘল সুপারিগাছের বাতাস তাকে আলোড়িত করত। তিনি যেন সেই বাতাসের শব্দে দূর পৃথিবীর আহ্বান শুনতে পেতেন। সেই বাতাসের শব্দ তাকে মনে করিয়ে দিত, ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা।’ সেই আশ্চর্য, সুন্দর বিশাল সুপারিবাগানের ছায়াঘেরা মায়াবি পরিবেশে অতিবাহিত হয়েছে তার ছেলেবেলা। সেই সব স্মৃতি তিনি কখনো ভুলতে পারেননি। এ যেন তার কাছে ছিল জিয়নকাঠির মতো। তার আত্মজৈবনিক উপাখ্যান ‘সকালবেলার আলো’তে সেই স্মৃতিময় দিনগুলো উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। পাকশির সুপারিবাগানের সারিঘেরা মামাবাড়িটি কিশোর শঙ্খ ঘোষকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করেছিল। পরিণত বয়সে উপনীত হয়েও সেই পাকশির স্মৃতির কথা ভেবে আলোড়িত হতেন। কবি শঙ্খ ঘোষ তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন : ‘সাত থেকে পনেরো বছর বয়স পর্যন্ত পদ্মাপাড়ের- ছোট্ট ওই মফস্বলে সময় কেটেছে আমার। সেইখানেই আমার পড়াশোনা। পিছনে বন, সামনে নদী, ডাইনে-বাঁয়ে ক্ষেত ছড়ানো গ্রাম, এরই মধ্য দিয়ে বড় হবার একটা সুযোগ পেয়েছিলাম। আর ওই বয়সটা তো সবারই পক্ষে সবচেয়ে গ্রহণের, সবচেয়ে সঞ্চয়ের, সবচেয়ে সংলগ্নতার সময়। পাকশিকে তাই ভুলতে পারি না।’ ১৯৫০-৫১ সালে ছিলেন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র। তখন প্রকাশিত হয় ‘অবিশ্বাসের বাস্তব’ কাব্যগ্রন্থটি। সেই বইটি উৎসর্গ করা হয়েছিল জায়মান এক তরুণ সংগঠনের সম্ভাব্য তরুণ কর্মীদের প্রতি। যখন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছিল অবিশ্বাসের হাওয়া। তিনি তাকে সরিয়ে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন পারস্পরিক সম্পর্কের একটা ভ‚মি। তারা এ ধরনের কাজ করে চলছিলেন তাদের সমবেত প্রয়াসকে অবলম্বন করে। রচনা করলেন ‘বটপাকুড়ের ফেনা।’ তার কবিতায় সঞ্চারিত হয়েছে আশ্চর্য নিপুণতার সাথে অপরিসীম বেদনাবোধের কথা। কখনো তাতে কুশলতার সাথে বিস্তারিত হয়েছে নিবিড় বিষণœতা আর গাঢ়তম অন্ধকারের প্রচ্ছায়া। এ থেকে এমত ধারণা হতে পারে তিনি বুঝি অন্ধকারের পক্ষে। বিষাদ এবং বিমর্ষতার পক্ষে। কিন্তু তিনি আস্থাশীল ছিলেন বুদ্ধদেব বসুর কাব্যগ্রন্থের নামকরণের প্রতি। ‘যে আঁধার আলোর অধিক।’ কবি শঙ্খ ঘোষের নিকটে নিরাশা হচ্ছে একটি বক্তব্য। বিষাদ এবং বেদনাবোধের ভেতরে একসাথে অনেক কিছু জড়ানো থাকতে পারে। এই রহস্যময় সংলগ্নতাকে আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। অন্ধকার কবির নিকটে আবিভর্‚ত হয়েছে শক্তি হিসেবে। বিষ্ণু দে লিখেছেন ‘সেই অন্ধকার চাই’। কবি শঙ্খ ঘোষ অন্ধকারের অন্তর্নিহিত শক্তিকে আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি অন্ধকারকে নিরাশার প্রতীক হিসেবে বিশ্বাস করতেন না। বরং আশা-নিরাশায় জড়িয়ে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ধরনের একটি সত্তার অবস্থানকে তৈরি করেছিলেন। জীবনধারা সম্পর্কে কবি শঙ্খ ঘোষের বিশ্বাস হচ্ছে যে, এর একটি হচ্ছে মানুষের প্রাত্যহিক অস্তিত্ব আর অপরটি হচ্ছে তার অন্তর্গত সত্তা। কবিরা সেই সত্তার লালনকারী। তার বক্তব্য, ‘সময়টা একমাত্র আসতে পারে কবিরসত্তা হিসেবে। কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন- হাড়ের ভিতর বোধ করবার শক্তির কথা। এই বোধশক্তি কবি শঙ্খ ঘোষকে অনুপ্রাণিত করেছিল। এই বোধের জন্য শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন : লেখা শুরু করবার কিছু দিন পর থেকেই টের পেয়েছি, কোনো কোনো লেখায় শরীরের একেবারে ভিতর দিকে একটা স্রোত বইতে থাকে, আবার কোনো কোনো লেখায় হয় না সেটা। কেন হয় আর কেন হয় না, এইটে ভাবতে ভাবতেই অস্পষ্ট এক ভাবনায় আমি পৌঁছে ছিলাম।’ মানুষ সর্বদা একটা আশ্রয়ের কথা ভাবে। জন্মের পর থেকে যে কোনো মানুষের কাছে সেটাই হচ্ছে প্রধানতম সন্ধান। সেই সন্ধানের জন্যও সে হাহাকার করে। সেই হাহাকারটাই হচ্ছে সবচাইতে বিশাল হাহাকার। সকলে হয়তো সব সময় সে বিষয়ে সচেতন থাকে না। কবি শঙ্খ ঘোষ মানুষের এই হাহাকারকে অনুসন্ধান করে ফিরেছেন। জার্মান কবি ক্রাউস গ্রোথের কবিতা বিদায় অনুবাদ করেছিলেন শঙ্খ ঘোষ : ‘এতোই শ্রান্ত এমনই নম্র, ধীর, ছিল সে মেয়েটি ছেলেটির খুব প্রিয়, বুড়ো বাপ তার ঘোরে গমগম রাগে, বলে ও হলো কী? নিজেকে ভেবেছে কী ও? মেয়েটি তল্পি তুলে নিল বাহুমূলে, অশ্রুর ভারে ঝলমল দুটি চোখ; ধীর পায়ে এসে বুড়োটিকে বলে : ‘বিদায়! ছেলেটিরে তার বলে যায়- ভালো হোক।’ ফিরে চলে যায় প্রাঙ্গণকোণে, দূরে, পথের পাথরে বসে থাকে অবিরল, বুড়ো ঘুরে ঘুরে গমগম করে রাগে, ছেলেটি নিথর, চোখে নামে ধারাজল। কবি শঙ্খ ঘোষ অবহিত করেছেনÑ আমি যে আড়ালের কথা বলি, সেটা কিন্তু কোনো মিনারবাসির অন্তরাল নয়। ভিড়ের মধ্যে মিশে থাকতে তার থেকে শ্বাস নিতে আমি ভালোইবাসি। ভিড়ের মধ্যে থেকেও মনকে একা রাখা যায়, যদি সেটা কেউ চায়। কবি শঙ্খ ঘোষ এ কথা গভীরভাবে অনুধাবন করেছিলেন যে, আসলে কবিতা কিছুই জানায় না, সে হয়ে ওঠে। আর এই হয়ে ওঠাই ক্রমে অগ্রসর হয় পরমের প্রতি। সেই পরম হচ্ছে আনন্দময় আত্মা। ইন্দ্রিয়ের গান। কবির ব্যক্তিত্বের মধ্যে প্রকৃতি এসে প্রতিহত হয়। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাজাত প্রতীকের মধ্যে কবি তখন তার অহংবোধকে সংহত করে নেয়।

জার্মান কবি স্টেফান গেয়র্গের ‘প্রত্যাবর্তন’ কবিতাটি অনুবাদ করলেন শঙ্খ ঘোষ। ফিরে এলো আত্মজ আমার। চুলে তার কবেকার সমুদ্র-বাতাস আছে লেগে। বিভীষিকা ঢেকে রাখে যেন ভ্রমণের স্ফ‚র্তি আর চপল গতির ভঙ্গ তার। কপোলের বাদামি বিভায়, আজো যেন লেগে আছে লবণছটার কত দাহ, যেন কোনো তীব্র এক ফল, অচেনা সূর্যের তাপে বন্য ঘ্রাণে দ্রুত পরিণত। দৃষ্টি তার মন্থর, আতুর, কিসের গোপন ভারে আমি কোনো দিন জানব না। ইষৎ মেঘাচ্ছন্ন যেন ও ওর বসন্ত থেকে এলো আমার বৃষ্টি দিনে। দুই বাহু দিয়ে রাখি ঘিরে কিন্তু সে নিঃসাড়ে কবে চলে গেছে আরেক ভুবনে সরায়ে নিয়েছে তারে দূরেÑ আমারই সে বটে, তবু আমার অসীম ব্যবধানে \ কবি শঙ্খ ঘোষ কবিতার অনুবাদকে যথেষ্ট তাৎপর্যমণ্ডিত করে তোলার প্রয়াসী হলেন। যাতে বিশ^বিষয়ক ঐক্যে পৌঁছানো যায়। বিশ্বাস করতেন সপ্ত সিন্ধু দশ দিগন্তে বিকীর্ণ হয়ে পড়া চাই কবির অন্তর্দৃষ্টিকে। বিশ^বীক্ষণ অনুভ‚ত হওয়া চাই। এই বীক্ষণের প্রধানতম শক্তি হচ্ছে প্রেরণা থেকে প্রজ্ঞা। শঙ্খ ঘোষ ইংরেজ কবি স্যালোয়াজেসকে অনুবাদ করেছিলেন : ‘নদী আমাদেরই মধ্যে, সমুদ্র থেকে চারিভিতে সমুদ্র ভ‚মিরও প্রান্ত, স্পর্শ করে যায় গ্র্যানিটের স্তর আর তটভ‚মিবক্ষে দেয় ছুড়ে প্রাক্তন বিচিত্র যত সৃষ্টির ইঙ্গিত : হাঙ্গর, কাঁকড়ার খোল, প্রকাণ্ড তিমির শিরদাঁড়া, অথবা নিথর জলে সবার উৎসুক চোখে ধরা পড়ে সমুদ্রের জলজ উদ্ভিদ, প্রাণিকুল। ছুড়ে দেয় আমাদের হৃত রত্নগুলি রত্নাকর ছেড়া জাল, ভাঙা দাঁড়, বিধ্বস্ত বল্লম, আর ভিনদেশি মৃতদের জীর্ণ বাস। সমুদ্রের আছে বহু স্বর বহুল দেবতা, বহু স্বর। বুনো গোলাপের বুকে লবণশীকর, কুয়াশা-উথাল ঝাউশাখা। সমুদ্র গর্জন আর সমুদ্র শ্বসন, এসব বিচিত্র স্বর প্রায় একত্র পুঞ্জিত শোনা যায়।’ প্রজ্ঞার প্রতি থাকে কবিদের সমস্ত উন্মুখতা। কবিরা মুহূর্তে মুহূর্তে গড়ে তুলতে আগ্রহী সেই আত্ম-উপযোগ। যার মাধ্যমে পরমতমের ক্ষণসান্নিধ্য স্পর্শ করে যাবে তাকে। কবির ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠবে অভিজ্ঞতা, ধারণা আর অনুভ‚তির মিলিত সমবায়ে। কবিই পারেন মিলন ঘটাতে। অনেক ধৈর্য-তপস্যার দ্বারা ক্রমে এই ঐক্য স্পর্শ করবার সাধনা হয় কবির। এই ক্রমিক অবরোহণই হচ্ছে কবির ইতিহাস। স্পেনীয় কবি আন্তোনিও মাচাদোর কবিতা শঙ্খ ঘোষের অনুবাদে স্বচ্ছ দ্যোতনার সৃষ্টি করল : ‘ছোট সবুজ বাগান ঝলমলে গোল পার্ক, শেওলাসবুজ ঝর্ণাতলায় স্বপ্নে ভাসে জল, বোবাজলের ছলছলানির পিছলে পড়ে শিলায়। জীর্ণ-ঝরায় পাতার সবুজ তো প্রায় কালো, মাঘরজনীর বাতাস ঝরিয়ে দিল ফুল, উড়িয়ে নিল সঙ্গে কিছু শুকনো হলুদ ঝরাÑ ধুলোর সঙ্গে খেলবে, ধূসর এই ধরণীর ধুলো।’ কবি শঙ্খ ঘোষের উপলব্ধি হচ্ছে : ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির, ব্যক্তির সাথে সমাজের, ব্যক্তির সাথে বিশ^জগতের একটা পরবাস সম্পর্কে বাঁধা আছে মানুষ। আজীবন পরবাসী সেই মানুষ চিরকালই শুধু আশ্রয়প্রার্থী। কেউ তা জানে, কেউ-বা জানে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App