×

মুক্তচিন্তা

দুদক মর্যাদাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করুক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:০০ পিএম

দুদক দুর্নীতি দমন ও রোধে সক্ষম এবং কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে- এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা। কিন্তু নানা কর্মকাণ্ডে দুদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেখছি আমরা। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভুল তদন্তের মাধ্যমে নিরপরাধ লোককে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। সাম্প্রতিককালের এ রকম দুটি ঘটনা বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দুটি ঘটনাই দুদক বলছে, ‘সরল বিশ্বাসের’ ভুল। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে দুদকের তদন্ত ব্যবস্থা নিয়ে। এমতাবস্থায় ভোক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও সামনে আসছে। আমরা মনে করি, দুদকের তদন্তের ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে। জানা গেছে, দুদকের ভুল তদন্তের কারণে ১৫ বছরের সাজা হওয়ার পর শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতের আশ্রয় নিয়ে সেই সাজা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন নিরপরাধ মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। দুদকের তদন্তের ভুল প্রমাণ হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট ওই সাজা বাতিল করেছেন এবং তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। ভুল তদন্তের ব্যাপারে দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, তদন্তকারী কর্মকর্তা ‘সরল বিশ্বাসে’ ভুল করেছেন। মোহাম্মদ কামরুল ইসলামকে বিচার পেতে ১৮ বছর ধরে পুলিশ-তদন্ত এবং কোর্ট-কাচারিতে ঘুরতে হয়েছে। অবশেষে তিনি হাইকোর্টে এসে দুদকের তদন্তের ভুল প্রমাণ করে মামলার সাজা থেকে রেহাই পেলেন। এর আগেও দুদকের মামলায় বিনা দোষে নরসিংদীর একজন পাটকল শ্রমিক জাহালমের ৩ বছর জেলে থাকার ঘটনাও ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছিল। একটি ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় অভিযুক্তের নামের সঙ্গে না মিললেও জাহালমকে সাজা দেয়া হয়েছিল। সেই ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে খবর আসার প্রেক্ষাপটে হাইকোর্টের নির্দেশে ৩ বছর জেল খাটার পর জাহালম মুক্তি পান ২০১৯ সালে। এই দুটি ঘটনা দুদকের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা জানি, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে দুর্নীতি দমন ব্যুরোর পরিবর্তন করে দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করা হয়। আশা করা হয়েছিল, দুদক তার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে দুর্নীতি দমন ও হ্রাসে কার্যকর অবদান রাখতে পারবে। কিন্তু দেশের মানুষ সংস্থাটির আচরণ ও কার্যক্রমে চরমভাবে হতাশ হয়েছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। দুদক একটি স্বায়ত্তশাসিত ও আধা সাংবিধানিক মর্যাদাসম্পন্ন সংস্থা হলেও সেটি জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়। আমরা চাই, দুদক একটি মর্যাদাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করুক। দুদকে দক্ষ জনবল ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তার সংকট রয়েছে। যে কারণে দুদক নানা সময় নানাভাবে সমালোচিত হচ্ছে। কাক্সিক্ষত ভ‚মিকা নিশ্চিত করতে দুদককে শক্তিশালী করা এবং দুদকের অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়াও জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App