×

সম্পাদকীয়

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৯:৩৯ পিএম

মিয়ানমারে সামরিক অভিযান, জরুরি অবস্থা ও শীর্ষ নেতাদের আটকের ঘটনায় দেশের জনগণের মনে ভর করেছে সেই পুরনো আতঙ্ক। দিন কাটছে উৎকণ্ঠা আর সংশয় নিয়ে। সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর নড়েচড়ে বসেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ অং সান সু কির মুক্তি ও নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে চাপ দিচ্ছে। একই সঙ্গে রাখাইনে থাকা রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশে শরণার্থী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ভবিষ্যৎ নিয়ে জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে প্রত্যাবাসন আলোচনার অগ্রগতি অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আশা করছেন মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। আমরাও চাই কোনোভাবেই যেন রোহিঙ্গা ফেরতের বিষয় ঝুলে না যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। জানা যায়, গত নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে সু কির দল এনএলডি ফের বড় জয় পায়। পার্লামেন্টের ৪৭৬টি আসনের মধ্যে সেনা সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি পায় মাত্র ৩৩টি আসন। নির্বাচনের ফল ঘিরে সংকট ঘনীভ‚ত হয়। সেনাবাহিনী ও ইউনিয়ন সলিডারিটি এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি নির্বাচনের পর থেকেই ভোটে তথ্য ছাড়া কারচুপির অভিযোগ তুলে আসছে। এ নিয়ে সু কির সঙ্গে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের মতবিরোধ তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত বেসামরিক সরকার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার পর এই অভ্যুত্থান ঘটল। এতে করে অর্ধশতাব্দীর সেনাশাসনে ত্যক্ত-বিরক্ত মিয়ানমারবাসী গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের যে স্বপ্ন দেখেছিল তা বিনষ্ট হয়ে গেল। দীর্ঘ পাঁচ দশক সেনাশাসনে চলার পর ২০১১ সালে নামমাত্র গণতন্ত্র এসেছিল। বেসামরিক সরকার লেবাসের আড়ালে প্রকৃত ক্ষমতা ছিল সেনাবাহিনীরই হাতে। এ সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা রোহিঙ্গারা এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে ছয় লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারা আশঙ্কা করছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের ওপর আরো অত্যাচার-নির্যাতন চালাতে পারে। তাদের পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরাও বিলম্বিত হতে পারে। আমরা মনে করি, মিয়ানমারের ক্ষমতায় যারাই থাকুক না কেন, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের ক‚টনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যেতে হবে। ক্ষমতায় সু কি আছে নাকি মিলিটারি, সেটার চেয়ে জরুরি হলো কারা এই আলোচনা এগিয়ে নিতে চায়। আমাদের উচিত হবে ক‚টনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়া এবং সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App