×

জাতীয়

শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৪:৩২ পিএম

শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী
জাতীয় সংসদে স্কুল কলেজ খোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যদিও এখনও স্কুল কলেজ বন্ধ, তবে অন লাইনে স্কুল কলেজে লাইনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। অনেক স্কুল কলেজ অন লাইনে ক্লাস চালাচ্ছে। আর একটা ভাল কাজ হয়েছে সকলকে এসএসসি সমমান পাশ করানো হয়েছে। এটা একটা ভাল কাজ হয়েছে। রেজাল্ট পাওয়ার পরে তাদের মনটা কিছুটা ভাল হয়েছে। এদিকে করোনাও কমছে। আর একটু কমলে আমরা স্কুল কলেজ খুলে দেব। ততদিন অন লাইনে ক্লাস নেবার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এর পরে যখন ক্লাস খুলে যাবে তখন দেখা যাবে কে টিকে থাকবে কে টিকে থাকবে না। সে তখন দেখা যাবে। সোমবার একাদশ জাতীয় সংসদের একাদশতম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীসভাপতিত্ব করছিলেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রী সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে সংসদ অধিবেশন শেষ হয়। গত ১৮ জানুয়ারি বিকেলে অধিবেশনটি রাষ্ট্রপতির ভাষণের মাধ্যমে শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি সংসদে অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন সংগ্রামের স্মৃতি চারণ করে বলেন, মূলত ১৯৪৮ সাল থেকে যে ভাষা আন্দোলন তা থকে শুরু, যা শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে, মুলত এখান থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের চেতনার শুরু। ‘৪৮ সালের ১১ মার্চ আন্দোলন শুরু হয়, দেশের ভূখা মানুষের কথা বলতে গিয়ে তাকে বাবা বার কারা বরণ করতে হয়। ৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের শহীদ বরকত, রফিক, শফিক ও জাতীয় চার নেতার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর পরে বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন বিট্রিশ আমল বা পাকিস্তনি আমলা থেকে তৈরি করা সেই অপশাসন পদ্ধতি ভেঙে অবসান করতে ঘুনে ধরা সমাজ গড়ার পদক্ষেপ নেন। সম্পূর্ণ জনগণের উন্নয়নের পরিবর্তনের জন্য তিনি কাজ করতে চেয়েছেন যখন দেশের মানুষ সুফল পেতে চলেছেন তখন ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। এসময় তিনি আবেগ প্লুত কন্ঠে বলেন, তার মা ও ছোট্ট রাসেলের কি দোষ ছিল ? দেশের অনেক অর্জনের সাথে আমার মা সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু তিনি কখনো সামনে আসেন নি। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, আমাদের দেশের মানুষকে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যেও আমরা প্রি প্রাইমারী থেকে এসএসপি পর্যন্ত বই বিতরণ করেছি। শিক্ষা বৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। মাদ্রাসা শিক্ষাকে মুল ধারায় আনার চেষ্টা করে কর্মদক্ষ জন শক্তিতে রুপান্তরিত হতে পারে সে চেষ্টা করছি । আমরা ইতিমধে ২০০০ ডাক্তার ও ৬ হাজার নার্স ও টেনিশিয়ান নিয়োগ দিয়েছি। আরো কিছু বিশেষায়িত ডাক্তার নেব। টেকনিশিয়ান নেব, আমরা গবেষণার কাজ বাড়াবো। হিজরা, চা শ্রমিক, বেদে সম্প্রদায়, প্রতিবন্ধী, কুষ্টু রোগীসহ দুর্বল গোষ্টিকে জীবন মান উন্নত করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি। করোনার কারণে আমরা এক লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা প্রণোদোনা দিয়েছি। প্রত্যেককে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। আমরা এক হাজার কোটি টাকা ভ্যাকসিন কেনার জন্য বরাদ্দ রেখেছিলাম। ভ্যাকসিন এসে গেছে, এ নিয়েও অনেক কথা। ভারত আমাদের বিশ লাখ ডোজ উপহার দিয়েছে, আমরা তিন কোটি ডোজ কিনেছি, এর ৫০ লাখ ডোজ এসে গেছে।সেজন্য জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল আমাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। আমরা জরুরী সেবা সংশ্লিষ্টদের আগে কোভিট টিকা দেবার ব্যবস্থা করবো। বিএনপির মিথ্যে কথা বলা জম্মগত চরিত্র, পেটের মধ্যে থেকে তারা মিথ্যে বের করবেই।এটাই তাদের চরিত্র । বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে, শত্রু র মুখে ছাই দিয়ে হলেও এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে। উন্নয়ন করার ইচ্ছে থাকলে উন্নয়ন করা যায় তা আমরা দেখিয়ে দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫ এর পরে বর্বরতর পরিবেশ ছিল। একের পর এক আক্রমণ হয়েছে। এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়। শোনা গেছে একজন মিলিটারী ডিকটেটর, আবার সেনা প্রধান, তিনি নিজেকে বৈধ করার জন্য বহু অন্যায়, ভোটারহীন নির্বাচন করতে যেয়ে এদেশে বার বার ক্রু হরেছে। শোনা যায় তিনি নাকি বহুদলীয় গণতন্ত্র এনেছিলেন। জিয়া নিজেকে এদেশের ইতিহাসে ৭৫ পরবর্তী এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের শুরু হয়। গণতন্ত্র ভোটাধিকার বলে কিছু ছিল না। যেটা মিলিটারী শাসকরা ঠিক করে দিয়েছে তাই হয়েছে, নয়তো পরিবর্তন করা হয়েছে। বহু বার ক্রু হয়েছে। অনেক সেনা বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।বহু সেনা প্রধানকে পদত্যাগও করতে হয়েছে, সাজা প্রাপ্তও হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আন্দোলন করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি। ৯৬ সালে ২১ বছর পরে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠনের সুযোগ পাই তখন সরকার জনগনের সত্যিকারের সেবক হিসেবে কাজ করি। আমরা জাতীর পিতার আদর্শ নিয়ে দেশকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি। ২০০৮ এর পরে অমরা বার বার বিজয়ী হয়ে জনগণের উন্নয়নে কাজ করে গেছি এবং যাচ্ছি। মহামান্য রাষ্টপতি তার বছরের প্রথম ভাষনে তার কিছুটা উল্লেখ করেছেন। ১৪৭ পাতার একটি বইয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সকল বিভাগ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন সুচারুভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, আজকে বিরোধী দলের নেতার এখানে আসার কথা ছিল কিন্তু তার বাড়িতে কে যেন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সে কারণে তিনি আসতে পারেন নি। তাকেও ধন্যবাদ। এ অধিবেশনে ১৩২ জন এমপি ভাষণ দেন, মাত্র ১২ দিনের অধিবেশনে আমরা ৬টি বিল পাশ করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, গত বছর ৮ মার্চ আমরা মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠানে সভা করি, সেদিন তিনজন রোগী করোনা আক্রান্ত হলো।। আমরা সিদ্ধান্ত নিই ডিজিটালী যতটা পারি মুজিববর্ষ পালন করবো। আমরা মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা করে সব অনুষ্ঠান করে যাবো। এসময় তিনি জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির পদ্মা সেতু নিয়ে কি বা বলার আছে। যাদের নিজেরে গায়ে হাজার ফুটা তারা আবার উন্নয়ন নিয়ে এত কথা বলে কি করে। এ পদ্মা সেতু দিয়ে দু বঙ্গের সেতুবন্ধনের ফলে জিডিপির ২ শতাংশ বেড়ে যাবে। এক সময় রেল নিয়ে বাঁধাদেয়া হয়,আমি বলেছিলাম রেলকে প্রয়োরেটি দিতে হবে। এখন রেল হচ্ছে। একদিন রেলকে বিএনপি রেলকে গোল্ডেন হ্যা-েশ দিয়ে মারা চেষ্টা করেছিল। আমরা তার উন্নয়ন ঘটাচ্ছি। তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু হচ্ছে, আবার ভেঙে না যায়, আমি বলবো এখন তারা কিভাবে এতবড় পদ্মা পার হবে। তবে আমাদের নৌকা অনেক বড়, তবে বেছে বেছে নেব, কেউ যেন নৌকায় বসে আবার ফুটো করে না দেয়। পরে বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি মেরিন একাডেমির বিশেষ ভাষণটি সংসদে প্রদর্শিত হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App