×

অর্থনীতি

রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্প-কারখানার আধুনিকায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: শিল্পমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৫:৩৭ পিএম

রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্প-কারখানার আধুনিকায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: শিল্পমন্ত্রী

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)’র সভাপতি রিজওয়ান রাহমান-এর নেতৃত্বে ডিসিসিআই’র পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, এমপি-এর সাথে শিল্প মন্ত্রণালয়ে সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সাক্ষাৎ করেন। শিল্প সচিব কে এম আলী আজম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধিদলকে শিল্প মন্ত্রণালয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়াধীন রাষ্ট্রায়াত্ত বেশ কিছু শিল্প-কারখানা রয়েছে, যেগুলোকে বর্তমান সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তিনি এ ধরনের সরকারী শিল্প-কারখানার আধুনিকায়নে প্রযুক্তি ব্যবহার, উৎপাদিত পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং সর্বোপরি নতুন বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য বেসরকারীখাতের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান, যার মাধ্যমে দেশে আরো কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি তৈরি হবে এবং অথনৈতিক উন্নয়ন আরো গতিশীল হবে। মন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের স্থানীয় বাজার বেশ বড় এবং আমাদের নিজস্ব চাহিদা মেটানোর বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি আরোও বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার সরকার বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার ফলে জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করা গেছে এবং এক্ষেত্রে বেসরকারীখাত কে সহযোগিতা প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি সারাদেশে শিল্পায়নকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট ক্লাস্টার সমূহে সার্বিক সহায়তা প্রদানের উপর জোরারোপ করেন।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ৭৫ শতাংশ ব্যবসায়ী ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, তবে কটেজ, অতিক্ষুদ্র এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের তুলনায় মাঝারি উদ্যোক্তাদের আর্থিক ও কর্মক্ষম জনশক্তির সীমা অনেক বেশি থাকায়, প্রণোদনা প্যাকেজ ও নীতিগত সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কটেজ, অতিক্ষুদ্র এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাগণ মাঝারি উদ্যোক্তাদের তুলনায় পিছিয়ে থাকেন। এ অবস্থা উত্তরণে তিনি আসন্ন শিল্পনীতিতে সিএমএসএমইদের সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণ এবং একটি ‘এসএমই আইন’ প্রণয়ন করার প্রস্তাব করেন। এছাড়াও সিএমএসএমই খাতে সরকার ঘোষিত সকল ধরনের নীতিগত সহায়তা বাস্তবায়ন করতে, দেশের সকল সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের খাতভিত্তিক একটি ডাটাবেইজ তৈরি করার জন্য একটি বিশেষায়িত প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, দেশের রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং বাজার সম্প্রসারণে সম্ভাবনাময় খাত সমূহে তৈরি পোষাক শিল্পের ন্যায় ব্যাক টু ব্যাক এলসি ব্যবস্থা অনুমোদন করা প্রয়োজন, সেই সাথে চামড়াজাত পণ্যের জন্য কেন্দ্রীয় বন্ডেড ওয়্যারহাউস এবং জাহাজ নির্মাণ, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কর অবকাশ সুবিধা প্রদানের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের কৃষিনির্ভর অঞ্চল যেমন: যশোর, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেটে কৃষি-পক্রিয়াজাত শিল্পায়ন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিশেষায়িত কৃষি নির্ভর অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। ডিসিসিআই সভাপতি এলডিসি উত্তরণের পর ২০২৪ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে ইউরোপের দেশগুলোতে জিএসপি সুবিধা পেতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক প্রদত্ত শ্রম, মানবাধিকার, সুশাসন ও পরিবেশভিত্তিক ২৭টি কনভেনশন বাস্তবায়নে আসন্ন শিল্পনীতিতে একটি রোডম্যাপ আর্šÍভুক্ত করার আহ্বান জানান। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ভবিষ্যতে বৈশি^ক ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণে আইওটি, ব্লক চেইন, বিগ ডাটা, ক্লাউট কম্পিউটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক্স প্রভৃতি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তি বিষয়ে তরুণ প্রজন্মকে আরও দক্ষ করে তোলার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারিখাতের অংশগ্রহণ বাড়াতে আর্থিক ও নীতি সংক্রান্ত প্রণোদনা দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি ‘জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদ’-এর সদস্য হিসেবে দেশের বৃহৎ চেম্বার হিসেবে ডিসিসিআই’র সভাপতি কে অন্তর্ভূক্তকরনেরও প্রস্তাব করেন।

শিল্প সচিব কে এম আলী আজম বলেন, আসন্ন শিল্পনীতিতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতিগ্রহণ এবং ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়টিকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। তিনি উল্লেখ করেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি বিষয়ে মানব সম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে পাশাপাশি সরকার ঘোষিত ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রস্তাবিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশের বেসরকারীখাতের অবদান নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ হতে সবধরনের নীতি সহায়তা প্রদান করা হবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং এ লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারীখাতের অবদান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মত প্রকাশ করেন।

ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএস, এফসিএ, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন, পরিচালক আরমান হক, আশরাফ আহমেদ, আলহাজ¦ দ্বীন মোহাম্মদ, এনামুল হক পাটোয়ারী, গোলাম জিলানী, হোসেন এ সিকদার, খাইরুল মজিদ মাহমুদ, এম এ রশিদ শাহ স¤্রাট, মোঃ রাশেদুল করিম মুন্না, মোঃ সাহিদ হোসেন, মোঃ জিয়া উদ্দিন, নাসিরউদ্দিন এ ফেরদৌস এবং ইঞ্জিনিয়ার শামসুজ্জোহা চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App