×

পুরনো খবর

পরীক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিক হলে কেমন হয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:৩১ পিএম

করোনা মহামারিতে পুরো বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত তখন আমরাও এর বাইরে থাকতে পারিনি। করোনাকালে এবং করোনা-পরবর্তীতে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ে পড়ে পড়ালেখা। এর ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে দীর্ঘদিন সময় লাগলেও আমাদের একাগ্রতা এবং নিরলস চেষ্টার ফলে আমরা তা কাটিয়ে উঠতে পারব বলে বিশ^াস রাখি। তবে এর জন্য যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত ও পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। পড়ালেখা তথা পরীক্ষা ছাত্রদের জন্য তথা গোটা জাতির জন্য একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরীক্ষা মূলত ছাত্রদের দীর্ঘদিনের চেষ্টা, পরিশ্রম, জ্ঞান-বিজ্ঞানে বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় বিচরণের একটি মূল্যায়ন মাত্র। গত প্রায় এক বছর আমাদের শিক্ষার্থীরা এক অর্থে পাঠ্যবই থেকে প্রায় বিচ্ছিন্নই ছিল। ফলে এই অবস্থায় পরীক্ষা নেয়া হিতে বিপরীত হতে পারে। ইতোমধ্যে আমরা পত্রিকার মাধ্যমে দেখেছি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-অভিভাবকরা মিলে অটোপাসের দাবি তুলছেন। বর্তমান সময়ের জন্য আসন্ন এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার জন্য অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিক পরীক্ষা পদ্ধতি একটি কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে। অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিক পরীক্ষা নেয়া হলে আমাদের পরীক্ষার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য দুটিই সফল হবে। ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকের পরীক্ষাকেন্দ্রিক যে মানসিক চাপ তা অনেকটাই কমে যাবে। পরীক্ষা হবে অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিক কিন্তু তা হতে হবে পাবলিক পরীক্ষার আদলে। অর্থাৎ খাতা মূল্যায়ন হবে বোর্ড পরীক্ষার মতো করে এবং সারাদেশে অভিন্ন প্রশ্নের আলোকে। এতে করে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে এবং করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও থাকবে না। পরীক্ষার জন্য আলাদা করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশি নিরাপত্তার প্রয়োজন হবে না এবং এতে অর্থনৈতিক ব্যয় ও প্রশাসনিক জটিলতাও হ্রাস পাবে। আর প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না। অ্যাসাইমেন্টের কভার পেজ এবং প্রশ্ন প্রতিটি বিদ্যালয়ের ই-মেইলে পিডিএফ আকারে বোর্ড থেকে প্রেরণ করবে এবং প্রতিটি বিদ্যালয় এগুলো নিজ দায়িত্বে প্রিন্ট করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করবে এবং রুটিন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে সংগ্রহ করে তা বোর্ডে প্রেরণ করবে মূল্যায়নের জন্য। তবে এ কথাও বলে রাখি প্রতিটি অ্যাসাইনমেন্টের জন্য ২ দিনের বেশি সময় দেয়া যাবে না। ছাত্রদের ফরম ফিলাপ করে নিতে হবে। এরই মধ্যে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে দেয়া হয়েছে। যা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। সময়ের সঠিক চাহিদা পূরণ করা অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। এই সিলেবাসের আলোকে যদি আসন্ন এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া যায় তবে এর ফলাফল সুদূরপ্রসারী হবে বলে আমার মতো সাধারণ মানুষ বিশ^াস করি। বিশিষ্টজন এবং শিক্ষাবিদরা এই বিষয়ে একটু ভাববেন এবং সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমরা অভিভাবকরা আশা করি। বর্তমানে কোভিড ১৯-এর কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠ মূল্যায়নসহ পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য অ্যাসাইনমেন্ট করে সেটা সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকের কাছে জমা দেবে। তবে কোভিড ১৯-এর পরিস্থিতি আমাদের দেশে অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং ইতোমধ্যে ২০২১ সালের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করেছে। এখন সেই সিলেবাসের আলোকে যদি ২০২১ সালের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিক নেয়া যায় বা নেয়া হয় এবং এর মূল্যায়ন প্রতিটি শিক্ষা বোর্ডকেন্দ্রিক করে ফলাফল প্রকাশ করা যায় তবে সেটা হবে এই সময়ের সঠিক সিদ্ধান্ত এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি যথাযথ বিবেচনা। শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের কাছে জমা দেবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে এগুলো শিক্ষা বোর্ডে প্রেরণ করবে, শিক্ষা বোর্ড বিগত বছরের অনুরূপ খাতা মূল্যায়ন করে নির্ধারিত সময়ে ফলাফল প্রকাশ করবে। বহুনির্বচনী প্রশ্নের ক্ষেত্রে পূর্বের বছরের পরীক্ষার ন্যায় প্রশ্ন অ্যাসাইনমেন্টের সঙ্গে দিয়ে দেবে এবং শিক্ষার্থীরা বহুনির্বচনীর উত্তরসহ অ্যাসাইনমেন্টের সঙ্গে জমা দেবে। অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কোন বিষয় সম্পর্কে তার নিজস্ব মতামত মূল্যায়ন করে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেন এবং এতে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে অনুপ্রাণিত হয় এবং তারা আত্মবিশ^াস অর্জনে সক্ষম হয়। ২০২১ সালের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা অ্যাসাইমেন্ট ভিত্তিক হলে কেমন হয় কর্তৃপক্ষ ও বিজ্ঞজনরা একটু আন্তরিকতার সঙ্গে ভাববেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। শিক্ষক, হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয়, চাঁদপুর। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App