×

সারাদেশ

নির্মাণাধীন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ধস!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২১, ১২:৩২ পিএম

নির্মাণাধীন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ধস!

বাঁধ

বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্য সোনাখালী গ্রামে নির্মাণাধীন একটি বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ শেষ করার আগেই দেবে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার সিডিউল মোতাবেক কাজ না করায় বাঁধটি দেবে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্য সোনাখালী গ্রামের উপর দিয়ে তাফালবাড়িয়া নদী বয়ে গেছে। গত বর্ষা মৌসুমে নদীর প্রবলস্রোতে ওই গ্রামের মেম্বরের বাজার সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১৩০ মিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ওই ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়। ফলে ওই গ্রামের জমির ফসল ও চাষাবাদ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ে প্রায় ৮-১০ হাজার মানুষ। ওই ৫টি গ্রামের মানুষদের ভোগান্তি লাগবে ও নদীর ভাঙনরোধে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ইমারজেন্সি প্রকল্পের অধীনে ওই বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের নভেম্বর মাসে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড। আজাদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই কাজের কার্যাদেশ পায়।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নির্মাণাধীন বাঁধের কাজের শুরুতেই ঠিকাদার অনিয়ম করে সিডিউল মোতাবেক কাজ না করায় নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই বাঁধের একটি অংশ ধসে পড়েছে। সিডিউলে উল্লেখ আছে মাটি ও জিও ব্যাগ দ্বারা টেকসই বাঁধ নির্মাণের। কিন্তু যে পরিমাণ জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ দেয়ার কথা বাস্তবে তা করা হয়নি। বাঁধ রক্ষায় বাঁশের পাইলিংও ছিল নড়বড়ে। যে কারণে বাঁধ নির্মাণের ৮ দিনের মাথায় নদীতে প্রবলস্রোতে বাঁশের পাইলিং ভেঙে জিও ব্যাগ দেবে হুমকির মুখে পড়েছে ওই বাঁধ। আসছে বর্ষা মৌসুমে নদীর প্রবলস্রোতে এ নির্মাণাধীন বাঁধ টিকবে কিনা তা নিয়ে স্থানীয়রা সন্দেহ প্রকাশ করেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন বাঁধের পাইলিং ভেঙে জিও ব্যাগ নদীতে দেবে গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা দেবে যাওয়া স্থানে নতুন জিও ব্যাগ ফেলে তা মেরামত করছেন।

ঠিকাদার স্বপন মৃধার তত্ত্বাবধায়ক মো. সেলিম মিয়া বলেন, ঠিকাদার আমাকে যেভাবে কাজ করতে বলেছে আমি সেভাবেই কাজ করছি। দেবে যাওয়া অংশে নতুন জিও ব্যাগ ফেলে ঠিক করে দিচ্ছি।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) আজিজুর রহমান সুজন মুঠোফোনে বলেন, নির্মাণাধীন বাঁধে দেবে যাওয়া স্থানে নতুন করে জিও ব্যাগ ফেলে ঠিকাদার বাঁধ ঠিক করে দিচ্ছেন। এ বিষয়ে ঠিকাদার স্বপন মৃধা বলেন, সিডিউলে উল্লিখিত প্রয়োজনীয় জিও ব্যাগ তৈরি করেই বাঁধ নির্মাণ করেছি। এখানে কোনো রকমের অনিয়ম করা হয়নি।

আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হারুন-অর রশিদ বলেন, বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ভেঙে আমার ইউনিয়নের ৫ গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। পানি উন্নয়ন বোর্ড দুর্ভোগ লাঘবে ওই বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। স্থানীয় ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নির্মাণাধীন বাঁধ দেবে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে নির্মাণকাজ দেখতে যাই। ওই বাঁধ আসছে বর্ষা মৌসুমে টিকবে কিনা তার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পাউবো কর্তৃপক্ষকে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলৗ মো. কায়সার আলম মুঠোফোনে বলেন, বাঁধ দেবে যাওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। দেবে যাওয়া বাঁধ মেরামত করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নি¤œমানের কাজের বিষয় খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App