×

জাতীয়

দুদকের ভুলের সাজা থেকে মুক্তি পেলেন কামরুল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ০৩:৪৮ পিএম

দুদকের ভুলের সাজা থেকে মুক্তি পেলেন কামরুল

মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম

দুদকের ভুলে কারাবরণ করা জাহালমের কথা দেশ ভুলেনি এখনও। ঠিক এর মধ্যেই দুদকের আরেকটি ভুলে ১৫ বছরের কারাদণ্ড হয় নিরপরাধ মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের। অবশেষে নিরপরাধ কামরুল ইসলামকে সাজার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কামরুলের করা রিটে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) এই রায় দেন।

১৮ বছর আগের নম্বর জালিয়াতির এক মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভুল তদন্তে পনের বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল কামরুল ইসলামের। আদালতের স্মরণাপন্ন হয়ে অবশেষে স্বস্তি পেলেন কামরুল।

দুদক ১০ বছর ধরে তদন্ত করে যে কামরুলের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেই কামরুলের সঙ্গে অপরাধের কোনো সংশ্নিষ্টতা নেই। আদালত সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিচার করে ১৫ বছর সাজা ঘোষণার পর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ভুল আসামির বিরুদ্ধে। দিশাহারা নিরপরাধ এই ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন।

রায়ে মোহাম্মদ কামরুলের ক্ষেত্রে সাজা পরোয়ানা (কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড) প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এই ভুলের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কামরুল যদি মনে করেন, ক্ষতিপূরণের জন্য আবেনদনও করতে পারবেন।

কামরুলের আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী বলেন, মোহাম্মদ কামরুলকে জড়িয়ে দেওয়া সাজার রায় বাতিল করা হয়েছে। ফলে, মোহাম্মদ কামরুল এই মামলার দায় থেকে অব্যাহতি পেলেন।

অবশ্য সোমবার হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক জানিয়েছে, তাদের 'সরল বিশ্বাসে' চলা তদন্তে ভুল হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে সংস্থাটি দাবি করেছে, গ্রামের নামে সামঞ্জস্যেরকারণে আসল অপরাধীর বদলে ভুল ব্যক্তির নামে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। নিরপরাধ এই ব্যক্তি নোয়াখালীর কামরুল ইসলাম।

দুদকের একই ধরনের 'সরল বিশ্বাসে'র তদন্তের জেরে এর আগে এক হাজার ৯২ দিন জেল খেটে মুক্তি পান নিরপরাধ পাটকল শ্রমিক জাহালম। ২০১৯ সালে জাহালমের সাজা খাটার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশেই তখন মুক্তি পান জাহালম। দায়িত্বহীনতার জন্য দুদককেও তখন তিরস্কার করা হয়।

কী ভুল করেছিল দুদক? এসএসসির ভুয়া নম্বর ও প্রশংসাপত্র তৈরি করে মাইজদী পাবলিক কলেজে একাদশ শ্রেণিতে (১৯৯৮-৯৯ শিক্ষাবর্ষ) ভর্তির অভিযোগে কামরুল ইসলামের (ঠিকানা: পূর্ব রাজারামপুর) নামে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে সুধারাম থানায় মামলা করে। জব্দ করা ভর্তির আবেদনপত্রে কামরুলের জন্মতারিখ ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি ও গ্রাম পশ্চিম রাজারামপুর উল্লেখ রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রায় ১০ বছর পর দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর ওই মামলায় অভিযোগপত্র দেন, যেখানে কামরুল ইসলামের গ্রামের ঠিকানা পূর্ব রাজারামপুর উল্লেখ করা হয়। শুধুমাত্র পশ্চিমের স্থলে পূর্ব হওয়ায় সাজা হয় কামরুলের বিরুদ্ধে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App