×

জাতীয়

অন্যের গবেষণা কপি করায় সামিয়াসহ ঢাবির ৩ শিক্ষকের ডিমোশন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১০:১৫ পিএম

অন্যের গবেষণা কপি করায় সামিয়াসহ ঢাবির ৩ শিক্ষকের ডিমোশন

সামিয়া রহমান ও সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলোচিত সামিয়া রহমান এবং অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের পদাবনতি (ডিমোশন) করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা একাডেমিক গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি (অন্যের গবেষণা নিজের বলে চালিয়ে দেওয়া) করেছেন।

এছাড়াও পিএইচডি গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ ওমর ফারুককেও একই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের নিয়মিত বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। সিন্ডিকেটের দুজন সদস্য প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওই দুজন সিন্ডিকেট সদস্য গণমাধ্যমকে বলেন, গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদাবনতি দিয়েছে সিন্ডিকেট। আগামী দুই বছরের মধ্যে তিনি পদোন্নতির জন্য আবেদন করতে পারবেন না। প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান এখন শিক্ষা ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে আছেন। ছুটি শেষে ফেরার পর তিনি পদোন্নতি পেয়ে যেতেন। কিন্তু সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিভাগে যোগ দেওয়ার পর তাঁকে আরও দুই বছর প্রভাষক পদে চাকরি করতে হবে। নিজের পিএইচডি গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ ওমর ফারুককে পদাবনতি দিয়ে প্রভাষক করা হয়েছে। তাঁর নকল পিএইচডির অনুমোদনও বাতিল করে দিয়েছে সিন্ডিকেট।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া ও মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘আ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: আ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শীর্ষক আট পৃষ্ঠার একটি নিবন্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের নিজস্ব জার্নাল সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউয়ে প্রকাশিত হয়। তখন অভিযোগ ওঠে, ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ১৯৮২ সালে প্রকাশিত ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ শীর্ষক নিবন্ধ থেকে পাঁচ পৃষ্ঠার মতো হুবহু নকল করেছেন তাঁরা৷ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানায় ওই গ্রন্থের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস৷ নিবন্ধটিতে ফুকো ছাড়াও ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন চিন্তক এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ গ্রন্থের পাতার পর পাতা হুবহু কপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

অভিযোগটি তদন্তে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদকে প্রধান করে একটি কমিটি করে সিন্ডিকেট৷ দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৯ সালে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়৷ প্রতিবেদনে বলা হয়, সামিয়া-মারজানের চৌর্যবৃত্তির অভিযোগটির সত্যতা মিলেছে। তবে কমিটি কোনো শাস্তির সুপারিশ করেনি। সামিয়া-মারজানের শাস্তি নির্ধারণের জন্য গত বছরের অক্টোবরের সিন্ডিকেট সভায় আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ট্রাইব্যুনাল ইনক্রিমেন্ট কাটার মতো ‘লঘু শাস্তির’ সুপারিশ করলেও সিন্ডিকেট তা নাকচ করে দিয়েছে। সূত্র: প্রথম আলো

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App