বিষাদে ঢাকা বিশের বিদায়ের পর শুরু হয়েছে স্বপ্নের একুশ। সবাই বিষাদে ঢাকা বিশকে বিদায় দিয়ে আনন্দে নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে। সবার মিনতি করোনা নামক মৃত্যুদূত থেকে যেন মুক্ত থাকে একুশ। প্রথম দেশের অর্থায়নে সর্ববৃহৎ সেতুর অবকাঠামো স্থাপনের আনন্দ নিয়ে শুরু করা হয়েছে নতুন বছর। দেশের এই উন্নয়ন হয়েও রোধ করা যাচ্ছে না সড়ক দুর্ঘটনা।

২০২০ সালের মার্চ থেকে দেশে চলছে লকডাউন। এই লকডাউন চলার পরও সড়ক দুর্ঘটনা থেমে থাকেনি। গত বছর সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪০৯২টি, প্রাণ গেছে ৪ হাজার ৯৬৯ জনের এবং আহত হয়েছে ৫ হাজার ৮৫ জন। এই পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)।

স্বপ্নের একুশ সালের প্রথম মাস চলছে। এই প্রথম মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে অপরিকল্পিত। লক্ষ করা যায়, গত ২৩ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জে দুজনের মৃত্যু। ওই দিন সকালে খাগড়াছড়িতে একজনের মৃত্যু। ২২ জানুয়ারি বান্দরবান জেলা শহরের বাসস্ট্যান্ডে ৬ পর্যটক আহত এবং রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় এক দম্পতির মৃত্যু। একই দিনে খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু ও মাদারীপুরে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ গেছে দুজনের। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, ‘দুদিনে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের এবং আহত হয়েছে ৬ জন। অপ্রকাশিত রয়েছে অসংখ্য। দুদিনে যদি হয়ে থাকে এই হাল, তাহলে আগামী এগারো মাসে এই সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা অভাবনীয়।’ দেশে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালে বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় নেয়া হয়েছে। এই একুশ মানুষের কাছে স্বপ্নের একুশ। কিন্তু এই স্বপ্নের মাঝে ভবিষ্যৎ স্বপ্নগুলো ঝরে যাচ্ছে। বিলীন হয়ে যাচ্ছে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাগুলো। সরকার তার পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছতে এবং দেশের মানুষকে নিরাপদ রাখতে সড়কের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সঠিক ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।

সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো ফিটনেসবিহীন গাড়ি। বর্তমানে রাস্তায় বের হলেই তা চোখে পড়ে। ফিটনেসবিহীন হয়েও তারা চালাচ্ছে বেপরোয়াভাবে এবং লাইসেন্সও নেই। যার ফলে প্রতিদিন ঘটে যাচ্ছে বড় বড় সড়ক দুর্ঘটনা এবং অকালে প্রাণ যাচ্ছে ভবিষ্যৎ স্বপ্নগুলোর।

সুতরাং বর্তমান সরকারের উচিত বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশের সঠিক লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য সড়ক পথ নিরাপদ করা। দুর্ঘটনার কারণগুলো চিহ্নিত করে সেই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা এবং সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দেয়া। তাহলেই একুশে স্বপ্নগুলো অকালে ঝরে যাবে না। আগাম ভবিষ্যতে তারাও ডিজিটাল বাংলাদেশ ধরে রাখার হাল ধরতে পারবে।