চুরির জন্য বেছে নেয় ভোরের সময়টিকে
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:৪৬ পিএম
রুনা ওরফে রেজিনা
ম্যাস ও খালি রেখে সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া বাসাই মূলত টার্গেট করে সে। আর চুরির জন্য বেছে নেয় ভোরের সময়টিকে। ঝামেলা কম হওয়ায় চুরি ক্ষেত্রে মোবাইল ও ল্যাপটই প্রাধন্য পায় বেশী। নবজাতক কণ্যা শিশুকে ১১ বছর বয়সী মেয়ের কাছে রেখেও চুরির কাজে গেছে সে। চুরিকৃত মোবাইল ও ল্যাপটপ বিক্রিুর জন্য তার মনোনীত লোক রয়েছে। সাধারণত গুলিস্তান পাতাল ও স্টেডিয়াম মার্কেটেই এগুলো বিক্রি করে থাকে তারা। তাই পুরাতন মোবাইল ও ল্যাপটপ কেনার আগে ক্রেতাদের অবশ্যই যাচাই করে নিতে হবে। আর মার্কেটের ব্যবসায়ী যারা এসব কিনছেন তাদের বিষয়েও নজরদারী শুরু করেছি আমরা।
তিন সহযোগীসহ রুনা ওরফে রেজিনা (৩২) নামে এক নারী চোরকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল বুধবার এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) মতিঝিল বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ টিমের সহকারী কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ আল মামুন। বাকি ৩ জন হলেন- মনোয়ার, মো. রুবেল মিয়া ওরফে হাসান ও আলামীন। অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া এসি মামুন ভোরের কাগজকে বলেন, ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আসাদুজ্জামানের সার্বিক নির্দেশনায় গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আরো বলেন, রুনা ওরফে রোজিনা ছোট বেলাতে হারিয়ে গেলে নরসিংদির এক দম্পতি তাকে লালন-পালন করে। মা-বাবাহীন রোজিনাকে ওই দম্পতি সুমন নামে এক ব্যক্তির কাছে বিয়ে দেন। এরপর দেখা যায় স্বামী একজন চোর ও মাদকাশক্ত।
এছাড়াও একাধিক বিয়ে রয়েছে তার। আর বিয়ের পর থেকেই টাকার জন্য মারধর করা হত তাকে। তবে স্বামী ছাড়া আর কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় চুরির কাজে সেও জড়িয়ে পরে। ১১ বছর ও ৩৩ দিন বয়সী দুই মেয়েও রয়েছে রোজীনার। গত ২০ জানুয়ারী এক চুরি করে সে। এ ঘটনায় হওয়া একটি জিডির তদন্ত করতে গিয়েই তার নাম আসে। এসি মামুন আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা গেছে, রোজীনা চুরির জন্য ম্যাস ও খালি রেখে সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া বাসাই মূলত টার্গেট করতেন। কারন ৬-৮টার মধ্যে বাসাগুলোতে সকালেই কাজের বুয়াদের প্রবেশের জন্য দরজায় তেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে না। আর নারী প্রবেশ করলে সে সময় তেমন কেউ সন্দেহ করে না। এছাড়াও দরজা খোলাতেও দক্ষতা রয়েছে রোজীনার। সহজেই বহন করে আনা যায় তাই ল্যাপটপ ও মোবাইলই টার্গেট তার।
চুরিতে সফল হলে মনোয়ার, মো. রুবেল মিয়া ওরফে হাসান ও আলামী কে বিক্রির জন্য দিত রোজীনা। তারা এসব বিক্রি করতেন গুলিস্তান পাতাল ও স্টেডিয়াম মার্কেটে। রোজিনার স্বামীও চুরি করা পণ্য বিক্রি করাতেন রাসেল নামে আরো একজনকে দিয়ে। তবে স্বামী সুমন এখন রাজধানীর একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন থাকায় তাকে গ্রেপ্তার না করা হলেও আমাদের নজরদারীতে রয়েছেন। এছাড়াও গুলিস্তান পাতাল ও স্টেডিয়াম মার্কেটে কারা এসব কিনছেন তাদের শনাক্তে তদন্ত চলছে আমাদের। প্রসঙ্গত রাজধানীতে ডিএমপি গোয়েন্দা শাখার একাধিক টিম ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরি প্রতিরোধে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে।