×

মুক্তচিন্তা

কারা পাবে ভ্যাকসিন?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:০২ পিএম

করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করতেই বিশ্ববাসী দীর্ঘ সময় ধরে পরিত্রাণের উপায় হিসেবে ভাবছিল করোনা প্রতিরোধ সক্ষম ভ্যাকসিন তৈরির কথা। কিন্তু জীবন বাঁচানো এই প্রয়োজনের ভ্যাকসিন মিলবে কোথায়? অনেক প্রচেষ্টার পর বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে সমর্থ হয়েছে। মাত্র ১২টি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতকৃত ভ্যাকসিন সফলতা অর্জন করে তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে। ইতোমধ্যে রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডায় পুরোদমে চলছে করোনার ভ্যাকসিন প্রদানের কাজ। করোনা ভ্যাকসিনের জন্য মুখিয়ে আছে বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণও। অন্যান্য দেশের মতো প্রথম থেকেই করোনা ভ্যাকসিন দেশে আনার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ সরকার। অনেকের মনে প্রশ্ন ছিল, ‘বাংলাদেশ কি শিগগিরই করোনা ভ্যাকসিন পাবে, নাকি অপেক্ষা করতে হবে বহু দিন?’ অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এই মাসের শেষ দিকে দেশে এসেছে সেরাম ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রস্তুতকৃত করোনা ভ্যাকসিন। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী ২০ লাখ ডোজ টিকা বিনামূল্যে বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছে ভারত। করোনা ভ্যাকসিনের দর-দাম নিয়ে প্রশ্ন ছিল অনেকেরই। সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বেক্সিমকোর চুক্তি অনুযায়ী টিকার প্রতি ডোজের দাম পড়বে ৪ ডলার বা ৩৫০ টাকা। তবে পরিবহন ব্যয়সহ ডোজপ্রতি খরচ পড়বে প্রায় ৫ ডলার বা ৪২৫ টাকা। ভ্যাকসিনের আনুষঙ্গিক উপকরণের জন্য ব্যয় ১ দশমিক ২৫ ডলার ধার্য করা হয়েছে। এতে প্রতি ডোজ ভ্যাকসিন বাবদ মোট খরচ দাঁড়াবে ৬.২৫ ডলার। প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশের নেয়া ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের মোট মূল্য দাঁড়াবে ১ হাজার ৫৮৯ কোটি ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। সেটি পৌঁছে দেয়া ও সংরক্ষণে ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ হতে পারে। তবে বেসরকারি খাতের জন্য আনা ভ্যাকসিনের দাম পড়বে ডোজপ্রতি ৮ ডলার করে। পরে পরিবহন খরচ, ভ্যাট, সরকারি নীতি অনুযায়ী অন্যান্য খরচ মিলিয়ে দাম নির্ধারিত করা হবে। তাই বেসরকারিভাবে টিকা কিনতে হলে গুনতে হবে আরো বেশি টাকা। অগ্রাধিকার দেয়া তালিকায় মধ্যে আছেন মুক্তিযোদ্ধা, করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষা কর্মী এবং গণপরিবহন কর্মী। তবে অগ্রাধিকারের জন্য অন্যান্য দেশকে অনুসরণের কথাও বলছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তবে এক্ষেত্রে ফিল্ড ওয়ার্কে থাকা লোকদের অগ্রাধিকার দিতে বলেছে দেশের সচেতন মহল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মা, শিশু ও কিশোর স্বাস্থ্য কর্মসূচির আওতায় পরিচালনা করা হবে ভ্যাকসিনবিষয়ক কর্মসূচি। তাদের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির কর্মীরা এই কার্যক্রমে অংশ নেবেন। করোনা ভ্যাকসিন দেশে আনার পরে যথাযথ সংরক্ষণ, পরিবহন ও বণ্টন করতে পারলে বাংলাদেশও করোনা মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করবে বলে আশা করা যায়। সিরামের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সব ভ্যাকসিন দেশে এনে সঠিক বণ্টন নিশ্চিত করতে পারলে অচিরেই দূর হবে করোনার আতঙ্ক, খুলে যাবে বন্ধ হওয়া হাজারও প্রতিষ্ঠান, আরো প্রসারিত হবে অর্থনীতির দরজা। আশা করি ভ্যাকসিন সংগ্রহ এবং প্রদানে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তার সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফল হবে বাংলাদেশ। শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App