×

সারাদেশ

ওবায়দুল কাদেরের পরিবারকে রাজাকার বললেন সাংসদ একরাম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:৩১ পিএম

ওবায়দুল কাদেরের পরিবারকে রাজাকার বললেন সাংসদ একরাম

সাংসদএকরামুল করিম চৌধুরীকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার দাবিতে বক্তব্য দেন বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।

নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) বিকালে কোম্পানিগঞ্জে কাদের মির্জার নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়। মিছিল করে একরামুল করিম চৌধুরীর কুশপুতুল পোড়ান কাদের মির্জার অনুসারীরা।

বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে এসে একরামুল করিম চৌধুরী অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রাজাকার পরিবারের সন্তান। সেই লাইভ তিনি ডিলিট করে দিয়েছেন। তবে সেটি তার আগেই ডাউনলোড হয়ে ভাইরাল হয়ে গেছে।

এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ শেষে বসুরহাট বাজারের রূপালী চত্বরে অবস্থানে বসেন মেয়র কাদের মির্জা। তিনি বলেন, একরামুলকে জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকে অপসারণ না করা পর্যন্ত তিনি অবস্থান চালিয়ে যাবেন।

কাদের মির্জা বলেন, ‘একরাম চৌধুরী মদ্যপান করে আমাদের পরিবার সম্পর্কে মনগড়া বক্তব্য দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদেরের পরিবার সম্পর্কে তার এমন বক্তব্যের জন্য তাকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার না করলে এখানে অবস্থান ধর্মঘট চলবে।’

একরামুলের তোলা অভিযোগের বিষয়ে কাদের মির্জা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মুজিব বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হন। ছাত্রলীগকে সংগঠিত করতে গিয়ে বহুবার গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের শিকার হন। এরপর কারাগারে বসেই তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। আমাদের পরিবারের কেউ রাজাকার ছিলেন না। আমার বাবা শিক্ষকতা করতেন।’

চাচা এরফান মিয়ার স্বাধীনতার বিরোধিতার বিষয়ে কাদের মির্জা বলেন, আমার চাচা রাজাকার ছিল, তার সঙ্গে আমাদের পরিবারের বিরোধ ছিল। যুদ্ধের সময় আমার চাচা আমার ভাইকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমার ভাই চাচা এরফানের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতেন। তাহলে আমাদের পরিবার কীভাবে রাজাকারের পরিবার হয়?

১৬ জানুয়ারি বসুরহাট পৌর নির্বাচনের আগে থেকে কাদের মির্জার নানা বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটের সময় একরামুল করিম চৌধুরী ফেইসবুক লাইভে আসেন।

২৭ সেকেন্ডের এই ভিডিও ক্লিপে তিনি বলেন, আমি কথা বললে তো মির্জা কাদেরের বিরুদ্ধে কথা বলব না, আমি কথা বলব ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে। একটা রাজাকার ফ্যামিলির লোক এই পর্যায়ে আসছে তার ভাইকে শাসন করতে পারে না। এগুলো নিয়ে আমি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কথা বলব। আমার যদি জেলা কমিটি না আসে তাহলে আমি এটা নিয়ে শুরু করব।

এ নিয়ে জানতে চাইলে একরামুল মুঠোফোনে বলেন, ভিডিও সরিয়ে নিলেও তিনি ওবায়দুল কাদেরের পরিবারের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্য। তবে ওবায়দুল কাদের মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, এটাও স্পষ্ট করেন তিনি। তাহলে কার কথা বলেছেন- এমন প্রশ্নে একরামুল বলেন, আপনারা গণমাধ্যমকর্মীরা খবর নিলে জানতে পারবেন তার পরিবারে কারা রাজাকার ছিল।

‘তবে ওবায়দুল কাদের এমপি একজন মুক্তিযোদ্ধা। দীর্ঘদিন থেকে তার ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে এলোমেলো বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি তার ভাইকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, এ জন্য তিনি (কাদের মির্জা) এসব কথা বলেছেন।’

এই বক্তব্য দেয়ার আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ২ নম্বর আমলি আদালতে কাদের মির্জার বিরুদ্ধে মানহানি মামলার আবেদন করেন ১০ নম্বর অশ্বদিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।

এর প্রতিবাদে সন্ধ্যায় বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ করেন কাদের মির্জা। সমাবেশ শেষে একরামুল করিম চৌধুরী ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম সামছুদ্দিন জেহানের কুশপুতুল পোড়ায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App