×

সারাদেশ

দৌলতপুরে ইটভাটায় অভিযান, ৮০ লাখ টাকা জরিমানা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২১, ০৭:০৭ পিএম

দৌলতপুরে ইটভাটায় অভিযান, ৮০ লাখ টাকা জরিমানা
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় সরকারি নীতিমালা অমান্য করে অবৈধভাবে কাঠ পোড়ানোর ঘটনায় ১৪টি ইটভাটায় দুই দফা অভিযান চালানো হয়েছে। বুধবার (২০ জানুয়ারি) দিনভর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১১টি ইটভাটায় দ্বিতীয় দফায় অভিযান চালান পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সঙ্গে ছিলেন, র‍্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা। এর একদিন আগে তিন ইটভাটায় চালানো হয় প্রথম দফার অভিযান। অভিযানকালে এসব ইটাভাটা মালিককে ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জানা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট টিমের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু হাসানের নেতৃত্বে বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১১টি ইটভাটায় পর্যায়ক্রমে অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানে সঙ্গে ছিলেন, র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর গাফফরুজ্জামান ও পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক কমল কুমার বর্মন। অভিযানে পর্যাপ্তসংখ্যক র‌্যাব সদস্য উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশ অধিদপ্তর ও র‌্যাবের এই যৌথ অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকা এবং সরকারি নিয়মবহির্ভূতভাবে কাঠ পোড়ানোর দায়ে উপজেলার রিফায়েতপুর এলাকার বিএইচএন ব্রিকসের মালিক আসাদুজ্জামানকে ৭ লাখ টাকা, এমবিএন ব্রিকসের মালিক ঝুমুর আলীকে ৭ লাখ টাকা, পাশের নারায়ণপুর এলাকার এবিসি ব্রিকসের মালিক আব্দুস সালামকে ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা, উপজেলা সদরের পাশের এলাকা স্বরুপপুরের এবিসি ব্রিকসের মালিক আবু বক্কর সিদ্দিককে ৬ লাখ টাকা, দৌলতপুর হাসপাতাল রোডের এএমবি ব্রিকসের মালিক হাজি ইয়াসিন আলীকে ৮ লাখ টাকা, সাদিপুর এলাকার হুমায়ুন কবিরের মালিকানাধীন দুই ইটভাটা এএলএলসি ব্রিকস ও এলএলবি ব্রিকসকে ১০ লাখ টাকা, ডাংমড়কা এলাকার এমআরএন ব্রিকসের মালিক মোফাজ্জল হককে ৮ লাখ টাকা, একই এলাকার পলাশ হোসেনের এনবিএল ব্রিকসকে ৮ লাখ, শরিফুল ইসলামের এইচএলবি ব্রিকসকে ১ লাখ টাকা এবং বিএসবি ব্রিকসের মালিক জাহাঙ্গীর হোসেনকে ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানকালে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইটভাটা চালানোয় এবং সময়মতো সেখানে উপস্থিত না হয়ে জরিমানার অর্থ দিতে গড়িমসি করায় জাহাঙ্গীর হোসেন ও শরিফুল ইসলামের ইটভাটার কিছু অংশ ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়। এর একদিন আগে সোমবার (১৮ জানুয়ারি) প্রথম দফার অভিযানে এখানকার তিন ইটভাটা মালিককে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তাদের মধ্যে উপজেলা পরিষদের পাশের এলাকা স্বরুপপুরে বজলুর রহমান কটার ইটভাটায় ৩ লাখ টাকা, একই এলাকায় অবস্থিত তার বড় ভাই আব্দুস সাত্তারের ইটভাটায় ৩ লাখ টাকা এবং উপজেলার রিফায়েতপুর ইউনিয়নের সোনাইকান্দি এলাকায় নজরুল ইসলামের ইটভাটায় ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন কর্মকর্তারা। ওই অভিযানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হাসান নেতৃত্ব দিলেও মাঝখানে একদিন বিরতি দিয়ে বুধবার পরিচালিত এই অভিযানে কৌশলগত কারণে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের রাখা হয়নি বলে জানা যায়। অভিযান শেষে ঢাকা থেকে আসা পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনফোর্সমেন্ট টিম) আবু হাসান সাংবাদিকদের বলেন, অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নেয়া এবং জ্বালানি হিসেবে কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানোর দায়ে এসব ইটভাটা মালিককে এই অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। ইটভাটা মালিকরা পুনরায় যেন এমন অবৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইটভাটা না চালান সে বিষয়েও সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে অনুমোদনহীন ইটভাটাগুলো উচ্ছেদে অভিযান চালানো হবে। র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর গাফফারুজ্জামান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এসব ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। ইটভাটা মালিকরা সরকারি নিয়মনীতি না মেনে অবৈধভাবে তাদের ভাটা চালিয়ে আসছিলেন, তাই এই অভিযান চালানো হয়েছে। অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধে এ রকম অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন এই র‌্যাব কর্মকর্তা। প্রসঙ্গত, দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২৬টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ২৫টিরই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এসব ইটভাটায় সরকারি নিয়মনীতিকে কোনো রকম তোয়াক্কা না করে জ্বালানি হিসেবে কয়লার বদলে অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর ইটভাটাগুলোয় কাঠ পোড়ানোর মচ্ছব চলে আসলেও তারা ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় লিপ্ত হয়ে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। সম্প্রতি এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। অবশেষে এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে পরপর দুই দফা অভিযান চালানো হয়। জরিমাানা করা হয় ৮০ লাখ টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App