×

মুক্তচিন্তা

উগ্র ডান-বাম শক্তি রাষ্ট্রের জন্য কতটা বিপজ্জনক?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:৪৯ পিএম

বিশ্বে রাজনৈতিক অতি প্রবাহকে গভীরভাবে দেখলে ও বুঝার চেষ্টা করলে যে কোনো বিবেকবান, আদর্শবান মানুষ বিভাজন রেখার ডানদিকের রাজনৈতিক শক্তিসমূহের এবং বামদিকের পার্থক্যটা সহজেই দেখতে পারেন। দেখা, জানা ও বুঝার জন্য শুধু ইচ্ছা শক্তিই নয়, নিরন্তর জ্ঞানচর্চাও থাকতে হয়। পৃথিবীর রাজনীতি এখন বেশ জটিল। জটিল এই রাজনীতিকে রাষ্ট্র ও মানব কল্যাণে প্রবাহিত করতে হলে উদারবাদী ভাবাদর্শের কোনো বিকল্প নেই। উগ্র হঠকারী ডান-বামরা শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের মতোই মানুষকে হঠকারী পথে পরিচালিত করে।
আধুনিক যুগে রাষ্ট্রে বিভিন্ন ভাবাদর্শের ব্যক্তি, গোষ্ঠী এবং রাজনৈতিক দলের অবস্থান সবার কাছেই জানা। এসব মতাদর্শের মধ্যে উদারবাদী গণতান্ত্রিক, রক্ষণশীল গণতান্ত্রিক, ডান, মধ্য ডান, উগ্র ডান এবং বাম ও উগ্র বাম ধারার রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠী বেশ ক্রিয়াশীল। রাজনীতিতে এসব ছোট-বড় দলের ভ‚মিকা এক রকম নয়। আধুনিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা থেকে এর গঠন, বিকাশ এবং মর্যাদায় উত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টি বেশ সুচিন্তিত মতাদর্শের প্রয়োগের ওপর নির্ভরশীল। বিশে^ যত আধুনিক রাষ্ট্রের উত্থান ও বিকাশ ঘটেছে তার সঙ্গে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা জড়িয়ে আছে উদারবাদী রাজনৈতিক শক্তির অবদান। রক্ষণশীল এবং উগ্র ডান-বামদের ভ‚মিকা কোনো দেশেই রাষ্ট্র গঠন, বিকাশ ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক ভ‚মিকা পালন করেনি। একমাত্র উদারবাদী শক্তির কল্যাণে ১৯২০ শতকে পৃথিবীতে বেশিরভাগ জাতি-রাষ্ট্রের উত্থান ঘটেছে। উগ্র রাজনৈতিক শক্তি সেই উত্থানে প্রায়ই বাধা প্রদান করেছে কিংবা জনগণকে ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করেছে। এটি হচ্ছে রাষ্ট্র সম্পর্কে তাদের মতাদর্শগত সমস্যাÑ যা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবতা বিবর্জিত থাকে। আধুনিককালের জাতি-রাষ্ট্র কোনোভাবেই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব জনগণকে ঐক্যবদ্ধ না করে গঠন করা সম্ভব হয়নি। একমাত্র উদারবাদীরাই সবাইকে একত্রিত করতে সক্ষম হয়, কেননা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ও ধর্মবিশ্বাসের মানুষের আস্থা অর্জনে উদারবাদী চিন্তাধারা ও সংস্কৃতি ব্যতীত কোনো ব্যক্তি গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দলের পক্ষে সম্ভব নয়। রক্ষণশীল গোষ্ঠী দৃষ্টিভঙ্গিগতভাবে সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠতে পারেন না। রাষ্ট্রব্যবস্থা তাদের পথচলা প্রায়ই অতি ডানমুখী হয়ে পড়ে। এটি অবশ্য নির্ভর করে নেতৃত্ব প্রদানকারী নেতা ও গোষ্ঠীর চিন্তাধারার ওপর। রক্ষণশীল মতাদর্শের ভেতরে যারা অপেক্ষাকৃত মধ্যম বা উদারবাদে বিশ^াসী তারা রাষ্ট্রের হাল ধরলে কিছুটা রাষ্ট্র ও জনগণ নিরাপদ থাকে। উগ্র ডান ও উগ্র বামরা কোনো আধুনিক রাষ্ট্রের জন্যই নিরাপদ নয়। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের সবারই এ বিষয়ে প্রত্যক্ষ ধারণা লাভের সুযোগ হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান, আইনকানুনকে উপেক্ষা করে নির্বাচনী ফলাফলের বিরুদ্ধে নিজে এবং তার সমর্থককে দাঁড় করিয়েছিলেন, ক্যাপিটল হিলের মতো কংগ্রেস প্রাসাদে অভ্যুত্থান ঘটাতে চেষ্টা করেছিলেন সেটি সারা বিশে^র কাছে বিস্ময়কর মনে হয়েছে। কিন্তু উগ্র ডানপন্থায় বিশ^াসী নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের কাছ থেকে এমন অনাকাক্সিক্ষত বিষয় সংঘটিত করা মোটেও নজিরবিহীন নয়। ২০ শতকে ইতালিতে মুসোলিনী, জার্মানিতে হিটলার, স্পেনের ফ্রাঙ্কু, চিলিতে পিনুচেৎসহ অনেক উগ্র ডানপন্থি শক্তির ক্ষমতায় আরোহণ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার জ্বলন্ত উদাহরণ। যেসব রাষ্ট্র প্রধানের নাম ওপরে উল্লেখ করেছি তাদের ফ্যাসিবাদী বা ন্যাৎসিবাদী রাজনীতির ধারক-বাহক হিসেবে সবাই অভিহিত করে থাকেন। ফ্যাসিবাদ হচ্ছে উগ্র জাতীয়তাবাদÑ যা লগ্নিপুঁজির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে মারণাস্ত্রভিত্তিক রাষ্ট্র শক্তি কায়েমের জন্য ঞবৎৎড়ৎরংঃ কর্মকাণ্ড নির্বিচারে ঘটিয়ে থাকে। হিটলার যেমন চেয়েছিলেন পৃথিবীতে জার্মান জাতিই সর্বত্র কর্তৃত্ব করবে, কেননা তার ভাষায় জার্মান জাতি একমাত্র বিশুদ্ধ রক্তের জাতি। সে কারণে তিনি সমগ্র ইউরোপ দখলের জন্য জার্মান বাহিনীকে স্থল, জল ও আকাশ পথে আক্রমণে যুক্ত করেন। মুসোলিনীও তার সঙ্গে একত্রিত হয়েছিলেন। উগ্র ডানপন্থায় বিশ্বসীরা নিজ দেশের অভ্যন্তরে জাতিগত বিরোধকে চাঙ্গা করার নীতি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসন ‘শ্বেতবর্ণের অধিবাসীদের শ্রেষ্ঠত্ব’ কায়েম করতে গিয়ে যে জটিলতা তৈরি করেছেন তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আড়াইশ বছরের পথচলাকে এই সময়ে সবচেয়ে জটিল সংকটে নিক্ষেপ করেছে। অন্যদিকে ডেমোক্রেট দল এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সব মার্কিন নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ থাকার আবেদন জানিয়েছেন। এখানেই উগ্র ডান এবং উদারবাদী গণতান্ত্রিক শক্তির মধ্যকার পার্থক্য স্পষ্ট প্রতীয়মান। এটি শুধু আমেরিকার ক্ষেত্রেই নয়, পৃথিবীর অনেক দেশেই লক্ষণশীল রাজনৈতিক দলের ছদ্মাবরণে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণে রক্ষণশীলরা হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। ব্রিটেনে একসময় মার্গারেট ট্রেচার উগ্র ডানপন্থায় ব্রিটেনকে বেশ বিতর্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন। অথচ ব্রিটেনকে বলা হয়ে থাকে গণতন্ত্রের সূতিকাগার। কিন্তু রক্ষণ ডানপন্থার রাজনৈতিক দলগুলো উন্নত দেশগুলোতেও নানা ধরনের বিভাজিত নীতি ও কৌশল অবলম্বন করে থাকে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আমাদের মতো পশ্চাৎপদ অনুন্নত উন্নয়শীল দেশগুলোতে গণতন্ত্রের বিকাশ বেশ জটিল এবং ওঠানামার মধ্য দিয়েই চলছে। আমাদের মতো দেশগুলোতে রাজনৈতিক আদর্শ ও সংগঠনের বিকাশ স্বাভাবিক নিয়মে গড়ে উঠতে পারেনি। ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ে যেসব রাজনৈতিক শক্তির অংশগ্রহণ ছিল, তারা স্বাধীনতার আকাক্সক্ষায় একত্রিত হলেও রাজনৈতিক মতাদর্শে বিভাজন ও দুর্বলতা স্বাধীনতা লাভের পর বেশ জটিল হয়ে পড়ে। সেই জটিলতাকে বিশে^র পরাশক্তিগুলো আরো জটিল করেছে তাদের হস্তক্ষেপ ও স্বার্থ রক্ষার কৌশল অবলম্বনের কারণে। একসময় লাতিন আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে সদ্য স্বাধীন দেশ রাষ্ট্রসমূহের উদারবাদী নেতাদের রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ বা হটানোর কাজে ইন্ধন জুগিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু কিছু উন্নত দেশের সরকার এবং তাদের নানা ধরনের গোপন বাহিনী। এর ফলে এই তিনটি মহাদেশেই জাতিরাষ্ট্র গঠনে উদারবাদী রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের ভ‚মিকা রাখার সুযোগ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। অনেক দেশেই প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতায় আরোহণ সেই দেশের রাজনীতিতে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করেছে। স্বাধীনতার এত বছর পরও অনেক দেশই উদারবাদী গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতির বিকাশে আশানুরূপ সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। এর ফলে অনেক রাষ্ট্রেই উগ্র ডানপন্থার রাজনৈতিক শক্তির ক্ষমতায় আরোহণ এবং সমাজ জীবনের বিস্তার ঘটানোর ব্যাপক সুযোগ ঘটেছে। তবে আশির দশক থেকে এশিয়া মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকায় উগ্র ধর্মীয় মতাদর্শ উগ্র ডানপন্থার শক্তি হিসেবে আবিভর্‚ত হয়। সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ এই অঞ্চলগুলোতে এতটাই আর্থিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে শক্তি অর্জন করে, যার ফলে রাষ্ট্র রাজনীতির চিরায়ত ধ্যানধারণাই এসব অঞ্চলে গৌন হয়ে যায়, ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর প্রভাব সমাজ ও রাজনীতিতে প্রাধান্য লাভ করতে থাকে। এই অবস্থায় উদারবাদী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনের রাজনৈতিক কাঠামো নির্মাণই অসম্ভব হয়ে উঠেছে। গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে এসব দেশে সাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শে বিশ^াসী উগ্র ডানপন্থার শক্তিসমূহের রাষ্ট্রক্ষমতায় আরোহণ গত শতকের ২০ এবং ৩০ দশকের ইতালি ও জার্মানির মতো সহজ হয়ে উঠেছে। অথচ গণতান্ত্রিক সুবিধা নিয়ে ইতালি ও জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থার ফ্যাসিবাদী ও নাৎসিবাদী শক্তি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো সভ্যতা ধ্বংসকারী যুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। বর্তমানে সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং আফ্রিকার কয়েকটি রাষ্ট্রে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি যে ধরনের শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে শক্তির প্রয়োগ ঘটাচ্ছে তাতে সেসব দেশের সাধারণ মানুষের জীবনই প্রতিদিন বোমার আঘাতে ধ্বংস হচ্ছে। এই উগ্র জঙ্গিবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তি অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। এদের হাতে রাষ্ট্র, জনগণ এবং মানুষের পবিত্র বিশ্বাসও নিরাপদ নয়। আমাদের দেশে ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডের পর যারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল তারা একটি উদারবাদী আধুনিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের উদ্যোগকে ধ্বংস করে দেয়। স্থাপন করতে থাকে উগ্র হঠকারী ডান-বামদের নিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন, সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানসমূহকে উগ্র হঠকারী চরিত্রদান, সমাজকে জাতিগত ধর্ম ও জাতিগত বিরোধে বিভক্ত করা এবং আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের অর্জনকে ধ্বংস করার প্রচারণা ও অপপ্রয়াস অব্যাহত রেখেছিল। ফলে সমাজ, রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে উদারবাদের অগ্রযাত্রা অনেকটাই ধ্বংস হয়ে যায়। সাম্প্রদায়িক উগ্র ও ডানপন্থার ভাবাদর্শ তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। ফলে বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সমাজের উগ্র ডান ও উগ্র বাম শক্তির হঠকারী রাজনীতিতে অনেকটাই ভরে ওঠে। এই শক্তি ১৯৯১ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। গণতান্ত্রিক সরকারের মর্যাদা লাভ করে। এই শক্তি রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনে স্বাধীনতাবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতকারী এবং সব ধরনের উগ্র ও বিকৃত মতাদর্শের বিশ^াসীদের ‘রাষ্ট্রচিন্তায় একত্রিত ও সংহত করে’। উগ্র ডানপন্থার শক্তির জোট নিরঙ্কুস ‘বিজয়’ লাভ করে। ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই দেশ থেকে অসাম্প্রদায়িক, উদারবাদী, রাজনীতি ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক শক্তিসমূহকে উচ্ছেদ ও নির্মূল করার অভিযানে নামে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রে শুধু বিভাজনই নয় মুক্তিযুদ্ধের শক্তির উৎপাটনও ক্ষমতাসীন উগ্র সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর ধারা সংগঠিত হতে থাকে। বিরোধী দলের রাজনীতিই শুধু নয়, তাদের জীবনও বিপন্ন হতে থাকে অনেকটা মুসোলিনীর ইতালি ও হিটলারের জার্মানির মতো। বিরোধীদলীয় নেতাদের হত্যা করার জন্য প্রকাশ্য দিবালোকে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়েছিল। এটি বাংলাদেশের জন্য নজিরবিহীন হলেও উগ্র হঠকারী সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর রাজনীতির জন্য স্বাভাবিক বিষয়। তবে রাজনীতির এই পরস্পর বিরোধী চরিত্র অনেকেই সহজে অনুধাবন করতে পারেন না। সে কারণে তারা গণতন্ত্রের বড় আবরণের নিচে এদেরও সমান মর্যাদা দিয়ে থাকে। কিন্তু রাজনৈতিক আদর্শ চরিত্র গভীর বিশ্বাস থেকে উৎসারিত। সেই বিশ্বাসের মূল যদি হয় আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের শিক্ষা তাহলে তাতে যুক্তিবাদ, উদারতাবাদ, মানবতাবাদসহ রাষ্ট্রীয় অগ্রযাত্রার চিন্তাধারা প্রাধ্যান্য পায়। আর যদি সেই বিশ্বাসের মূলে থাকে উগ্র ও হঠকারী বিশ্বাস, জাতিগত বিভাজন, ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা, বর্ণবাদ এবং জাতপাতের ভেদাভেদ তাহলে সেই রাজনীতিকেই শুধু নয় রাষ্ট্রের আদর্শকেও বিপদগামী ও বিপজ্জনক করতে বাধ্য। খুব খোলা চোখে উদার মনে বিশ্বের রাজনৈতিক অতি প্রবাহকে গভীরভাবে দেখলে ও বুঝার চেষ্টা করলে যে কোনো বিবেকবান, আদর্শবান মানুষ বিভাজন রেখার ডানদিকের রাজনৈতিক শক্তিসমূহের এবং বামদিকের পার্থক্যটা সহজেই দেখতে পারেন। দেখা, জানা ও বুঝার জন্য শুধু ইচ্ছা শক্তিই নয়, নিরন্তর জ্ঞানচর্চাও থাকতে হয়। পৃথিবীর রাজনীতি এখন বেশ জটিল। জটিল এই রাজনীতিকে রাষ্ট্র ও মানব কল্যাণে প্রবাহিত করতে হলে উদারবাদী ভাবাদর্শের কোনো বিকল্প নেই। উগ্র হঠকারী ডান-বামরা শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের মতোই মানুষকে হঠকারী পথে পরিচালিত করে। মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App