×

মুক্তচিন্তা

সুবিবেচনার কয়েকটি বিষয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২১, ১০:৪৯ পিএম

কঠোর কৃচ্ছ্র অবলম্বন। করোনা জাতীয় অর্থনীতিতে এতদিনের অর্জিত সাফল্য ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির অগ্রযাত্রাকে শুধু শ্লথ করছে না, করবে না, ক্ষেত্র বিশেষে পিছিয়ে দেবে এবং গোটা অর্থনীতিকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে ছাড়বে। এমতাবস্থায় অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে অন্তত পূর্বের অবস্থায় (ডিসেম্বর ২০১৯) ফিরতে সরকারি-বেসরকারি, ব্যক্তি ও সামষ্টিক খাতে সর্বত্র উন্নয়ন-অনুন্নয়ন বাজেটে ব্যয় সাশ্রয়ী হতে কঠোর কৃচ্ছ্রসাধনের সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে থাকতেই হবে। সকল প্রকার অপ্রয়োজনীয়, অনুৎপাদনশীল খাতে সময়, সামর্থ্য, সমর্থন ও অর্থের অপচয়-অপব্যয় পরিহার করা আবশ্যক। করোনা বিশ্বব্যাপী তার আক্রমণের দ্বারা, বড়-ছোট সব অর্থনীতিকে কুপোকাত করে এই সত্য জানান দিয়ে যাচ্ছে যে, এখন থেকে যার যা আছে তাই দিয়ে তাকে চলতে হবে। পরমুখাপেক্ষী কিংবা পরনির্ভরশীল হওয়া বা থাকার সুযোগ হবে সীমিত। সুতরাং স্বনির্ভর আর্থিক স্বয়ম্ভরতা অর্জনের পথে আরো বেশি ‘হিসেবি’, আরো বেশি ‘সতর্ক’ ও সাবধানতা অবলম্বনকে জাতীয় চিন্তাভাবনা ও অভ্যাসের আওতায় আনতে হবে। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা বিধান, সুশাসন কার্যকর ও নীতিনৈতিকতার অধিষ্ঠান জোরদার করা। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের আর্থিক খাত করোনা পূর্বকাল থেকেই বেশ কিছু বশংবদ দুর্বলতায় সংক্রমিত। ব্যাংকিং খাতে বড় বড় লোপাট, বিদেশে অর্থপাচার, রাজস্ব ফাঁকি কিংবা অঢেল রেয়াত, কঠিন শর্তের দেশি-বিদেশি ঋণগ্রহণ, প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হেতু অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধি, রেন্ট সিংকিং, ক্ষৈত্রিক পর্যায়েও পদে পদে দুর্নীতি, নানা ফন্দি-ফিকিরে গণসম্পদ ও স্বার্থ আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিবিধান প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর কার্যকর ভ‚মিকার অবর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছিল। ফলে সমাজে আয় বৈষম্য বৃদ্ধির মাত্রা সীমা অতিক্রান্ত হচ্ছিল, হচ্ছে এবং হবে বলে প্রতীয়মান। করোনা-উত্তর পরিবেশে আয়-ব্যয় বণ্টন বৈষম্য বৃদ্ধির বিষয়টি সামাজিক সংহতি ও করোনায় ক্ষতিহেতু সবার বর্ধিত চাহিদা ও দাবি পূরণের পথে শৃঙ্খলা বিধানের ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই করোনা-উত্তরকালে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যেসব দেশে আয়-ব্যয় বৈষম্য পরিস্থিতি আগে থেকেই রোগাক্রান্ত সেসব দেশে গণঅসন্তোষ ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। বৈশ্বিক মন্দার প্রেক্ষাপটে নিজ নিজ দেশকেই তা মোকাবিলায় পারঙ্গম হতে হলে লুণ্ঠিত টাকা বা সম্পদ পুনরুদ্ধার ও বণ্টনে বৈষম্য/দুর্নীতি দমনের আবশ্যকতা দেখা দেবে। ফিসক্যাল মেজারমেন্ট ও ম্যানেজমেন্টে সংস্কারে মনোযোগ দিতে হবে।

পণ্য ও সেবা উৎপাদন, আমদানি-রপ্তানি, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ, বাজার ব্যবস্থাপনায় ‘নিজেরটা নিজে দেখ’ নীতি অবলম্বন। করোনার বিশ্বব্যাপী বিচরণে ও মোটাতাজাদের সরু হওয়ার কারণে জাতীয় ও বিশ্ব অর্থনীতি ব্যবস্থাপনার চত্বর চৌহদ্দিতে এই উপলব্ধি পরিব্যাপ্ত হচ্ছে বা হবে যে ‘পুঁজিবাদ’, ‘বিশ্বায়ন’ ও ‘মুক্তবাজার অর্থনীতি’র ধ্যান-ধারণা হালে পানি পাবে না। এখন ‘চাচা আপন বাঁচা’ নীতিতে অবগাহনের প্রয়োজন হবে। বঙ্গবন্ধু যেমনটি আহ্বান জানিয়েছিলেন ‘তোমাদের যার যা আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়’। আমাদের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় সাফল্য আছে। একে আরো জোরদার করতে হবে। জাপানের মাত্র ২০ ভাগ জমি সমতল এবং মাত্র ১৩ ভাগে তারা শুধু ধান চাষ করতে পারে। গবেষণা দ্বারা এমন চাষ পদ্ধতি তারা উদ্ভাবন করেছে যে, খাদ্যশস্য উৎপাদনে তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ। মৎস্য ও পশুসম্পদ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ম্ভরতার পথে। যেহেতু বাংলাদেশের রয়েছে উর্বর কৃষিজমি, জলাশয়, অধিক ফলনশীল শস্য উৎপাদনের অবকাঠামো, উদ্যম ও উদ্যোগ সেহেতু খাদ্যশস্য, সবজি, মৎস্য ও মাংস নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে করোনা-উত্তর পরিস্থিতিতে বহির্বিশ্বের বর্ধিত ও সৃজিত চাহিদা মেটানোতে বাংলাদেশ বরং এ খাতে রপ্তানির মহাসড়কে শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে, যদি এ খাতের প্রতি যত্নবান ও মনোযোগ দেয়া হয়। বাংলাদেশের মানবসম্পদ তৈরি পোশাক খাতে যে অবদান রাখছে তাতে ভ্যালু অ্যাডিশন আরো বাড়ানো সম্ভব হবে বাংলাদেশ যদি কাঁচামাল, মেশিনারিজ ও টেকনোলজিতে ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ গড়ে তুলতে পারে। যে কোনোভাবে হোক ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজে গড়ে তুলতে মনোযোগী হতে হবে।

বাংলাদেশের মানবসম্পদকে বাধ্যতামূলকভাবে ভোকেশনাল ট্রেনিং দিয়ে, কারিগরি উচ্চশিক্ষায় মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করে দেশের চাহিদা (উল্লেখ্য, বিদেশি কর্মীদের দ্বারা বার্ষিক গড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবাসন হয় বাংলাদেশ থেকে) মেটানো সম্ভব হবে, প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ দেশে যে কোনো বৃত্তিমূলক পেশায় এবং বিদেশে ‘ভালো বেতনে’ কাজ পাবেন। মানবসম্পদে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য করোনা-উত্তর বিশ্ববাজারে সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে, এ আশাবাদ ব্যক্ত করা যায়।

করোনাকালে আমাদের বোধোদয় হচ্ছে সামনের দিনগুলোর নিয়ন্তা হবে ভার্চুয়াল যোগাযোগ সংস্কৃতির। ডিজিটাল প্রযুক্তি কর্মসূচিতে বাংলাদেশ সময়ের চেয়েও এগিয়ে আছে, এটি একটি বড় প্লাস পয়েন্ট। এই অবকাঠামোতেই বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তা উদ্ভাবক দেশে এবং বিদেশে ভার্চুয়াল অর্থনীতিতে সফলতার সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারবে। অতএব মনোযোগ প্রয়োজন এখানেও। সরকারি খাতের চেয়ে বেসরকারি খাতে (বিশেষ করে ব্যক্তি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প/কর্ম উদ্যোগে) বিনিয়োগের পাল্লা ভারি করতে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ নীতিমালায় সংস্কার ও নতুন নতুন পথ-পন্থার সমাবেশ ঘটানো প্রয়োজন হবে। বেসরকারি বিনিয়োগই কর্মসৃজন, ভোক্তা সৃষ্টি ও পোষণ, পণ্য ও সেবা উৎপাদনের হাতিয়ার। ব্যাংক ঋণ প্রবাহ সরাসরি ক্ষুদ্র-মাঝারিদের কাছে বিনা মাশুলে যাওয়া-আসা করতে পারে, বেল আউট-ইনসেনটিভ-প্রণোদনার সুযোগ-সুবিধা শুধু বড়রা বা মধ্যস্বত্বভোগীরা হাতিয়ে না নিতে পারে আর আইন-কানুনের খড়্গ শুধু প্রান্ত ও পান্থজনের বেলায় না হয় সে বিধান বা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা বা হওয়া লাগবে।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের দায়িত্বটি সুচারু, ন্যায়নীতিভিত্তিক, দুষ্টের যম শিষ্টের বান্ধব হিসেবে পরিপালনকরত, রাজস্ব আয়-আহরণ যৌক্তিক মাত্রায় নিয়ে যাওয়া। যেসব খাত বা ক্ষেত্র থেকে মোটা দাগের কর বা শুল্ক রাজস্ব আসবে সেখানে অন্ধ আচরণ, অর্জিতব্য রাজস্ব আয়কে ভিন্ন পদ্ধতির আড়ালে-আবডালে চ্যানেলাইজড হতে দিলে, সরকারি সংস্থার দেয় রাজস্ব, রাজস্ব বিভাগের পরিবর্তে কিংবা তাদের কাছে পাওনা সরকারের দায়দেনা সরাসরি পরিশোধের পরিবর্তে অন্যত্র রাখার বা দেয়ার ব্যবস্থা হলে রাজস্ব আয়ের হিসাব মিলবে না এবং তহবিল ব্যবস্থাপনা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। করোনা-উত্তরকালে এসব যথাক্রমে দেখভালের আওতায় আনা প্রয়োজন হবে।

চলতি বাজেট সংশোধন ও নতুন বাজেট বানানোর সময় মাথায় রাখতে হবে, করোনার অভিঘাত সঞ্চারিত হবে প্রধানত রপ্তানি খাত, প্রবাসী আয়, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক যোগাযোগ ব্যবস্থায়। নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষের জীবনমানের অবনতি হবে। রাজস্ব আহরণের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যথেষ্ট কম হবে। করোনা সংকটের কারণে সরকারের আয় কমবে, ব্যয় বাড়বে। গরিব-নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য সহায়তা বাড়াতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে করের হার কমাতে হবে। কোনো ক্ষেত্রে মওকুফ করতে হবে। ফলে বাজেট ঘাটতি বেশ বাড়বে। সুদের হার ৬ ও ৯ শতাংশ বেঁধে দেয়ায় ব্যাংক আমানত কমলে বিনিয়োগও কমবে। সব দিক দিয়ে সামষ্টিক অর্থনীতি বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে। শিল্পকারখানার জন্য ঘোষিত প্রণোদনা নিজস্ব ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে জোগান দেয়া কঠিন হবে, এ জন্য আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক থেকে মঞ্জুরি সহায়তা, সফট লোন বা সহজ ঋণের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। আর্থিক খাতে সুশাসন, বিনিয়োগ পরিবেশ, ব্যবসা সহজীকরণের শর্ত পূরণ করার জন্য এসব ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে হবে।

দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ অর্থনীতির বহির্মুখীনতাকে অন্তমুখীনকরণ, বৈদেশিক সাহায্য, বিদেশি বিনিয়োগ, বিদেশি কাঁচামাল, প্রযুক্তি ও পরামর্শ কমিয়ে দেশীয় লাগসই প্রযুক্তি, কাঁচামাল, সক্ষমতা, মানবসম্পদ ব্যবহারসহ নিজ বাজার সৃষ্টি তথা নিজের দিকে তাকানোর উপায় উদ্ভাবন। আন্তসহায়ক সলিলাশক্তিকে সম্মান, সমীহ ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। জনগণই সম্মিলিতভাবে পরিশ্রম ও প্রয়াসের দ্বারা দেশের সব সাফল্য আনে। তাদের এই সক্ষমতা ও ভ‚মিকাই আন্তসহায়ক সলিলা শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে যে চেতনা ও মূল্যবোধে উজ্জীবিত হয় তাকে যথা স্বীকৃতি ও সম্মান দেয়া হলে, জনগণের পরিশ্রমকে, জন আকাক্সক্ষাকে, দাবিকে সমীহ করা হলে দেশ-জাতি তথা জনগণ উন্নয়ন অর্থবহ ও টেকসই হবে। পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসকারী কার্যক্রম গ্রহণে আরো সতর্ক-সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় লাগসই সক্ষমতা বৃদ্ধি। সংক্রামক-অসংক্রামক রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়লে তা মোকাবিলার প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার মতো অবকাঠামো গড়ে তোলা, নীতিমালা নির্দিষ্ট করা। জাতীয় ঐক্য ও সংহতিতে গুরুত্ব প্রদানকারী স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক অর্থনীতির বিকাশ। করোনার উৎস, অতি সংক্রমণের প্রসার, প্রসার প্রতিরোধ এবং ব্যাপক প্রাণহানির প্রেক্ষাপট নিয়ে বিশ্ব শক্তিগুলোর মধ্যে কোনো ঠাণ্ডা যুদ্ধ পরিস্থিতি আছে কিনা, মানবিক বিপর্যয় রোধে তাদের কারো কারো দৃশ্যমান ব্যর্থতার পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য বা অভিসন্ধি আছে কিনা তা নিয়ে সমাজ ও রাজনীতি বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে সমালোচনা শুরু করে দিয়েছেন। মার্কিন ভাষাতত্ত¡বিদ-দার্শনিক নোয়াম চমস্কি সোজা-সাপটা বলেই ফেলেছেন, চীনের বাইরে দেশগুলোর কাছে করোনার ভয়াবহতার তথ্য আগে থেকে থাকা সত্তে্ও (Nothing was done. The crisis was then made worse by the treachery of the political systems that didn’t pay attention to the information that they were aware of.) রাজনৈতিক ভেদ-বুদ্ধির ফেরে কিছুই করা হয়নি, না হলে করোনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি কমানো যেত। যা হোক এটি এখন বাস্তবতা যে, করোনা ভাইরাস বিশ্বের এখন পর্যন্ত ২০৫ দেশের মানুষকে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্ক-আশঙ্কায় ফেলেছে, যা অতীতে কখনো এমন কোনো দৈব-দুর্বিপাক, মহামারি বা দুর্যোগ এভাবে মানুষকে ভয়ের কাতারে বাঁধতে পারেনি। মানুষের মাধ্যমে ভয়ানক প্রকৃতির এই ভাইরাস সংক্রামিত হয় বলে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির এবং সামাজিক সংযোগ শুধু নিষিদ্ধই হচ্ছে না, করোনায় আক্রান্তের প্রতি সহানুভূতি ও চিকিৎসা সেবা দেয়ার ব্যাপারটিও স্পর্শকাতরতার কাদায় মাখামাখি হয়ে মানবতার প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যে যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন করোনার ভয় সবাইকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। ব্যক্তি স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য করোনা যেমন ভয়াল প্রতিপক্ষ, মানুষের জীবন-জীবিকা তার আর্থ-সামাজিক অবস্থান, দেশ ও বিশ্ব অর্থনীতির জন্য করোনা ব্যাপক অঘটনঘটনপটিয়সী বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। পুঁজিবাদ, বিশ্বায়ন, মুক্তবাজার অর্থনীতির ধারণা, এমনকি মেকি গণতন্ত্র অস্তিত্বের সংকটে পড়তে পারে বলে পণ্ডিতরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। ইতিহাসের সাক্ষ্য এইÑ বিধাতা প্রদত্ত প্রাকৃতিক সম্পদ উপভোগে অপব্যবহারের উদগ্র বাসনায়, উদ্ধত আচরণে অমানবিক, অন্যায়-অবিচারের দ্বারা, অকৃতজ্ঞতায় সত্য ও সুন্দরের প্রতি বিরূপ আচরণে অতিষ্ঠ হয়েছে প্রকৃতি। বহু বছর পর পর সীমা লঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়ের মধ্যে মহামারি আসে উচিত শিক্ষা দিতে। বিশ্ববাসীর উপলব্ধিতে করোনা তাই প্রকৃতির প্রতিশোধের হাতিয়ার হিসেবে আসছে।

ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ : কলাম লেখক, সাবেক সচিব ও সাবেক চেয়ারম্যান- এনবিআর। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App