×

সারাদেশ

আকিজের বিড়ি কারাখানায় শ্রমিক অসন্তোষ, পুলিশের গুলি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:৪২ পিএম

আকিজের বিড়ি কারাখানায় শ্রমিক অসন্তোষ, পুলিশের গুলি

শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের একপর্যায়ে উভয়ের নিরাপদ অবস্থান

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আকিজের বিড়ি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের জেরে পুলিশের সাথে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে শ্রমিকরা কয়েক দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের থামাতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদে আকিজ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আকিজ বিড়ি কারখানার মূল ফটকের সামনে শনিবার (৯ জানুয়ারি) সকালের দিকে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সকালে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর বেশ কয়েকজন শ্রমিক কারখানায় ঢুকতে যান। এ সময় কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কারখানার ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম দৌলতপুর থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।

একপর্যায়ে পুলিশ আরো মারমুখী হয়ে ওঠে। শ্রমিকদের ওপর শুরু করে বেপরোয়া লাঠিচার্জ। এতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা নিবৃত না হওয়ায় পরে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। এ সময় শিপুল ইসলাম নামে এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৫ জন আহত হন। পরে পুলিশের গুলির মুখে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

পরে হোসেনাবাদ বাজার সংলগ্ন কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনরত শ্রমিকরা। দুপুর পর্যন্ত উপজেলার প্রধান এই সড়কটি টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রাখা হয়। হোসেনাবাদের শ্রমিকদের এই আন্দোলনে তাদের সঙ্গে উপজেলার ফিলিপনগরে অবস্থিত আকিজের আরেকটি কারখানার শ্রমিকরাও যোগ দেন। আহত শ্রমিকদের দৌলতপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ খবর লেখা পর্যন্ত হোসেনাবাদ আকিজ বিড়ি কারাখানার ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম ও সেখানকার দায়িত্বে থাকা অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

দৌলতপুর থানার ওসি জহুরুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে। এখনো শ্রমিকদের আন্দোলন চললেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে শ্রমিকদের শান্ত করে ঘরে ফেরাতে তাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা চালায় দৌলতপুর থানা পুলিশ। মজুরি দ্বিগুণ করা, কর্মঘণ্টা কমানোসহ কয়েক দফা দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকেরা পুলিশের গুলি চালানো প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বিড়ি কারাখানার ম্যানেজার আমিনুল ইসলামের অপসারণ দাবি করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৫ জুলাই দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদে আকিজ বিড়ির এই কারাখানায় ব্যাপকভাবে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। সে সময় কারখানার নিরাপত্তাকর্মীরা শ্রমিকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালান। তাদের গুলিতে মিন্টু (২২) ও রাকিবুল (২৫) নামে দুই শ্রমিক নিহত হন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকরা ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। শ্রমিকদের দাবি আদায়ের আন্দোলনের মুখে বেশ কিছুদিন কারাখানাটি অচল হয়ে পড়ে। পরে শ্রমিকদের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে পুনরায় কারখানা চালু হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App