×

মুক্তচিন্তা

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২১, ১০:১১ পিএম

বিজয় অর্জনের এতগুলো বছর আমরা পেরিয়ে এসেছি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। সেই ত্যাগ ও গৌরবের মহিমাকে স্মরণ করে ৪৯ বছর পূর্তি উদযাপন করেছি আমরা। এখন সময় সোনার বাংলাদেশের ৫০ বছরে পদার্পণ করা। ২০২১ সালে সেই সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে বাঙালি জাতি প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশ আজ নিজের অগ্রগতির জন্য পুরো বিশ্বের কাছে প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে। বাঙালি জাতি এই দেশকে সুবর্ণজয়ন্তীতে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত এবং একটি মর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে দেখতে চাই যেন বাংলাদেশকে দরিদ্র ও প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে উল্লেখ করে অবহেলা না করতে পারে। এই সুবর্ণজয়ন্তীতে আমাদের প্রত্যাশা অনেক, যেগুলোকে প্রাপ্তিতে পরিণত করতে প্রয়োজন যথাযথ কর্মপরিকল্পনা। ইতোমধ্যে আমরা অনেক প্রাপ্তি অর্জন করেছি। বিজয় অর্জনের পেছনে ত্যাগের যে প্রেক্ষাপট রয়েছে তা আজ সবার মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার দিকে তাকালে আমরা যে অগ্রগতির ছোঁয়া দেখতে পারি তার মূল সূচনা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর ১৯৭২ সালে দেশে প্রত্যাবর্তনের পরে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে। বর্তমানে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ও চাকরিজীবী মানুষের সংখ্যাও অনেক। শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা নিজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাইরের দেশে নিজের প্রতিভার পরিচয় দিচ্ছে। নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে পুরো বিশ্বকে। নতুন নতুন পরিকল্পনার সঙ্গে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসম্মত শিক্ষা ও মানোন্নয়নের দিকে দৃষ্টিপাত করা হচ্ছে। স্বাধীনতার পর যে দেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছিল সেই দেশের অগ্রগতি আজ সবার কাছে প্রশংসার পাত্র। দেশটি এখন অনেকের কাছে রোল মডেল। সবুজের মাঝে রক্তিম আভার যে পতাকা সেই পতাকার সম্মান ৪৯ বছরে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রে নয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি সব ক্ষেত্রে এগিয়েছে বাংলাদেশ। এই সমৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে ৫০ বছরে পদার্পণে বাংলাদেশ হবে একটি সমৃদ্ধিশালী দেশ। যে বাঙালি ১৯৭১ সালের যুদ্ধে দমে যায়নি সেই বাঙালি কখনই পিছিয়ে থাকবে না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দিকে লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়। রপ্তানি খাত কোনো দেশের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ খাত। বাংলাদেশের জন্য তার ব্যতিক্রম নয়। ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ৩৮৩ মিলিয়ন ডলার, বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি ৮০ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.২ বিলিয়ন ডলার। সেই সঙ্গে এখন রপ্তানি পণ্য, উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো তৈরি পোশাক খাত। এ খাতে বাংলাদেশের সাফল্য তাৎপর্যপূর্ণ। অনেক শ্রমজীবী মানুষ এ খাতের সঙ্গে যুক্ত আছে যারা নিজেদের কর্মসংস্থান পেয়েছে। এটা দেশের বেকারত্ব হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে। তবে প্রত্যাশা একটাই একদিন আমাদের আমদানি ব্যয়ের থেকে রপ্তানি আয় বেশি হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের যে চিত্র তা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে নির্দেশ করে। নারীর ক্ষমতায়ন প্রতিটি স্তরে প্রতীয়মান হচ্ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে, দেশের অগ্রগতি সব বিষয় নারীরা তাদের প্রতিভার পরিচয় দিচ্ছে। ২০২১ সালে ৫০ বছরে পা রাখতে চলেছে বাংলাদেশ নতুন নতুন অর্জনের সঙ্গে প্রাপ্তি-উল্লাসে আর প্রত্যাশাগুলোকে সামনে রেখে। তবে বর্তমান পুরো বিশ্বের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন। করোনা জর্জরিত পুরো বিশ্বের এখন একটাই প্রত্যাশা, সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া। নতুন এক পরিবেশের সঙ্গেই বাঙালি সুবর্ণজয়ন্তীর আমেজ অনুভব করছে। সব প্রকার বাধা পেরিয়ে উন্নয়ন ও সাফল্য অর্জিত হোক। ২০২১ সালের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের মূল লক্ষ্য ও প্রত্যাশাগুলো সফল হোক। শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App