×

জাতীয়

এলপিজির দাম ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:৪৩ এএম

এলপিজির দাম ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব

গ্যাস সিলিন্ডার

আদালতের হস্তক্ষেপে সব জটিলতার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এবার লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য পুনঃনির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী ১৪ জানুয়ারি থেকে গণশুনানি শুরুর ঘোষণা দিয়েছে বিইআরসি। ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এই গণশুনানি চলবে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে এলপিজির দাম পুনঃনির্ধারণ করা হবে। ইতোমধ্যেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এলপিজির দাম ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য বিইআরসির কাছে প্রস্তাব করেছে বলে জানা গেছে।

বিইআরসি সূত্র জানায়, ১৪ জানুয়ারি রাজধানীর ইস্কাটনের বিয়াম ফাউন্ডেশনের শহীদ এ কে এম শামসুল হক খান মেমোরিয়াল হলে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত গণশুনানি চলবে। ওইদিন শেষ না হলে ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি শুনানি চলবে। ইতোমধ্যেই সব এলপিজি কোম্পানিগুলো গত ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের দামের প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দিয়েছে। গত ৫ জানুয়ারি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২০০৯ সালে বিইআরসি সর্বশেষ এলপিজি গ্যাসের নাম নির্ধারণ করে। তখন সাড়ে ১২ কেজি ওজনের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৭০০ টাকা বেঁধে দেয়া হয়। বর্তমানে ১২ কেজি গ্যাসের একটি সিলিন্ডার ৯০০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দামের পার্থক্যের কারণে পরবর্তীতে দাম পুনঃনির্ধারণের দাবি ওঠে। এলপিজির মালিক ও তাদের সংগঠনের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও গত ১১ বছরে এই গ্যাসের দাম পুনঃনির্ধারণে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অথচ এই সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে একাধিকবার এলপিজির দাম ওঠানামা করেছে। সুযোগ বুঝে বাংলাদেশের এলপিজি ব্যবসায়ীরা এখনো নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম রেখে গ্রাহকদের পকেট কাটছে। ফলে গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনিয়মের ব্যাপারে বিইআরসির কাছেও অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু তারপরেও নীরব বিইআরসি।

বিইআরসির কাছে বারবার দাবি জানিয়েও কাজ না হওয়ায় ভোক্তাদের সংগঠন কনজ্যুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে যায়। দীর্ঘ সময় পর আদালত ক্যাবের পক্ষে রায় দেয়। গত বছরের ২৫ আগস্ট আদালত বিইআরসির চেয়ারম্যানকে ৩০ দিনের মধ্যে গণশুনানির মাধ্যমে এলপিজির দাম নির্ধারণের আদেশ দেন। নির্দেশ বাস্তবায়নের পর আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতেও বলা হয়। কিন্তু বিইআরসি গণশুনানি ও দাম নির্ধারণ না করেই গত ১৭ নভেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।

বিইআরসি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়া এবং অন্যান্য জটিলতার কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও এলপিজির দাম নির্ধারণ করতে পারেনি। আদালত বিইআরসির এই প্রতিবেদনে ক্ষুব্ধ হয় এবং বিইআরসির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন। এতে বিইআরসির টনক নড়ে। বিইআরসি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং আদালত অবমাননার রুল থেকে অব্যাহতি চান। এর কয়েক দিন পরেই বিইআরসি এলপিজির দাম নির্ধারণে গণশুনানির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

বিইআরসির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। গণশুনানির সময় নির্ধারণ করেছি। গণশুনানিতে সবার কথা শোনে আলোচনার মাধ্যমে ন্যায্য দাম নির্ধারণ করব।

তিনি বলেন, আগেও আমরা গণশুনানির চেষ্টা করেছি। অনেকের সঙ্গে কথাও বলেছিলাম। নিজেরা সভাও করেছি। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে কাজ হয়নি। আশা করছি, এবার সমস্যার সমাধান হবে।

এ বিষয়ে ক্যাব-এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম জানান, জ্বালানি বিভাগ এলপিজি লাইসেন্সিং নীতিমালা-২০১৭ প্রণয়ন করে। এটা বিইআরসি আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই সমস্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা রিট করি এবং হাইকোর্ট আদেশ দেন। এসব নিয়ে আমরা আরো কাজ করব। লাইসেন্সও কমিশনকে দিতে হবে। আইন প্রয়োগে কমিশনকে আরো শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App