×

পুরনো খবর

সৃষ্টি হোক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিবেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২১, ১০:৫৬ পিএম

সৃষ্টি হোক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিবেশ
সৃষ্টি হোক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিবেশ
অন্যান্য বছরের মতো এ বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে নতুন বই। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ বছর স্বাস্থ্যবিধি মেনে বই সরবরাহ করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বদলে বই তুলে দেয়া হচ্ছে অভিভাবকের হাতে। বছরের প্রথম দিন কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অভিভাবকদের হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দিলেও এ জন্য অন্য বছরের মতো বই উৎসবের আয়োজন করা হয়নি। তবে নতুন বই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করেছে তা নজিরবিহীন বললেও অত্যুক্তি হবে না। চলতি শিক্ষাবর্ষে ৪ কোটি ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ২২৬ ছাত্রছাত্রীর হাতে ৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬২ হাজার ৪১২টি বই বিনামূল্যে তুলে দিচ্ছে সরকার। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিক পর্যায়ের বই বিতরণ ১ জানুয়ারি শুরু হলেও মাধ্যমিক পর্যায়ের বইগুলো এবার ১ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাতে বিতরণ করা হবে। গত এপ্রিল থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে। গত আট-নয় মাসে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষাও নেয়া হয়নি। বছর শেষে সব শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে পরবর্তী শ্রেণিতে। বছরের প্রথম দিন বই বিতরণ শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তির হাওয়া বইছে। ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে বাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যায় সে ব্যাপারে সরকারের তরফে তাগিদ দেয়া হয়েছে। বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ সরকারের একটি উচ্চাভিলাসী কর্মসূচি। শিক্ষা বিস্তারে এ কর্মসূচি যে ফলপ্রসূ ভ‚মিকা রাখছে তা প্রশংসার দাবিদার। প্রতি বছরের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই পৌঁছালেও এবার কোনো আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে না। তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও যথাসময়ে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার। এবার সারাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রায় সাড়ে ৩৪ কোটি বই বিতরণ করা হবে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এবার উৎসব ছাড়াই শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের হাতে বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে দিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রতি বছর একই দিনে একসঙ্গে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেয়া হতো। এবার একদিনেই সব শিক্ষার্থী নতুন বই পাবে না। কয়েক দিন ধরে ভাগ ভাগ করে এই বই দেয়া হবে। সারাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রায় সাড়ে ৩৪ কোটি বই বিতরণ একটি বড় কর্মযজ্ঞ। নির্ধারিত সময়ে বই প্রকাশ ও বিতরণের এই ধারাবাহিকতাও বাংলাদেশের জন্য এক বড় অর্জন। বাংলাদেশে বিনামূল্যে প্রাথমিকের বই বিতরণ নিয়ে অব্যবস্থাপনার নানা অভিযোগ ছিল। মাধ্যমিকের বই হাতে পেতে অনেক সময় শিক্ষাপঞ্জির অর্ধেকটা সময় কেটে যেত। প্রিয় সন্তানের লেখাপড়ার স্বার্থে অভিভাবকরা বাজার থেকে চড়া দামে বই কিনতে বাধ্য হতেন। সেই দিন পেরিয়ে বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়া হয়েছে। প্রতি বছর গণভবনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বই উৎসব উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। স্কুলগুলোতে এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে বই। মাধ্যমিকের প্রতিটি শ্রেণির বই বিতরণের জন্য তিন দিন করে সময় দেয়া হবে। অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত চারটি শ্রেণিতে সপ্তাহে তিন দিন করে মোট ১২ দিনে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করতে হবে। আর প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করে অভিভাবকদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে। নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে দেয়ার কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস মহামারি পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত স্কুল খোলা হবে না। একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তিনি। দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। টিকা আসেনি বলে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও করোনা ভাইরাসের কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সবচেয়ে কষ্ট পাচ্ছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। প্রধানমন্ত্রী নিজেও সেটা উপলব্ধি করেন বলে জানিয়েছেন তার বক্তব্যে। মহামারির মধ্যে দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তা মোকাবিলা করার ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। করোনার প্রকোপ কমলে দ্রæততম সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, চাইল্ড কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, উত্তরা, ঢাকা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App