×

সারাদেশ

মেহেরপুরে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন, দাম না পেয়ে হতাশ কৃষক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২১, ১০:১৬ এএম

মেহেরপুরে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন, দাম না পেয়ে হতাশ কৃষক

ফাইল ছবি।

মেহেরপুরে নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। ঘরে ঘরে চলছে পেঁয়াজ তোলার উৎসব। খোলা বাজারেও দেখা মিলছে পেঁয়াজের। কিন্তু লাভের আশায় পেঁয়াজ চাষ করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন এলাকার চাষিরা। কাক্সিক্ষত দাম না পেয়ে বিঘাপ্রতি ২০ হাজার থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত লোকসানের মুখে পড়েছেন মেহেরপুরের চাষিরা। অনেক জমিতে পেঁয়াজ পরিপক্ব হলেও দাম না থাকায় তুলতে পারছেন না চাষিরা।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এ বছর মেহেরপুরে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুক‚ল থাকায় এ বছর পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে মেহেরপুরে। তবে দাম না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন এলাকার চাষিরা। সম্প্রতি ভারতীয় পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশ ও দেশের সব জায়গায় একসঙ্গে পেঁয়াজ তোলাতে দাম কমেছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে কাঁচা পেঁয়াজ পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা দরে। বিঘাপ্রতি ফড়িয়ারা দাম দিচ্ছে ২০- ২৫ হাজার টাকা। অথচ এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে ৩৫-৪০ হাজার টাকা।

সদর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের পেঁয়াজচাষি স্বপন বলেন, আমি এ বছর ১২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। পেঁয়াজ পরিপক্ব হয়েছে। আমি ২ বিঘা জমির পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করেছি। তাতে আমার লস হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। বাকি ১০ বিঘা জমিতে এখনো পেঁয়াজ রয়েছে। দাম কম থাকায় তুলতে পারছি না।

একই গ্রামের পেঁয়াজচাষি সেলিম, আব্দুল আজিজ, মাবুদ, ছপের আলী, ইলিয়াস, ছাদ্দামসহ বেশ কয়েকজন জানান, সোনাপুর গ্রামের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ লাভের আশায় পেঁয়াজ চাষ করেছেন। কোনো কোনো চাষি বিভিন্ন জায়গায় লোন করেছেন পেঁয়াজ চাষের জন্য। কথা ছিল পেঁয়াজ বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু টাকা পরিশোধ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠছে না চাষিদের। এমন অবস্থায় মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন এলাকার পেঁয়াজচাষিরা।

মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রকিবুজ্জামান বলেন, যারা আগাম পেঁয়াজ চাষ করেছেন তাদের লাভ হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও পেঁয়াজের দাম সন্তোষজনক ছিল। কিন্তু এখন একেবারেই দাম নেই। এই দামে পেঁয়াজ বিক্রি করলে খরচের অর্ধেক টাকাও ফেরত পাওয়া যাবে না।

মেহেরপুর কাস্টমস অফিসের এক কর্মকর্তা সোনাপুর গ্রামের পেয়াঁজচাষি কামাল উদ্দিন জানান, প্রতি বছর লাভের আশায় পেঁয়াজ চাষ করা হয়। এবারো করেছি। কিন্তু যে দাম পাওয়া যাচ্ছে তাতে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচই উঠবে না। আমাদের মেহেরপুরে যদি পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার থাকত তবে এই মৌসুমে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যেত। কিন্তু সে ব্যবস্থা মেহেরপুরে নেই। এমন অবস্থায় আমরা চাষিরা খুব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

এ বিষয়ে মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক স্বপন কুমার খাঁ বলেন, আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় চলতি মৌসুমে মেহেরপুরে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি থাকায় দাম একটু কম। এ ক্ষেত্রে চাষিরা ৩-৬ মাস ঘরোয়াভাবে বাঁশের আড়ায় ঝুলিয়ে রেখে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে পারেন। এছাড়া আমরা আশা করছি, আমাদের মেহেরপুরের কৃতী সন্তান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন মেহেরপুরে একটি সংরক্ষণাগার নির্মাণের ব্যবস্থা করবেন। তাহলে চাষিরা যথাসময়ে সেগুলো বিক্রি করে যথাযথ মূল্য পাবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App