×

রাজধানী

তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধে আইন সংশোধন প্রয়োজন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২১, ০৪:০৪ পিএম

তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধে আইন সংশোধন প্রয়োজন

ভার্চুয়াল এক আলোচনা সভা।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একশ মিটারের মধ্যে তামাক পণ্য বিক্রয় এবং এসব পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ হলেও তা মানা হচ্ছে না। এক জরিপে দেখা গেছে বিদ্যালয় ও খেলার মাঠের একশ গজের মধ্যে ৯০ শতাংশ বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় হয়। ৮২ শতাংশ বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য শিশুদের দৃষ্টি সীমানার মধ্যে প্রদর্শিত হয়। ৬৪ শতাংশ বিক্রয়কেন্দ্রে চকলেট, ক্যান্ডি, খেলনা, মিষ্টি বা অন্যান্য সামগ্রীর পাশে/সাথে তামাকজাত দ্র্রব্যের প্রদর্শন দেখা যায়। এই দ্রব্যগুলো এমনভাবে প্রদর্শিত হয় বিক্রয়কেন্দ্রের সামনের দিকে সোকেজের ভিতরে বা উপরে অন্যান্য আকর্ষনীয়ও দ্রব্যের সাথে বা পাশে স্তরে স্তরে সাজানো থাকে। আর তামাকজাত দ্রব্যের এধরনের প্রদর্শন শিশু-কিশোরদের তামাকজাত দ্রব্যের প্রতি আকৃষ্ট করছে প্রতিনিয়ত। আর তাই তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় কেন্দ্রে এসব পণ্য প্রদর্শন, এবং বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক পণ্যের খুচরা বিক্রয় নিষিদ্ধ করতে আইন সংশোধন জরুরি বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত ‘তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন’ শীর্ষক ভার্চুয়াল এক আলোচনা সভায় এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। তামাকজাতদ্রব্যের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একশ গজের মধ্যে তামাক কোম্পানীগুলো যে সকল কৌশলসমূহ অবলম্বন করছে সে সক্রান্ত ‘বিগ টোব্যাকো টাইনি টার্গেট বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি জরিপ পরিচালনা করে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন। সহযোগিতায় ছিল ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্। জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সহকারী পরিচালক মো. মোখলেছুর রহমান। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো: জিল্লুর রহমান চৌধূরী ও বাংলাদেশ ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, মো. মোস্তফিজুর রহমান। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন হেল্থ ও ওয়াস সেক্টর এর পরিচালক ইকবাল মাসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব রেজাউল করিম সরকার রবিন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ইপিডিমিলোজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধূরী, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিড্সের কর্মসূচী কর্মকর্তা আতাউর রহমান মাসুদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন, খুচরা বিক্রয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় ইত্যাদি বিষয়ে ষ্পষ্টভাবে কিছু বলা নেই। আর আইনের এই দূবলতার সুযোগ নিচ্ছে তামাক কোম্পানীগুলো এবং চালিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রপাগান্ডা। যেহেতু স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল আইনটি সংশোধনের কাজ শুরু করেছেন সেক্ষেত্রে আজকের আলোচ্য বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ সরকার জনস্বাস্থ্যের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এফসিটিসির আলোকে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ প্রণয়ন করে। ২০১৩ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনা হয় এবং এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়।

এই আইন ও বিধিমালার উল্লেখযোগ্য দিকগুলো হলো: পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ এবং পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ন্ত্রণ করা; অপ্রাপ্ত বয়স্কদের কাছে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা মুদ্রণ নিশ্চিত করা ইত্যাদি। এছাড়াও ২০১৬ সালে “সাউথ এশিয়ান স্পীকার্স সামিট”-এর সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App