×

সারাদেশ

চাকরি করছেন একজন, বেতন নিচ্ছেন অন্যজন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২১, ০৪:২২ পিএম

চাকরি করছেন একজন, বেতন নিচ্ছেন অন্যজন

চার বছর ধরে বৈধভাবে নিয়োগ পেয়ে কর্মরত আছেন নওগাঁ জেলার সাপাহার চৌধুরী চাঁন মোহাম্মদ মহিলা ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি স্তরের শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান। তার স্থলে বেতন নিচ্ছেন আব্দুল হালিম নামে স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি।

আব্দুল হালিম বলেন, আমার এমপিও র্কোটের (আদালত) মাধ্যমে হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।

মো. জিয়াউর রহমান বলেন, আমি এমপিওভুক্ত হতে পাচ্ছি না, এরকম প্রায় ১২০ টি আবেদন মাউশি ও বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কাছে জমা দিয়েছি। এসবের মধ্যে একটি আবেদন আমলে নিয়েছিলেন মাউশি মহাপরিচালক। তিনি রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা দপ্তরের উপ-পরিচালককে আব্দুল হালিমের নিয়োগ সরেজমিনে তদন্তের আদেশ দেন। কিন্তু উপ-পরিচালক এখন পর্যন্ত তদন্ত করেননি। জনৈক আব্দুল হালিমের করা রিটের আদেশে জনবল কাঠামো/আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করতে বলেন মহামান্য উচ্চ-আদালত। কিন্তু জনবল কাঠামোর বাইরে গিয়ে তাকে এমপিও প্রদান করেছেন কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, আমাকে এমপিওভুক্তি করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবেদন করেছিলাম। সচিবালয় থেকে এমপিওভুক্তিসহ ও বকেয়া বেতন প্রদানের বিষয়টি মাউশি মহাপরিচালককে যাচাই-বাচাই করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে মাউশির সহকারী পরিচালক আব্দুল কাদের লিখিতভাবে জানিয়েছেন ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর এনটিআরসিএ মাধ্যমে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেছি আমি। কিন্তু আব্দুল হালিমসহ দুইজন এমপিওভুক্ত থাকায় আমাকে এমপিওভুক্ত করার সুযোগ নাই। এইচএসসি স্তরে এমপিওভুক্ত পদে আব্দুল হালিমের কোনো নিয়োগ নাই, এই এমপিও ভোগী ব্যক্তি উক্ত প্রতিষ্ঠানের এইচএসসি স্তরের কেউই নন। সেটা তিনিও কেন যেন দেখতে পেলেন না!

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাকে সরকার নিয়োগ দিয়ে এখন পর্যন্ত কর্মরত রেখেছেন। সরকার করোনাকালীন প্রণোদনা দিয়েছেন। শিক্ষক হিসেবে ব্যানবেইনভুক্ত করেও নিয়েছেন। কিন্তু কোন অপরাধ বা অদৃশ্য শক্তির জন্য আমাকে বেতন দেয়া হচ্ছে না?

মাউশি অধিদপ্তরের নওগাঁ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন জানান, আব্দুল হালিমের নিয়োগ থাকুক বা না থাকুক তারই এমপিও থাকবে। তাকে কোনোভাবেই সরানো যাবে না।

অধ্যক্ষ আবু এরফান আলীর দেয়া প্রত্যয়নপত্র অনুযায়ী, ২০১৬ সাল থেকে জিয়াউর রহমান এইচএসসি পর্যায়ে কলেজ শাখায় পাঠদান করছেন এবং আব্দুল হালিম অনার্স শাখায় কর্মরত আছেন। এছাড়া আব্দুল হালিম অনার্সে নন-এমপিও শিক্ষক হওয়ায় প্রনোদনার জন্য করা অধ্যক্ষের সুপারিশে করোনাকালীন প্রণোদনাও পেয়েছেন।

অধ্যক্ষ বলেন, ২০১২ সালে আব্দুল হালিম সৃষ্ট পদে অনার্স শাখায় নিয়োগ পাওয়া একজন শিক্ষক। তাকে এমপিওভক্তির সুপারিশ করার জন্য কলেজ পরিচালনা কমিটি সিধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি অনার্সের শিক্ষক হওয়ায় মাউশি তার এমপিওভুক্তির সুপারিশ নীতিমালা অনুযায়ী বাতিল করেছিল। তাই পরে ২৫৮/২০১৫ নং অধিবেশনে আব্দুল হালিমের সুপারিশের বিষয়টি রদ রহিত করা হয়। তাকে কখনও এইচএসসি স্তরে নিয়োগ দেয়া হয়নি। তিনি কখনও এইচএসসি স্তরে যোগদানও করেননি।

এদিকে এনটিআরসিএ তাদের নিয়োগকৃত শিক্ষক এমপিও হতে কেন অসমর্থ প্রার্থীর স্বব্যাখ্যাতে কারণ দর্শানোর নোটিশ করেছেন কলেজ অধ্যক্ষকে।

তিনি জবাবে বলেছেন, শূন্য পদে নিয়োগকৃত এমপিও প্যাটানভুক্ত পদ বাদ দিয়ে জিয়াউর রহমান ৩য় পদ তথা এমপিওবিহীন পদে সমন্বয় চেয়ে উচ্চ-আদালতে আবেদন করেছেন। এর জন্য তাকে এমপিওভুক্ত করা হয়নি।

এ বিষয়ে জিয়াউর রহমান বলেন, আমার নিয়োগ প্রক্রিয়া বৈধ থাকায় উচ্চ-আদালত ক্ষতিপূরণ হিসেবে নওগাঁর সাপাহার চৌধুরী চাঁন মোহাম্মদ মহিলা ডিগ্রি কলেজ, বা নওগাঁ জেলার সমপর্যায়ের কলেজ অথবা একই কলেজে এমপিওভুক্তিসহ ডিগ্রি ৩য় পদে এমপিওভুক্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এমপিও বিহীন কোনো ৩য় পদে সমন্বয় চাওয়া হয়নি।

মাউশির রাজশাহী শাখার পরিচালক ড. কামাল হোসেন বলেন, অর্নাস থেকে এইচএসসি স্তরে সমন্বয় করার কোনো সুযোগ নেই। শিক্ষানীতিমালা অনুযায়ী কোনোভাবেই আব্দুল হালিমকে এমপিওভুক্ত করা যায় না। তার চলমান এমপিও কতদিন চালু থাকবে তা বলতে পারছি না।

এনটিআরসিএ ও কলেজ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান নিরাপরাধ। তার এমপিও অগ্রায়ণের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৬ সালের কলেজ কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও কলেজ অধ্যক্ষ আবু এরফান আলী শূন্যপদে নিয়োগ পাওয়া এইসএসসির প্রভাষক মো. জিয়াউর রহমানকে এমপিওভুক্তকরণের জন্য আবেদন করেন। যার ডকেট নম্বর

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App