×

সারাদেশ

বৃক্ষরোপণে জীববৈচিত্র্য ফিরে পাচ্ছে গারো পাহাড়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:৫৩ পিএম

বৃক্ষরোপণে জীববৈচিত্র্য ফিরে পাচ্ছে গারো পাহাড়

ছবি: প্রতিনিধি

দেশি প্রজাতির বৃক্ষরোপণে আবারও জীববৈচিত্র্য ফিরে পাচ্ছে শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়। এক সময় এ গারো পাহাড়ে দেখা যেতো বিভিন্ন প্রজাতির পশু পাখির অভয়ারণ্য। শোনা যেতো পশু পাখির কোলাহল। কিন্তু নির্বিচারে বৃক্ষ লুটপাটের কারণে কালের আবর্তে উজাড় হয়ে গেছে বন। ফলে গারো পাহাড়ের এসব প্রাণ ও জীববৈচিত্র্য বিলুপ্তি হয়ে গেছে। এখন আর গারো পাহাড়ে চোখে পরে না পশু পাখির অভয়ারণ্য। শোনা যায়, না মধুর সুরের পশু পাখির কোলাহল। জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে যে পরিমাণে বন থাকার কথা সে পরিমাণে বন নেই গারো পাহাড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, গত ৯০ দশকেও গারো পাহাড়ে শালগজারিসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পালা ছিল। ছিল নানান রঙ্গবেরঙ্গের পশু পাখির অভয়ারণ্য। কিন্তু দেশীয় প্রজাতির বৃক্ষ ধ্বংস করে গারো পাহাড়ে গড়ে তোলা হয় সামাজিক বনায়ন। বন অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিদেশী এ উডলট বাগানের গাছে বসতে দেখা যায় না কোন পশু পাখি। ফলে গারো পাহাড়ের পশু পাখির অভয়ারণ্য দিনে দিনে বিলুপ্তি হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এসব উডলট বাগান প্রচুর পরিমাণে পানি শোষণ করায় গারো পাহাড়ের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ও নিচে নেমে গেছে। এতে গারো পাহাড়ে দেখা দিয়েছে প্রকৃতির বিরুপ প্রভাব। শীত মৌসুমে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি ও গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড তাপ মাত্রায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রাণ্যবৈচিত্র্য বিলুপ্তি হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরনের লক্ষে আওয়ামী লীগ সরকার গারো পাহাড়ে দেশী প্রজাতির বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হাতে নেয়।

ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থে সুফল প্রকল্পের নামে টেকসই বনায়ন জীবিকায়ন প্রকল্পের আওতায় শুরু হয়েছে দেশীয় প্রজাতির বৃ্ক্ষরোপণ কর্মসুচি।

জানা গেছে, ২০১৯,২০ অর্থ বছরে শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুড়ি, ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়াও নালিতাবাড়ি উপজেলার মধুটিলা ফরেষ্ট রেঞ্জ এলাকায় প্রায় ১ হাজার হেক্টর বনের জমিতে রোপন করা হয়েছে দেশীয় প্রজাতির ফল মূল ও ওষুধী গাছের চারা। প্রায় ৫০ প্রজাতির চারা প্রতি হেক্টর জমিতে রোপন করা হয় ২ হাজার ৫ করে চারা। ইতোমধ্যেই চারাগুলো বেড়ে উঠতে শুরু করেছে। ফিরে আসতে শুরু হয়েছে গারো পাহাড়ের চিত্র।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক ড, প্রান্তোষ চন্দ্র রায় বলেন, সুফল টেকসই বনায়ন জীবিকায়ন বৃক্ষরোপণের উদ্যেশ্য হচ্ছে বনের বৃক্ষ আর নিধন হবে না। বৃক্ষের ফলগুলো এলাকাবাসী ও বনের পশু পাখির খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এতে গারো পাহাড়ে আবার ও জীববৈচিত্রের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে। ফিরে আসবে গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য্য ও প্রকৃতিক ভারসাম্য।

তিনি আরো বলেন, গাছ বড় হবার পর তা নিলামে বিক্রি করা হবে। কিন্তু কোন গাছ কাটা হবে না। ধনী দেশগুলো জলবায়ু তহবিলের অর্থে তা নিলামে ক্রয় করবে। মেয়াদোত্তীর্ণ হবার পর আবার ও নিলামে বিক্রি করা হবে। এভাবে এসব বৃক্ষ থেকে প্রতি বছর সরকারের ঘরে আসবে বিপুল পরিমাণের রাজস্ব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App