×

সম্পাদকীয়

গুচ্ছ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৫৩ পিএম

খবরে প্রকাশ, নতুন বছরে শিক্ষাজীবন স্বাভাবিক করতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে আগামী ফেব্রæয়ারি থেকে প্রথমে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরানো হচ্ছে। এই দুই পরীক্ষার সম্ভাব্য সময়ও ঠিক করা হয়েছে। উৎসব করে না হলেও ১ জানুয়ারি থেকে মধ্য জানুয়ারির মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হবে। এমন গুচ্ছ ঘোষণায় শিক্ষাজীবনের উদ্বেগের অবসান হলো। কিন্তু এসব পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। এ নিয়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রাখতে হবে। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। দফায় দফায় বাড়ানো হয় এই ছুটি। সবশেষ আরেক দফা বাড়িয়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ৫ কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাসূচি এলোমেলো হয়ে গেছে। এক দশক ধরে পূর্বনির্ধারিত শিক্ষাসূচি অনুযায়ীই চলছে শিক্ষাব্যবস্থা। এত বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ আগে কখনো হয়নি। এমনকি দুটি মহাযুদ্ধের সময়ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এই সংকটের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। দীর্ঘ এই ক্ষতি কীভাবে পোষানো হবে তার বিশ্লেষণ করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। এতে করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আশ্বস্ত হয়েছেন। এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল গত এপ্রিল মাসে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে তা হয়নি। এর মধ্যে গত ৭ অক্টোবর সরকার ঘোষণা দেয়, এ বছর সরাসরি এই পরীক্ষা হবে না। জেএসসি, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার গড় ফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল ঘোষণা করা হবে। তখন শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, চলতি মাসে এই ফল ঘোষণা করা হবে। কিন্তু এখন আইনি জটিলতার কারণে এ মাসে সেটি আর হচ্ছে না। ফল তৈরি আছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এই অধ্যাদেশ জারি হবে এবং সঙ্গে সঙ্গেই ফল প্রকাশ করা হবে। একটি বছর শিক্ষার্থীদের জীবনে মহামূল্যবান। একে নষ্ট করতে দেয়া সমীচীন নয়। শিক্ষার্থীরাও তা চাইবে না। আশার কথা, শিক্ষার্থীদের এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক শিক্ষার শ্রেণি কার্যক্রম সংসদ টেলিভিশনে প্রচার হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে দেশের সেরা শিক্ষকদের ক্লাস করতে পারছে। প্রতিষ্ঠানে ক্লাস মিস হলেও পিছিয়ে পড়বে না শিক্ষার্থীরা। প্রত্যেকটি বিষয়ের জন্য শিক্ষার্থীরা আলাদা খাতায় তারিখ অনুযায়ী পাঠদানকারী শিক্ষক প্রদত্ত বাড়ির কাজ সম্পন্ন করবে এবং স্কুল খোলার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে জমা দেবে। এই বাড়ির কাজের ওপর প্রাপ্ত নম্বর ধারাবাহিক মূল্যায়নের অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সর্বোপরি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সুরক্ষিত রেখেই শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও শিক্ষা কার্যক্রম আগের মতো চালানো সম্ভব হবে না। এ জন্য করোনাকালীন এবং করোনা-পরবর্তী সময়ের শিক্ষাব্যবস্থার নীতি ও কৌশল এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App