×

সারাদেশ

নৌকাকে হারাতে ধানের শীষের অস্তিত্ব সংকট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২০, ০৯:০২ পিএম

নৌকাকে হারাতে ধানের শীষের অস্তিত্ব সংকট
নৌকাকে হারাতে ধানের শীষের অস্তিত্ব সংকট
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে। জগ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো: আনোয়ার হাওলাদার বেসরকারি ভাবে জয়ী হয়েছেন। এর আগে একই উপজেলার মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পরাজিত হয়। স্থানীয় সরকার পরিষদের ওই নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বর্তমান সরকারের পায়রা সমুদ্র বন্দর, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র,আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র, বানৌজা শের-ই-বাংলা নৌ ঘাঁটি,সাবমেরিন ল্যান্ডিং ষ্টেশন,লাইট হাউস, পৌরসভাকে ঢেলে সাজানোসহ শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পরও ক্ষমতাসীন দলের অনাকাঙ্খিত পরাজয় দেখে বিস্মিত দেশের মানুষ। এদিকে কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফল জানার পর একাধিক ভোটারের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, কুয়াকাটায় বর্তমান সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের পরও আওয়ামী লীগের এ পরাজয়ের পেছনে দলীয় অভ্যন্তরীন কোন্দল, দলের তৃনমূলে কালো টাকা ছড়াছড়ি, দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন,একই দলের একাধিক নেতা কাউন্সিল প্রার্থী থাকা, দলের অভ্যন্তরে পরিবারতন্ত্র গঠন এবং জনপ্রতিনিধি থাকাকালীন সময়ে দুস্থদের বরাদ্দকৃত সরকারি সেবা সুবিধা নিয়ে স্বজনপ্রীতির কারণে নৌকার পরাজয় হয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এদিকে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চরমভাবে ভরাডুবি হয়েছে। কুয়াকাটা পৌরসভায় বিএনপির প্রায় ৫৫ভাগ ভোটার থাকলেও প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধ, দূর্বল সাংগঠনিক কাঠামোর কারণে বিএনপিকে ভোট না দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন কর্মী সমর্থকরা। বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতারা তাদের দলীয় প্রতীকে ভোট না দিয়ে নিজেদের সাংগঠনিক কাঠামোকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। বিএনপির নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মীরা বলেন, কালো টাকার মোহে নিজেদের গলা কেটে নৌকাকে হারাতে গিয়ে ধানের শীষের দীর্ঘদিনের ভোট ব্যাংক তলানিতে নিয়ে গেছে স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা। এর ফলে কুয়াকাটা পৌর এলাকার বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো দূর্বল হয়ে পরবে। নেতৃত্বে কোন্দল দেখা দিবে বলে মনে করেন মাঠ পর্যায়ের কর্মী সমর্থকরা। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ না করে জেলা ও স্থানীয় কতিপয় নেতাকর্মীরা কালো টাকার কাছে হেরে গেছে। নৌকার প্রচারণায় মাঠে থাকলেও নেপথ্যে নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন তারা। যার ফলে নৌকার পরপজয় হয়েছে। নৌকার ভরাডুবী নিয়ে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আঃ বারেক মোল্লা বলেন, আওয়ামী লীগের জেলা ও স্থানীয় পর্যায়ের কতিপয় নেতা এবং প্রশাসন অন্তরালে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় নৌকার পরাজয় হয়েছে। বিষয়টি আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডে জানানো হয়েছে। কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচনে ৯টি ভোট কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সাধারন ভোটাররা প্রথমবারের মত ইভিএম পদ্ধতিতে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করে। নির্বাচনে কোথাও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর জানা যায়নি। বেসরকারি প্রাপ্ত ফলাফলে জগ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো:আনোয়ার হাওলাদার ৩৩২৭ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আ: বারেক মোল্লা’র প্রাপ্ত ভোট ২৭৯২। ধানের শীষ ও হাতপাখা প্রতীকে ভোটারদের মাঝে তেমন কোন সাড়া মেলেনি। এ ছাড়া ১নং ওয়ার্ডে মো. হাবিবুর রহমান শরীফ, ২নং ওয়ার্ডে মো. তৈয়বুর রহমান, ৩নং ওয়ার্ডে মো. মনির শরীফ, ৪নং ওয়ার্ডে মো. ফজলুল হক খান, ৫নং ওয়ার্ডে মো. আবুল হোসেন ফরাজী, ৬নং ওয়ার্ডে মো. মজিবুর রহমান, ৭নং ওয়ার্ডে শহীদ দেওয়ান, ৮নং ওয়ার্ডে আশরাফ আলী সিকদার এবং ৯নং ওয়ার্ডে মো.ছাবের হোসেন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ১,২,৩নং ওয়ার্ডে ময়না বেগম,৪,৫,৬নং ওয়ার্ডে তাছলিমা বেগম এবং ৭,৮,৯নং ওয়ার্ডে হাসনে আরা বেগম সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App