×

মুক্তচিন্তা

ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধি কেন?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৪৩ পিএম

ভরা মৌসুমে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখীর খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসছে। করোনার এই দুঃসময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় চালের দাম বৃদ্ধি উদ্বেগজনক। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ধানের এ ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়ার কথা নয়। অথচ বাড়ছে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনই জোরালো উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। বাজার পরিস্থিতি নিয়ে খুচরা, পাইকারি ও মিলারদের একে অপরকে দোষারোপ করার একটা প্রবণতা আমরা লক্ষ করি। চালের বেলায়ও তা দেখছি। মিল মালিকরা গণমাধ্যমকে বলছেন, চালের সরবরাহ কমে যাওয়ার সুযোগ নিচ্ছে কিছু সুবিধাবাদী চক্র। যার কারণে ধীরগতিতে চালের দাম বাড়ার পরিবর্তে বেড়েছে দ্রুতগতিতে। টিসিবি বলছে, গত এক বছরের ব্যবধানে দেশের বাজারে মোটা চালের (স্বর্ণা) দাম বেড়েছে ৪৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বর বাজারে মোটা চালের কেজি ছিল মাত্র ৩০-৩৫ টাকা। আর এবার মোটা চালের কেজি ছিল ৪৬-৫০ টাকা। তাছাড়া এক বছরের ব্যবধানে মাঝারি মানের চাল যেমনÑ পাইজাম-লতা, বিআর২৮ চালের দাম বেড়েছে ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। গত বছর এসব চালের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৪০-৫০ টাকা। ইতোমধ্যে বোরোর বাম্পার ফলন হলেও চালের দাম বৃদ্ধি সত্যিই দুঃখজনক। শুধু তাই নয়, গত এক মাসে বাজারে ডাল, আটা, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বেড়েছে। এমনকি সরকারের অনুরোধও কানে তুলছেন না ব্যবসায়ীরা। পণ্য যথেষ্ট মজুত থাকলেও সরবরাহ নেই, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা অজুহাত তারা দাঁড় করাচ্ছেন। এতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েন নিম্নবিত্তের মানুষ এবং যাদের আয় সুনির্দিষ্ট। যাদের নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা নেই এবং যারা নির্দিষ্ট বেতন পান তারাই বেশি নাজুক অবস্থায় পড়েন। জানা যায়, বাংলাদেশে প্রতি বছর চাল, গম ও ভুট্টার উৎপাদন ৩ কোটি ৯০ লাখ টনেরও বেশি। সারাদেশে বছরে চালের চাহিদা ৩ কোটি টনের মতো। গত বোরো মৌসুমে চালের উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার টন। এখন চলছে আমনের ভরা মৌসুম। আমন মৌসুমে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৫৪ লাখ টন। বন্যার কারণে আমনের ফলন কিছুটা কম হলেও আশা করা হচ্ছে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। সুতরাং দেশে ধান-চালের কোনো সংকট হওয়ার কথা নয়। আমাদের দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য চাল; বিপুলসংখ্যক শ্রমজীবী মানুষকে প্রচুর পরিমাণে ভাত খেতে হয় শুধু শর্করার চাহিদা পূরণের জন্য নয়, তাদের আমিষেরও একটা বড় অংশ আসে ভাত থেকে। তাই চালের দাম যেন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্রয়সাধ্যের সীমা অতিক্রম না করে, সরকারকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হয়। কিন্তু সরকার দক্ষভাবে ব্যবসায়ীদের তদারক করতে পারছে কিনা সে প্রশ্ন সামনে আসছে। সরকারকে চালের বাজার স্বাভাবিক রাখায় বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করতেই হবে। ভাঙতে হবে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App