×

সারাদেশ

লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৪৮ এএম

লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষে

ছবি: প্রতিনিধি

প্রথম শ্রেণির হওয়া সত্তে¡ও কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি মানিকগঞ্জ পৌরসভায়। পৌর এলাকার সরু রাস্তাগুলোতে যানজট পৌরবাসীর নিত্যদিনের দুর্ভোগ। এছাড়া রয়েছে গ্যাস সংকট, বিশুদ্ধ পানির পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকাসহ নানা সমস্যা। ভোট এলেই প্রার্থীরা দেন প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি।

১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত মানিকগঞ্জ পৌরসভা প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয় ১৯৯৭ সালে। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভায় হয়নি কাক্সিক্ষত উন্নয়ন। অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট, যানজট, গ্যাস সংকট, বিশুদ্ধ পানির অভাবসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত পৌরবাসী। সেবা না বাড়লেও বেড়েছে করের বোঝা। নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের দেয়া প্রতিশ্রুতি পরবর্তী সময়ে থেকে যায় অন্ধকারেই। তবে এবারের নির্বাচনে বুঝে শুনে যোগ্য প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন ভোটাররা, এমনটাই বলছেন তারা। পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব করে আধুনিক পৌরসভা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. রমজান আলী ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতাউর রহমান আতা। এবারের পৌর নির্বাচনে ৫৬ হাজার ২০২ জন ভোটার ২৫টি ভোটকেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত করবেন নতুন নগর পিতা। মানিকগঞ্জ

পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী নাসির উদ্দিন আহমেদ ১০ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির ২ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির

একক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কাজেই নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই হবে। সদর উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় এবং দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে

বিএনপির মনোনীত প্রার্থী দলের জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমানসহ মেয়র পদে দলের ২ বিদ্রোহী প্রার্থী নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং জোবাইদা ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দেন। ভোটার তালিকায় ভুল তথ্যের কারণে জোবাইদা ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। আর ১০ ডিসেম্বর বিএনপির অপর বিদ্রোহী প্রার্থী নাসির উদ্দিন আহমেদ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এতে নির্বাচনে এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের (নৌকা প্রতীক) প্রার্থী মো. রমজান আলী ও বিএনপির প্রার্থী (ধানের শীষ) আতাউর রহমান আতার সঙ্গে ভোট লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. রমজান আলী এর আগে ৩ দফায় মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। তবে গতবারের মানিকগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী কামরুল হুদার কাছে পরাজিত হন। আর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান আতা বিগত দুদফায় সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। এই ২ প্রার্থীরই ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. রমজান আলী বলেন, আমি ৩৮ বছর জনপ্রতিনিধি ছিলাম। পৌরবাসীর কাছে আমার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা আছে। অসমাপ্ত কাজ শিশুপার্ক, পূর্ব দক্ষিণ অঞ্চলে মিনি স্টেডিয়াম এবং যানজট নিরসনে উড়াল সেতু নির্মাণ করব। তিনি আরো বলেন, নৌকার জয় হলে আমি বহু উন্নয়ন কাজের টাকা আনতে পারব। এই মানিকগঞ্জকে একটি মডেল শহর হিসেবে কাজ করে দেখাতে পারব।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী আতাউর রহমান আতা বলেন, সারা মানিকগঞ্জের রাস্তার পাশে পয়ঃপ্রণালী খুবই খারাপ। সেটাকে সংস্কার ও উন্নয়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করতে হবে। তাছাড়া মাঠের ব্যবস্থা করা দরকার, যাতে আমাদের ছেলেমেলেরা খেলাধুলায় আবদ্ধ থাকে। তারা মাদকাসক্তের দিকে না যায়। তিনি বলেন, পৌরবাসীর জন্য যা যা করার দরকার সেসব চিন্তা-ভাবনা আমার আছে। বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আজহারুল ইসলাম আরজু বলেন, মানিকগঞ্জ পৌরসভার কোনো মাস্টার প্ল্যান নেই, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন নেই। ইচ্ছেমতো যে যা পারছে তাই করছে। যে পরিমাণ নাগরিক সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল আমরা তা পাচ্ছি না। অথচ দিনকে দিন আমাদের করের বোঝা বেড়েই চলেছে।

এদিকে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৫০ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাদের মধ্যে ৩ জন প্রত্যাহার ও ১ জনের বাতিল হওয়ায় ৪৬ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া নারী কাউন্সিলর পদে ১৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাহিদ হোসেন বলেন, ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App