অর্ধশতাব্দী ফাঁসির অপেক্ষায় থেকে অবশেষে মুক্তি
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০৩:৩১ পিএম
ছবি- ইন্টারনেট
ফাঁসির ডাকের অপেক্ষায় থেকে অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে জাপানে। প্রায় ৫০ বছর আগে খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হন জাপানের ইয়াও হাকামাদা। অপেক্ষায় ছিলেন কখন ডাক পড়ে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়ানোর। ২০১৪ সালে মুক্তি মেলে তার। কিন্তু পুনরায় বিচারের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়ায় পুনরায় মৃত্যুদণ্ডের শঙ্কা জাগে। তবে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের পুনরায় সেই স্থগিতাদেশ বাতিল করে পুনরায় বিচারের আশ্বাস দিলে আশা জাগে হাকামাদার মনে। এর ফলে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দিন বন্দী থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হাকামাদা।
সিএনএন জানায়, ৮৪ বছর বয়সী হাকামাদা ছিলেন পেশাদার বক্সার। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১৯৬৬ সালে তিনি তার মনিব (বস), মনিবের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে খুন করেন। শিজুয়োকা প্রদেশে ঘরের মধ্যে চুরি দিয়ে হত্যা করা অবস্থায় চারজনের মরদেহ পাওয়া যায়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগও আনা হয়।
শুরুতে সব অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত করা হয় হাকামাদাকে। এরপর আদালতে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু বিচারে তার মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়। এরপর তার মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষা শুরু হয়। মৃত্যুদণ্ডের জন্য সবচেয়ে বেশি দিন অপেক্ষা করা আসামি হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নামও ওঠে তার।
এরপর ২০১৪ সালে কঠোর বিচার ব্যবস্থার দেশ জাপান এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। হাকামাদার বয়স ও বিপর্যস্ত মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে ওই বছর তাকে মুক্তি দেন শিজুয়োকা জেলা আদালত। কিন্তু চার বছর পর ২০১৮ সালে টোকিওর হাইকোর্ট তার পুনরায় বিচারের রায় স্থগিত করে দেন। তবে কী কারণে এটি করা হয়েছে তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি।
হাইকোর্টের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে ভয়ে ছিল তার পরিবার ও আইনজীবীরা। এরপর তারা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট টোকিওর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বাতিল করে পুনরায় বিচারের আশ্বাস দেন।
হাকামাদার আইনজীবী কিওমি সুনাগো বলেন, ‘আমাদের ভয় ছিল যেকোনও সময় হাকামাদাকে আবার গ্রেফতার করা হতে পারে এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতে পারে। তবে পুনরায় বিচারের আশ্বাস পেয়ে এখন নিশ্চিন্ত যে তিনি নিরাপদ।
হাকামাদা এখন তার বোন হিদেকো হাকামাদার সঙ্গে বসবাস করছেন। তার মানসিক অবস্থা খুব ভালো নয় বলে জানান তিনি। একটু একটু করে উন্নতি হলেও তিনি আর ককনই স্বাভাবিক হতে পারবেন না বলে গত মার্চে সিএনএনকে জানান তার বোন।