×

মুক্তচিন্তা

সময় শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৪৪ পিএম

পৌষ মাসের শুরু থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশে শীতের দাপট শুরু হয়েছে। গ্রামীণ জনপদে আক্ষরিক অর্থে মাঘ মাস আসে শীতের দাপট নিয়ে। কিন্তু এবার পৌষে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় শীত জেঁকে বসেছে। বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। হাড়কাঁপুনি শীতে বিশেষ করে গরিব মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তারা আক্রান্ত হচ্ছে সর্দি-কাশি-হাঁচি-জ্বর, হুপিংকাশিসহ শীতকালীন ডায়রিয়ায়। এখন থেকে স্থানীয় প্রশাসনসহ বিত্তবানদের শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজন মনে করছি। আবহাওয়া দপ্তর বলছে, কয়েকদিনে নগরীতে শীত আরো বাড়বে। উত্তরাঞ্চলে ধেয়ে আসছে শৈত্যপ্রবাহ। সেই শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে রাজধানীতেও বইবে হিমেল হাওয়া। ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে এর প্রভাব। পুরো মৌসুমে ৩টি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, রাতের তাপমাত্রা আরো এক থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস নামতে পারে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসে বিস্তীর্ণ এলাকায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করতে পারে। জানা যায়, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। এতে শীতের তীব্রতা আরো বেড়ে যাওয়ায় শীতবস্ত্রের অভাবে দুস্থ ও অসহায় মানুষ বিপাকে পড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে। শীত মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের প্রস্তুতি খুব সামান্য থাকে। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় দুস্থ মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যায়। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তাসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকায় ৪ শতাধিক চরের মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে তীব্র শীত কষ্টে ভুগছে। পার্বত্য জেলাগুলোসহ সিলেট বিভাগেও অনুভ‚ত হচ্ছে শীতের তাণ্ডব। আকস্মিক তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধিসহ শৈত্যপ্রবাহের জন্য অনেকাংশে দায়ী বৈশ্বিক আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তন। উপমহাদেশেও আবহাওয়ার ভাবগতি বিশেষ সুবিধার নয়। আফগানিস্তান, পাকিস্তান, হিমাচল প্রদেশসহ উত্তরখণ্ডে চলছে শীতের তাণ্ডব। হিন্দুকুশ ও হিমালয় পর্বতমালা থেকে ধেয়ে আসছে ঘন কুয়াশামালা, সুতীব্র হিমেল প্রবাহ। এ দেশেও শীতে যে কোনো দুর্যোগ-দৈবপাকে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষই বিপাকে পড়ে বেশি। তাদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র ও লেপ-কম্বল কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ, অন্যদিকে পুষ্টিহীনতার কারণে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও তাদের কম। ফলে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে তারাই আক্রান্ত হয় বেশি। শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো দরকার এখনই। শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের তেমন সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছে না, দু-চারজন ব্যতিক্রম ছাড়া। হতদরিদ্র মানুষকে শীতবস্ত্র সরবরাহ সরকারের সামর্থ্যরে বাইরে নয়, তবে দরকার সময়োচিত উদ্যোগ গ্রহণ এবং এর যথাযথ বাস্তবায়ন। দেশে অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারাও পারে শীতার্ত দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ওষুধ কোম্পানিগুলো ও চিকিৎসকদের সংগঠনগুলোও বিভিন্ন স্থানে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করে বাড়িয়ে দিতে পারে সহযোগিতার হাত। বিত্তবানদের যৎসামান্য ভালোবাসা ও সহানুভ‚তিই পারে শীতার্ত মানুষের হৃদয়ে উষ্ণতার পরশ বুলিয়ে দিতে। আসুন আমরা স্ব-স্ব অবস্থান থেকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App