×

খেলা

করোনায় ছন্দ হারায়নি ফুটবল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০৭:০০ পিএম

করোনায় ছন্দ হারায়নি ফুটবল

নেপালের বিপক্ষে জয়ের পর লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের উল্লাস।

করোনায় ছন্দ হারায়নি ফুটবল

পুরস্কার হাতে রোনালদো, লেভানদোস্কি ও লিওনেল মেসি।

করোনায় ছন্দ হারায়নি ফুটবল

পুরস্কার হাতে নিয়ে উচ্ছসিত লেভানদোস্কি ।

করোনায় ছন্দ হারায়নি ফুটবল

পুরস্কার হাতে লিওনেল মেসি।

দেখতে দেখতে প্রায় শেষ প্রান্তে চলে এসেছে ২০২০ সালটি। সপ্তাহ বাদে নতুন বছরকে বরণ করবে বিশ্ব। তবে এই ২০২০ সালটি করোনার কারণে অন্য বছরগুলোর তুলনায় ছিল আলাদা। অন্য অন্য বিষয়গুলোর মতো করোনার প্রভাব এসে পরেছিল ফুটবলের উপরও। গত কয়েক দশক ধরে যা দেখা যায়নি তা এ বছর দেখা গেছে। সারা বিশ্বে একযোগে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল ফুটবল। সব মিলিয়ে ২০২০ সালটি অন্যরকম গেছে ফুটবল অঙ্গনে। এই করোনার কারণে পিছিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি বড় ফুটবল প্রতিযোগিতা।

তবে লিগগুলো আবার চালু হয় এবং শেষ হয়। বিশ্বকাপ ফুটবলের বাঁছাইপর্বের ম্যাচগুলোও অনুষ্ঠিতহ হয়েছে। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস প্রথমে বাঁধা হয়ে আসলেও তার ধাক্কায় ছন্দ হারায়নি ফুটবল। যদিও কিছু কিছু পরিবর্তন এসেছে। যেমন কোন দেশ এখনো পূর্ণ দর্শকভর্তি স্টেডিয়ামে কোন ম্যাচ আয়োজন করেনি। স্টেডিয়ামের সিংহভাগ জায়গা ফাকা রেখেই দর্শক ফেরানো হয়েছে।

[caption id="attachment_257458" align="alignleft" width="569"] পুরস্কার হাতে রোনালদো, লেভানদোস্কি ও লিওনেল মেসি।[/caption]

করোনার কারণে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের মৌসুম বাতিল করে দেয়া হয়। ফলে প্রায় পুরো বছর ফুটবলাররা কোন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে খেলতে পারেননি। অবশেষে এই ডিসেম্বর মাসে ফেডারেশন কাপের মাধ্যমে ফের ফুটবলে ফিরেছেন ক্লাব পর্যায়ে খেলা ফুটবলাররা।

তবে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা খেলেছেন। তারা নেপালের বিপক্ষে ২টি প্রীতি ম্যাচ ও কাতারের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাঁছাইয়ের ম্যাচ খেলেছেন। নেপালের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে বাংলাদেশ ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ৩ ধাপ এগিয়েছিল। কিন্তু কাতারের বিপক্ষে হারের পর ফের অবনমন হয়। করোনার সময় যখন সবকিছু বন্ধ ছিল তখন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে গরীব মানুষদের কাছে খাবার বিতরণ করা হয়। তাদের এই কার্যক্রম প্রশংসা কুড়িয়েছিল ফিফার কাছ থেকে।

করোনা ইউরোপে এসে তা প্রভাব ফেলা শুরু করে ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে। আর তখনই দেশগুলোতে লকডাউন আরোপ করা হয়। লক ডাউনের ফলে ফুটবলও বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্ব ও ইউরোপের সেরা ৫টি লিগ লা লিগা, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, সিরি আ, বুন্দেসলিগা ও লিগ ওয়ানের সব খেলা বন্ধ হয়ে যায়। গত ১০০ বছরের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটেনি। দীর্ঘদিন বিরতিতে দিয়ে ফের খেলা মাঠে গড়ায়। এবং অন্য মৌসুমগুলোর চেয়ে বেশি সময় নিয়ে শেষ পর্যন্ত খেলা শেষ করা হয়। এরপর দেরিতে শুরু হয় ২০২০-২১ মৌসুমের খেলা। আর এই নতুন মৌসুমের মাধ্যমে ফেরানো হয় দর্শক। সবার প্রথমে দর্শক দেখা যায় ফ্রেঞ্চ লিগে। এরপর যথাক্রমে দর্শক ফেরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগেও।

[caption id="attachment_257459" align="alignright" width="549"] পুরস্কার হাতে নিয়ে উচ্ছসিত লেভানদোস্কি ।[/caption]

ইউরোপের ফুটবল ক্লাবগুলো হলো বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্লাব। দিন যত গড়ায় তাদের সম্পদ ততোই বাড়ে। তবে এই করোনার কারণে মূদ্রার উল্টাপিঠটিও দেখতে হয়েছে তাদের। খেলা বন্ধ হওয়ায় তাদের আয় বন্ধ হয়ে যায়। আর এ কারণে আর্থিক ক্ষতির মুখে পরে যায় বড় ক্লাবগুলো। আর এই আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ফুটবলারদের বেতন কাটতে হয় তাদের। বার্সেলোনার মতো ক্লাবের খেলোয়াড়রাও বাধ্য হয়ে বেতন কম নেন। যা ছিল চিন্তারও বাইরের একটি নজির। এ বছরই বার্সেলোনার সঙ্গে অধিনায়ক লিওনেল মেসির সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ৮-২ গোলে হারার পর ও মৌসুমে কোন শিরোপা না জেতার কারণে তিনি বার্সা ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে জোর করে রেখে দেয়া হয়।

এ বছর ফুটবলের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো লিভারপুলের প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়। এই ২০২০ সালে এসে দীর্ঘ ৩০ বছর পর লিগের শিরোপা জয় করতে সমর্থ হয় তারা। তাও ৭ ম্যাচ হাতে রেখে। প্রিমিয়ার লিগে তারা দীর্ঘদিন পর শিরোপা জয় করে রেকর্ড গড়ে। অপরদিকে লিগ ওয়ানে পিএসজিকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে আগেই মৌসুম বাতিল করে দেয়া হয়। অন্য বছরগুলোর মতো এ বছরও জুভেন্টাস, বায়ার্ন মিউনিখ চ্যাম্পিয়ন হয়। অপরদিকে লা লিগার শিরোপা জেতে রিয়াল মাদ্রিদ।

[caption id="attachment_257460" align="alignleft" width="453"] পুরস্কার হাতে লিওনেল মেসি।[/caption]

গত মৌসুমে ইউরোপে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন বায়ার্ন মিউনিখের রবার্ট লেভানদোস্কি। ফলে তার হাতেই ব্যালন ডি অরের পুরস্কারটা যেত। কিন্ত তার কপাল খারাপ করোনার কারণে এবার ব্যালন ডি অর বাতিল করে দেয়া হয়। তবে ফিফার দি বেস্ট অ্যাওয়ার্ড জিতে নেন তিনি। তবে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয় ভার্চুয়ালি। রোনালদো ও মেসির মধ্যে কেউ এবার ফিফার দি বেস্টের পুরস্কার না জিততে পারলেও মেসি পিচিচির পুরষ্কার ও রোনালদো গোল্ডেন ফুটের অ্যাওয়ার্ড জিতে নেন। অপরদিকে নেইমার এই মৌসুমে কোন ব্যক্তিগত পুরষ্কার জিততে পারেননি। কিন্তু বছরের শেষ দিকে এসে ঠিকই ইনজুরিতে পরে গেছেন।

এই বছর হওয়ার কথা ছিল জাতীয় দলগুলো নিয়ে ইউরোপের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা ইউরো। এখন ২০২১ সালে হবে ইউরো। ঠিক একই কারণে দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা কোপা আমেরিকার আসরও পিছিয়ে দিতে হয়। এটিও ইউরোর মত ২০২১ সালে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App