×

সারাদেশ

মেয়র পদে আগ্রহ নেই ভোটারদের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২০, ০৯:০৭ পিএম

মেয়র পদে আগ্রহ নেই ভোটারদের

বেতাগীতে নির্বাচনী। ছবি: প্রতিনিধি

আসন্ন প্রথম ধাপের বেতাগী পৌরসভার নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। নির্বাচনী মাঠে চলছে প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। তবে নির্বাচনের মূল আকর্ষণ মেয়র পদটি নিয়ে এখানকার ভোটারদের মাঝে খুব একটা আগ্রহ নেই। ঘুরে ফিরে সরকার দলের মনোনীত প্রার্থীই মেয়র হচ্ছেন। এখন নির্বাচনের মূল কেন্দ্রবিন্দু কাউন্সিলররাই। শহরের বিভিন্ন বাজার আর চায়ের দোকানগুলোতে নির্বাচনী আড্ডায় ভোটাররা কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। মেয়র পদটি নিয়ে নেই তেমন আলোচনা ।

জানা যায়, আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বেতাগী পৌরসভা নির্বাচন। এতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থীসহ তিন জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাছাড়া কাউন্সিলর পদে ২৭ জন এবং মহিলা কাউন্সিলর পদে আরও ৯ জনসহ মোট ৩৯ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে আছেন।

নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এবিএম গোলাম কবির নৌকা, বিএনপি’র দলীয় প্রার্থী হুমায়ূন কবির ধানের শীষ ও আওয়মী লীগের বিদ্রোহী উপজেলা যুবলীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মো. মাহামুদুল হাসান মহসিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পানির জগ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

১৯৯৯ সালে বেতাগী পৌরসভার গঠন করার পর এ পর্যন্ত ৪টি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মেয়র পদে কখনই পুনরার কেউ নির্বাচিত হয়ে আসতে পারেন নি। গেল কয়েকদিনে প্রায় শতাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা হয় নির্বাচনের বর্তমান পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে। তাঁদের অভিন্ন মতামত, এবার বরগুনার বেতাগী পৌরসভায় নির্বাচন বিগত নির্বাচনের তুলনায় ভিন্ন রূপ নিয়েছে।

এসব ভোটারের মতে, এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তিন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও পৌরসভার বর্তমান মেয়র এবিএম গোলাম কবির তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে থাকায় নির্বাচনী মাঠে অন্য দুই প্রার্থীর চেয়ে তিনি শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, সরকার দলীয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী নির্বাচিত হলে সরকারি দপ্তর থেকে কাজ এনে পৌরসভায় যে পরিমাণ কাজ করতে পারবেন তা অন্য দল থেকে নির্বাচিত মেয়র প্রার্থীরা করতে পারবেন না।

বিএনপি প্রার্থী সম্পর্কে একাধিক আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, বিএনপির দলীয় প্রার্থী হুমায়ূন কবির বছরের বেশিরভাগ সময় ঢাকায় থাকেন। তৃণমূলের সঙ্গে তার খুব একটা যোগাযোগ নেই। তাছাড়া বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জন্যও তিনি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল। তাই এবারের নির্বাচনী মাঠে তিনি খুব একটা শক্ত অবস্থানে না থাকায় তার প্রতি ভোটারদের তেমন আগ্রহ নেই। এমনটাই অভিমত তাদের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নির্বাচনের শুরুতে মাঠে ছিল না বিএনপি। প্রচার প্রচারণা, মাইকিং এমনকি পোস্টার ও ব্যানার পর্যন্ত তারা টাঙিয়েছে নির্বাচনের শেষ সময়ে এসে। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে শুরু থেকেই তাদের প্রচার-প্রচারণায় বাধার অভিযোগ করে আসছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী যুবলীগ নেতা মাহামুদুল হাসান মহসিনের দলীয় অবস্থানও নড়বড়ে। বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী হওয়ায় ১৮ ডিসেম্বর তাকে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিস্কার করা হয়। তাছাড়া ৩ ডিসেম্বর মনোনয়ন পত্র বাছাইকালে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটানিং কর্মকর্তা। পরে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করে ১৫ ডিসেম্বর প্রার্থিতা ফিরে পান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পানির জগ প্রতীক পেলেও তার আনুষ্ঠানিক প্রচারণা এখনও চোখে পরেনি। এমনকি প্রচার প্রচারণার জন্য আর মাত্র এক সপ্তাহের কম সময় থাকলেও এখনও তিনি পৌরশহরে ব্যানার পোস্টার পর্যন্ত টাঙাননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের এক ভোটার জানান, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও পৌরসভার বর্তমান মেয়র এবিএম গোলাম কবির নির্বাচনী মাঠে ভালো অবস্থানে থাকায় ভোটাররা অন্য প্রার্থীদের দিকে ঝুঁকছেন না। বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনী মাঠ গরম করতে না পারায় ভোটারদের কাছে নির্বাচনে মেয়র পদের ফলাফল কিছুটা অনুমেয়। তাই ভোটাররা মেয়র প্রার্থীর চেয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী বিশ্লেষণে বেশি আগ্রহী।

নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও বেতাগী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী সহিদুল ইসলাম জানান, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এখনো পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App