আ. লীগের মনোনয়ন লড়াইয়ে পিন্টু-সোহেল
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০, ০৬:০৪ পিএম
আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু ও সহিদ উল্যাহ খান সোহেল। ছবি: প্রতিনিধি
পৌরসভা নির্বাচনের ইতোমধ্যে তৃতীয় ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এরপরই হয়তো প্রথম শ্রেণীর নোয়াখালী পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করা হবে, এমন সম্ভাবনাকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক মনোনয়ন পেতে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
সম্ভাব্য প্রার্থীরা জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে দলের উচ্চ পর্যায়ে লবিংও শুরু করেছেন। জেলা শহরের পৌর এলাকায় পোস্টার-ব্যানার টানিয়ে প্রার্থীরা তাদের প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন। মূলত এ জেলার রাজনীতি পরিচালিত হয় জেলা সদরের নোয়াখালী পৌরসভা থেকে। এ কারণেই নোয়াখালীর পৌরসভার মেয়র পদটি রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে এবারের নির্বাচনে তৃণমূল থেকে দলীয় হাইকমান্ড পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে রয়েছেন নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল।
পিন্টু-সোহেল ছাড়াও প্রচার-প্রচারণায় প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন সাবেক ছাত্রনেতা লুৎফুল হায়দার লেনিন, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম মন্টু, মিথুন ভট্ট, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ইমন ভট্ট, যুগ্ম আহ্বায়ক একরামুল হক বিপ্লব, বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল হোসেন কচির ছেলে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ফাহাদ ইউছুফ হোসেন প্রমিত।
আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন, আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি করতে গিয়ে বহুবার গ্রেপ্তার, পুলিশি নির্যাতনের শিকার ও কারাবরণ করেছেন। ১৯৮১-৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি। ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামায়াত কর্র্তৃক বারবার নির্যাতিত হয়েছেন। ২০০৭-০৮ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন পিন্টু। আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত, ত্যাগী ও নির্যাতিত এ নেতাকে দলের দূ:সময়ে রাজপথে স্বোচ্ছার দেখা গেছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকরা যে কোন দূ:সময়ে তাকে পাশে পেয়েছেন। কিন্তু দলের প্রতি তাঁর ত্যাগের কোন মূল্যায়ন এখন পর্যন্ত পাননি পিন্টু। নেতাকর্মীদের ভাষ্যমতে, কর্মীবান্ধব ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা আবদুল ওয়াদুদ পিন্টুকে রাজনৈতিকভাবে এবার মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
দলের অপর একটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা বলেন, বর্তমান মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে গিয়ে বহুবার বিএনপি-জামায়াতের হাতে হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়ে পৌরবাসীকে দেওয়ার তাঁর সকল প্রতিশ্রুতি তিনি বাস্তবায়ন করেছেন। প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হিসেবে এখানে এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে। অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ ধারাবাহিকভাবে শেষ করতে এবারও সহিদ উল্যাহ খান সোহেলকে দলীয় মনোনয়নে মূল্যায়ন করা উচিৎ বলেন মন্তব্য করেন তারা।
মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানান দিয়ে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ চলায় দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখাতে গিয়ে নিজে বঞ্চিত হয়েছি। তারপরও দলের হাইকমান্ডের নেতৃবৃন্দের প্রতি আস্থা রেখে কাজ করেছি। জীবনের শেষ সময়ে এসে এবার পৌরসভায় মেয়র পদে নৌকা প্রতীক মনোনয়ন চাইবো। দল মূল্যায়ন করলে এখানে বিপুল ভোটে নৌকার জয় সুনিশ্চিত করে দলকে উপহার দিবো।
বর্তমান মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, গত নির্বাচনে দলের প্রার্থী হয়ে পৌরবাসীকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি। এতে দলের সম্মান অটুট রয়েছে। তিনি বলেন, প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হিসেবে নোয়াখালী পৌরসভায় উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। পৌরবাসী পৌরসভার প্রতি আস্থাশীল। আশা করছি, আমাকে পূণরায় দলীয় মনোনয়ন দিয়ে পৌরবাসী এবং দলীয় নেতাকর্মীর প্রত্যাশা পূরণ করবেন দলীয় হাইকমান্ড।
এদিকে গত জেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারুনুর রশিদ আজাদ আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে এখন পর্যন্ত নিরব রয়েছেন। বিএনপি থেকে অন্য কোন প্রার্থীরও প্রচার-প্রচারণা দেখা যাচ্ছে না।