শস্যভাণ্ডার খ্যাত ডুমুরিয়ার উৎপাদিত শাক-সবজি বিদেশে রপ্তানি শুরু হবে শিগগিরই। পটল, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, লাউ, মিষ্টি কুমডা, চাল কুমড়া, লাল শিম, শসা, পেঁপে, ধুন্দুল, কাঁচা কলা, কচুরমুখী ও লতি, কাঁকরোল, বেগুনসহ অন্তত ১৫টি সবজি রপ্তানি হবে বিদেশে। কৃষকদের কাছ থেকে এসব সবজি সংগ্রহ করে স্থানীয় ভিলেজ সুপার মার্কেটে প্রক্রিয়াজাত করার পর প্যাকিং হবে রপ্তানির উদ্দেশ্যে।

ইউরোপিয়ান দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি,মধ্যপ্রাচ্যের কাতার, কুয়েত, সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশে রপ্তানি হবে। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি স্থানীয় কৃষি অর্থনীতির সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে।

ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেটের সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার কমডিটি ম্যানেজার (ফল ও সবজি) ড. নাজমুন নাহার জানান, ২০১৮ সাল থেকে যশোরের সবজি রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। এখন খুলনার ডুমুরিয়া থেকেও সবজি রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে কবে থেকে শুরু হচ্ছে তা নির্দ্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি তিনি।

নাজমুন নাহার জানান, নেদারল্যান্ডের অর্থায়নে সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার সার্বিক সহযোগিতায় উত্তরণ সহায়ক হিসেবে ‘সফল’ প্রকল্পে কাজ করছেন খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, নড়াইল, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর এক লাখ ৬ হাজার কৃষক। এর মধ্যে ডুমুরিয়ার ৩ হাজার ৮৬ জন কৃষকের কাছ থেকে সবজি সংগ্রহ করা হবে। ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বিএফভিএপিইএ, এফবিসিসিআই’র শীর্ষ নেতারা ডুমুরিয়ার কয়েকটি সবজি ক্ষেত সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। তারা কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেছেন।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ডুমুরিয়াকে খুলনার শস্যভাণ্ডার বলা হয়। এ অঞ্চলের শাক-সবজি, ফলমূল ও খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশজুড়ে খ্যাতি রয়েছে। বিষমুক্ত সবজি রপ্তানির সামার্থ্য রয়েছে এ অঞ্চলের কৃষকদের। ডুমুরিয়ার কৃষকদের উৎপাদিত সবজি রপ্তানির সুযোগ পেলে খুলনা অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। কৃষি অর্থনীতি ব্যাপক সমৃদ্ধি ঘটবে।

বিএফভিএপিইএর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনসুর আলী জানান, কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য সংগ্রহ করে রপ্তানি করছেন প্রায় দুই শত রপ্তানিকারক। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এখান থেকে শাকসবজি রপ্তানি শুরু হবে।

এফবিসিসিআই’র পরিচালক এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, খুলনার ডুমুরিয়ার কৃষকদের উৎপাদিত সবজি দেখেছি। এসব সবজি রপ্তানিযোগ্য। কৃষক এবং কৃষি বিভাগের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা আমাদের চাহিদা অনুযায়ী, সবজি সরবরাহ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন। শিগগিরই এখান থেকে সবজি রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।