×

মুক্তচিন্তা

ফাদার টিমের ডিসেম্বর ’৭১

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৩৩ পিএম

উনিশ একাত্তরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের গোলাবারুদ ব্যবহার করা হয়েছে বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলন দমনে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের ক্ল্যাসিফাইড দলিলপত্র যখন ডি-ক্ল্যাসিফাইড হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন প্রতিহত করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ক্রমাগত যে ষড়যন্ত্র করে গেছে এবং এমনকি ১৫ ডিসেম্বরও অবস্থান থেকে সরে আসেনি সে কথা জানা সবারই। আবার সরকারের ভেতর থেকেই একাত্তরের বাংলাদেশে নিপীড়নের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছেন আর্চাড ব্লাড। সেই পঞ্চাশের দশকের শুরুতে মিশনারি হিসেবে কাজ করতে এসে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে রয়ে যাওয়া ফাদার রিচার্ড উইলিয়াম টিম জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মার্কিন সরকারকে বাস্তব অবস্থা অনুধাবন করার জন্য চিঠি দিয়েছেন একের পর এক। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেছেন, যোদ্ধারাও তাকে সমীহ করতেন। একাত্তরের ডিসেম্বরের যুদ্ধের দিনগুলোর কথা উঠে এসেছে তার কথায়। সে কথাগুলো সমন্বিত ও অনূদিত হলো। উল্লেখ্য, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অবদানের জন্য ফাদার টিমকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশের বন্ধু ফাদার টিম এ বছর ১১ সেপ্টেম্বর ৯৭ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যে হলিক্রস হাউসে মৃত্যুবরণ করেন। যখন ঢাকার আকাশে বোমারু বিমান একটার পর একটা বোমা নিক্ষেপ করছে ফাদার টিম খোলা আকাশের নিচে ছুটছেন তেজগাঁওয়ের এতিম শিশুদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করতে। স্থানীয় খবরের কাগজে সীমান্তে ভারতীয় প্ররোচনার যেসব খবর ছাপা হচ্ছে তাতে মনে হয় কয়েকদিনের মধ্যে ভারত পাকিস্তানের সীমান্ত ডিঙ্গাবে। কিন্তু একাত্তরের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানই প্রথম ভারতে আক্রমণ চালায়। আমি যুদ্ধের কথা বাস্তবে প্রথম জানতে পারি- ৬ ডিসেম্বর রাতের বেলায় যখন আকাশে বিস্ফোরণের শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়। ভারতীয় বোমারু বিমান ঢাকা এয়ারপোর্টের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে আর প্রতিরক্ষার জন্য পাকিস্তানের যা-ই আছে ওপরে নিক্ষেপ করছে। পরদিন সকালে আমাদের ম্যাথিস হাউসের (নটর ডেম কলেজ ক্যাম্পাসে) ছাদ থেকে আকাশে যুদ্ধ বিমানের ডগ ফাইট দেখলাম। স্পষ্টত ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ থেকে নিক্ষেপ করা একটি রকেট কলেজ থেকে অনতিদূরে মধ্য আকাশে বিস্ফোরিত হলো। দুপুরের দিকেই তেজগাঁওয়ের বটমলি হোম অর্ফানেজ থেকে একটি ফোন পেলাম যে এয়ারপোর্টের কাছে তাদের জায়গার ওপর ছয়টি শেল পড়েছে। তারা ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় আছে, আমরা শিশুদের কোনো নিরাপদ স্থানে নিতে পারব কিনা জানতে চাচ্ছে। আমি কেয়ারের ডিরেক্টর হেনরি শেলজকে ফোন করলে তিনি সাহায্য করতে রাজি হলেন, আমি কলেজের মাইক্রোবাসে তেজগাঁওয়ের এতিমখানার দিকে রওনা হলাম। এখানকার সোনারগাঁও হোটেলের কাছে যেখানে এয়ারপোর্ট রোডে রেললাইন একটা অন্যটাকে অতিক্রম করেছে, সৈন্যরা রাস্তার অপর প্রান্ত থেকে আমার দিকে হাত নাড়ল এবং সরাসরি আমাদের মাথার ওপর দিয়ে যাওয়া ভারতীয় যুদ্ধজাহাজে গুলি করতে শুরু করল- এয়ারপোর্টে রকেট নিক্ষেপ করার জন্য অনেক নিচু দিয়ে এগুলো উড়ে যাচ্ছে। সৌভাগ্যবশত ভারতীয় জাহাজ তখন গোলাবর্ষণ শুরু করেনি। আক্রমণের পর আমি এতিমখানায় গিয়ে পৌঁছি। সেখানে গিয়ে হেনরিকে পাই, ট্রাকে শিশুদের ওঠানো হয়েছে। আমরা এতিম ছেলেদের নটর ডেম কলেজে এবং মেয়েদের লক্ষ্মীবাজারে সেইন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার কমভেন্টে পাঠাচ্ছি। এয়ারপোর্ট সম্পূর্ণভাবে অকেজো এবং পাকিস্তান এয়ারফোর্স মাটিতে শুইয়ে দেয়ার পরও ঢাকাকে কোনোভাবে নিরাপদ মনে করার কারণ নেই। আমরা একজনকে নাম দিলাম ম্যাড বোম্বার- পাগলা বোমারু। রাতের আকাশে ওড়া এই বোমারু বিমান একটার পর একটা বোমা ফেলতে ফেলতে, বোমা রাখার প্লাইউডের কাঠের ফ্রেমটিও এক সময় ছেড়ে দিল, সঙ্গে থাকল বোমা বেঁধে রাখার স্ট্র্যাপ। এক রাতে কারওয়ানবাজারে পুরনো জরাজীর্ণ এতিমখানায় বোমা পড়ল, পাকিস্তান এ জন্য ভারতকে দোষারোপ করল এবং এতে ২০০ এতিমের মৃত্যু ঘটেছে বলে দাবি করল। (ফাদার টিম সম্ভবত তেজগাঁও রেল ক্রসিংয়ের কাছের এতিমখানার কথা বলছেন, বোমা বর্ষিত হওয়ার এক সপ্তাহ পরে ধ্বংসাবশেষ দেখার সুযোগ নিবন্ধকার পেয়েছিলেন। কাছাকাছি কোথাও থাকতেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক মনিকা আলী, তখন তার বয়স চার বছর পেরিয়েছে, তার শৈশব স্মৃতিতে এতিমখানার বোমা বর্ষণের কথা উঠে এসেছে।) একটি বোমার খোলস পড়েছে হলিক্রস কলেজের মাঠে, আর একটা পড়েছে ইউএনএপরো (ইউনাইটেড নেশনস ইস্ট পাকিস্তান রিলিফ অপারেশনস) সদর দপ্তরের সামনে। জাতিসংঘ অফিস মনে করল বোমার আক্রমণের পরবর্তী টার্গেট হতে পারে তাদের অফিস। তারা তাদের সব ধরনের বেতার স্থাপনা নিয়ে নটর ডেম কলেজে চলে আসতে চায়- সম্মতি দেয়ার জন্য আমাকেই অনুরোধ করল। তারা তাই করল, তাদের ৪৪ জনের সবাই নটর ডেম কলেজে এসে হাজির হলো। কলেজ হয়ে উঠল ইউ-এন রেডক্রস প্রোটেক্টেড জোন। ফরাসি সিভিল সার্ভিস থেকে ধার করে আনা এবং জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ইউএনএপরো প্রধান পল-মার্ক হেনরি ২ ডিসেম্বর ঢাকা এসে আটকা পড়ে গেছেন। তিনিও এসে আশ্রয় নিলেন আমাদের ম্যাথিস হাউসে। প্রত্যেক সন্ধ্যায় রাতের খাবারের আগে আমি আর পল-মার্ক ফাদারদের বিনোদন কক্ষে বসতাম অন্তত দুবার ম্যাক্সের কনসার্ট শুনে (ম্যাক্স ব্রুচ জার্মান সুরকার, জন্ম ১৮৩৪ মৃত্যু ১৯২০), সূর্যের নিচে বলার মতো যা কিছু আছে দুনিয়ার সব আলাপ করতাম। তারপর ডিনার, সঙ্গে ফ্রেঞ্চওয়াইন। আমরা এক রুমে তিনজন থাকতাম, এক-দুজন বিছানায় অন্যজন মেঝেতে। জাতিসংঘের লোকদের সামাজিকীকরণের জন্য রাত হচ্ছে উত্তম সময়- অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর মানে পোকার খেলায় ও মদ্যপানে অংশ নেয়া। যুদ্ধ শেষে তাদের শূন্য বোতল বিক্রি করে আমাদের কিছু আয় হয়েছে। যুদ্ধকালে পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থানরত বিদেশিদের স্বদেশে বা নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করতে জাতিসংঘের ঢাকা সদর দপ্তরে যে ক’টা বৈঠক হয়েছে পল-মার্ক আমাকে তার ব্যক্তিগত উপদেষ্টা হিসেবে তার পাশে বসাতেন। আমরা বিবেচনা করলাম নৌযানে বঙ্গোপসাগর থেকে বেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহরে গিয়ে উঠব। তার আগে ঢাকা থেকে দলবেঁধে বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি কোনো কেন্দ্রে গিয়ে জমায়েত হব। পল-মার্কের পরিকল্পনাগুলো ছিল বেশ কল্পনাপ্রবণ এবং ব্যয়বহুল- এতে ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার খুব বিরক্ত হলেন এবং তৃতীয় বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করার সময় ঘোষণা দিলেন বিদেশিদের সিঙ্গাপুর পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার জন্য রয়াল এয়ারফোর্সের চারটি উড়োজাহাজ আসছে। (১৯৭৩ সালে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনাস ইন বাংলাদেশ গ্রন্থে টম অলিভার এই ফাদার রিচার্ড উইলিয়াম টিমকে ‘ইউএনএপরো’-র রক্ষাকর্তা বলে আখ্যায়িত করেছেন। অবশ্য ফাদার টিম নিজে বলছেন, জাতিসংঘের সবাইকে নটর ডেম কলেজে জায়গা দেয়া ছাড়া তিনি তেমন কিছু করেননি। যুদ্ধকালে এটাই বা কম কি সে।) ৬ ও ৭ ডিসেম্বর সেসনা- ১৩০ কানাডিয়ান উড়োজাহাজে ঢাকা ছাড়ার উদ্যোগ ভেস্তে যায়। জাতিসংঘের পুরো দল এ উদ্দেশ্যে এয়ারপোর্টে গিয়ে জমায়েত হয়। কিন্তু সফল হয়নি। পল-মার্ক তাদের সব নগদ অর্থ, পরিমাণে অনেক, আমার হাতে দিয়ে বললেন, যদি জাতিসংঘে আর ফিরে আসা না হয় তাহলে যেন ত্রাণকাজে ব্যবহার করি। এরপর কবে উদ্ধারকারী জাহাজ আসবে তা অনিশ্চিত। শেরাটন হোটেলে (তখন ইন্টারকন্টিনেন্টাল, পুনরায় এখন ইন্টারকন্টিনেন্টাল) ১২ ডিসেম্বর রবিবার সকালের ক্যাথলিক প্রার্থনা সভায় এলাম। দ্রুত সরিয়ে নেয়ার সুবিধের জন্য বিদেশি সবাইকে এখানেই ঠাঁই দেয়া হয়েছে। ৯টার কিঞ্চিৎ আগে উড়োজাহাজের শব্দে আমরা জানালার দিকে ছুটে যাই এবং রয়াল এয়ারফোর্সের সেসনা-১৩০ উড়োজাহাজের অবতরণ প্রত্যক্ষ করি। তখন ধুলোর মেঘ উড়তে থাকে, প্রথমে মনে হলো উড়োজাহাজের কোনো ক্ষতি হয়নি তো? আসলে বিধ্বস্ত এয়ারপোর্টের অবতরণক্ষেত্র তো পরিষ্কার করা হয়নি। এমনকি শেষ মুহূর্তে সাংবাদিকরাও রানওয়েতে বিস্ফোরণে ছিটকে পড়া কংক্রিটের খণ্ড পরিষ্কার করেছেন। যখন প্রত্যাগমনের জন্য প্রস্তুত সবাই এয়ারপোর্টের দিকে ছুটলেন, আমি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের পিটার কানকে বললাম, বেদিতে কানকে বসিয়ে রেখে সবাই যখন চলে যায় তখন সে কেমন অনুভব করে। পিটার কান তার প্রতিবেদন ঢাকা ডায়েরিতে তা উল্লেখ করেছেন। পিটার পরের বছর তার বাংলাদেশ প্রতিবেদনের জন্য পুলিৎজার পান। পিটার কান পরে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এশিয়ান এডিশনের সম্পাদক হন। দুজন ব্রিটিশ ভদ্রলোক লটবহরসহ আসা রুশ কূটনৈতিক ও নাগরিকদের উদ্দেশে দরজায় দাঁড়িয়ে বললেন, ‘নারী এবং বন্ধুসুলভ দেশ সবার আগে।’ কিন্তু রুশদের সঙ্গে রাজ্যের সব জিনিসপত্র, এগুলো তারা নেবেই, সুতরাং তাদের বাদ দিতে হলো। দেশ স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পর এই ফেলে যাওয়ার ঘটনায় অর্জিত পয়েন্ট কাজে লাগিয়ে সরকারের সঙ্গে সম্পর্কটা আরো ভালো করে ফেলব। রানওয়ে ছোট হয়ে আসার পরও উড়োজাহাজ ৩৮৭ জনকে নিয়ে আকাশে উড়ল। তাড়াতাড়ি এয়ারপোর্টে আসার জন্য যারা তাদের নিজেদের গাড়ি চালিয়ে এসেছিলেন, তাদের গাড়িগুলো এয়ারপোর্টে পরিত্যক্ত পড়ে রইল। এমন গাড়ি কয়েক ডজন হবে। জাতিসংঘে কর্মরত ৩৬ জন ঢাকা ছেড়ে গেলেন না, শেষ দেখার জন্য রয়ে গেলেন। উত্তেজনা, উদ্বেগ ও ক্লান্তি উপশম করার জন্য বিকালবেলা ভলিবল আর বাস্কেটবল খেলা চলল। কিন্তু রবিবারে খেলার সময় একটি শেল আমাদের মাথার ওপর শিস দিয়ে কাছাকাছি ফকিরাপুল বাজারে গিয়ে পড়ল। কিছু সময় পর আমরা ছাদের ওপর থেকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর পিলখানার ওপর রকেট নিক্ষেপের উত্তেজনার দৃশ্যের সাক্ষী হয়ে রইলাম। আমি নিজে গাড়ি চালিয়ে নটর ডেম কলেজের গেটে পৌঁছি, মাথার ওপর দিয়ে যথেষ্ট নিচুতে উড়ে গভর্নর হাউসের ওপর রকেট আক্রমণ চালাচ্ছে। আমার জন্য গেট খুলে দেয়ার কেউ নেই, সবাই তো ট্রেঞ্চের ভেতর। সেদিন সকালে হেনরি সেলজ ২৫ মার্চ রাতে খুন হওয়া ডক্টর গুহ ঠাকুরতার (জোতির্ময়) স্ত্রী ও কন্যা মেঘনাকে নিয়ে এলেন কলেজে (মেঘনা ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছেন এবং ইংল্যান্ড থেকে পিএইচডি করেছেন)। হেনরি তাদের ধানমন্ডিতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। এয়ারপোর্ট আক্রমণের কারণে তারা সন্ত্রস্ত। সুতরাং তারা নিরাপদ অবস্থানে যেতে চায়। তারা অবস্থান গ্রহণের আধঘণ্টার মধ্যে ভারতীয় বাহিনীর আক্রমণ শুরু হলো। তারা তখনই ব্যাগ গুছিয়ে ধানমন্ডিতে ফিরে গেলেন। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম- বিশ্বখাদ্য কর্মসূচির পিটার হুইলারের কাছ থেকে জানলাম, গভর্নর হাউসে প্রথম রকেটের আঘাত লাগার পরপরই তিনি এবং জন কেলি গভর্নর ডাক্তার এম এ মালিককে তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করতে পরামর্শ দিয়েছেন। বঙ্গভবনের ট্রেঞ্চ থেকে তারা যখন বেরিয়ে এলেন গভর্নর পদত্যাগপত্র দাখিল করলেন। তারপর প্রহরা দিয়ে তাকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আনা হলো। কিন্তু দেশ যেদিন স্বাধীন হলো তার নিরাপত্তার কথা ভেবে তাকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হলো। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার যুগোশ্লাভ চিকিৎসক আমাদের কলেজে বিক্ষিপ্ত গুলিতে জখম প্রতিবেশীদের চিকিৎসাসেবা দিতে লাগলেন। পল-মার্কের সঙ্গে কথা বলতে একদিন রুশ রাষ্ট্রদূত পোপপ এলেন। তিনি যখন চলে যাচ্ছেন আমি তাকে রুশ ভাষায় সম্ভাষণ জানাই, তিনি রুশ ভাষায় যুগোশ্লাভ ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তিনি কি রুশ ভাষা জানেন?’ ডাক্তার বললেন, খুব স্বাচ্ছন্দ্যে বলতে পারেন। পোপপ সম্ভবত ভেবেছিলেন আমি বাংলাদেশে সিআইএ প্রধান, দশ বছর আগে বাংলা সংবাদপত্রে আমাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগই করা হয়েছিল।

ড. এম এ মোমেন : সাবেক সরকারি চাকুরে, নন-ফিকশন ও কলাম লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App