×

পুরনো খবর

লাল-সবুজের বাংলাদেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১১:০৪ পিএম

লাল-সবুজের বাংলাদেশ
বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবজনক অধ্যায় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এ যুদ্ধের প্রাণপুরুষ বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ’৭১-এর ২৫ মার্চ কালরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলে পড়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পূর্ব পাকিস্তান নামে পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রদেশের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। জন্ম হয় নতুন লাল-সবুজের বাংলাদেশ। শুরু হয় সশস্ত্র প্রতিরোধ, মহান মুক্তিযুদ্ধ। এরপর দীর্ঘ ৯ মাস সারাদেশে হানাদার বাহিনী ও তার দোসরদের গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারী নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে। ১ কোটি মানুষ জন্মভ‚মি ছেড়ে শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথবাহিনী। বিজয়ের দিনটি জাতির জীবনে একই সঙ্গে বেদনারও। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য চরম মূল্য দিতে হয়েছে বাঙালিকে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে বাংলার পলি মাটি, রক্তিম হয়েছে পদ্মা-মেঘনা-যমুনার ধারা। সম্ভ্রম হারিয়েছেন ৩ লাখ মা-বোন। অগণিত মানুষ নির্যাতিত হয়েছেন, সহ্য করছেন দুর্বিষহ যন্ত্রণা। হানাদার পাকিস্তানি সেনারা জ্বালিয়ে দিয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। সম্পদহানি হয়েছে বিপুল। মহান বিজয় দিবসে কৃতজ্ঞ জাতি গভীর বেদনা ও বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে স্বাধীনতার জন্য যে বীর সন্তানরা আত্মদান করেছেন, যারা জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের। একাত্তরে যারা বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছিলেন তাদেরও সিংহভাগ ছিলেন তরুণ। তাই স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়েছে তরুণ প্রজন্মের ওপর। এখন যারা তরুণ তাদেরও অনুভবে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের শানিত চেতনা। সেই চেতনা নিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, তারপরও আমরা সাম্প্রতিককালে অনেক এগিয়ে গিয়েছি। এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবই। এজন্যই বারবার বলা হয়, বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে তরুণরা। সেই এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখাবেন প্রবীণরা। এ যুগ প্রতিযোগিতার। প্রতিযোগিতা মানে লড়াই। লড়াইয়ের জন্য চাই সাহস। আর সেই সাহস সঞ্চারিত করতে দরকার একটি সাহসী নেতৃত্ব। ১৯৭১ সালে জাতি পেয়েছিল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ নেতা আর তার সাহসী নেতৃত্ব। ১৬ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানের ৯৩ হাজার সৈনিক মাথা নিচু করে আত্মসমর্পণ করে যৌথবাহিনীর কাছে। পাকিস্তানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সূচিত হয় বাঙালির বিজয়। পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে স্বাধীন-সার্বভৌম লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের সবার। ঘরে ঘরে পথে-প্রান্তরে উড়ছে লাল-সবুজ পতাকা। মুক্তিযোদ্ধারা দেশের সূর্যসন্তান হিসেবে অভিহিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা হাজার বছরের সংগ্রামের পরিণতি। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কাহিনী বাঙালি হৃদয়ে চিরজাগরূক হয়ে থাকবে। তাদের আত্মত্যাগের ফসল নষ্ট হয়নি। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধসহ স্বাধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সব বীর শহীদের বীরত্বগাথা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। গেন্ডারিয়া, ঢাকা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App