×

জাতীয়

তাৎপর্যপূর্ণ বিজয় দিবস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:১১ এএম

১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। আজ থেকে ৫০ বছর আগে ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আসে মহান বিজয় দিবস। চলতি বছর জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ হিসেবে পালিত হচ্ছে এবং আসন্ন ২০২১ সাল মহান স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী। এ দুটো মাহেন্দ্রক্ষণকে সামনে রেখে এই বছরের বিজয় দিবস উদযাপন করছে জাতি।এবারের মহান বিজয় দিবস বাঙালির জাতীয় জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্ববহ।

১৯৭১ সালে আমরা যদি স্বাধীন না হতাম, তিরিশ লাখ প্রাণ আর প্রায় পাঁচ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বিজয় অর্জিত না হতো, তাহলে আজও বাংলাদেশ পাকিস্তানের কলোনি হিসেবেই বিশ্বে পরিচিত হতো। ঔপনিবেশিক শাসন, শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হতাম প্রতিটি ক্ষেত্রে। সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সব ক্ষেত্রেই আমরা বঞ্চিত থাকতাম। কোনো ক্ষেত্রেই আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম না। আমরা থাকতাম লাঞ্চিত-শোষিত-বঞ্চিত।

পাকিস্তান সৃষ্টির বিষয়টিই অদ্ভুত ছিল। বিশে^র এক অদ্ভুত রাষ্ট্র ছিল পাকিস্তান। অদ্ভুত এই রাষ্ট্রের নজির পৃথিবীর কোথাও নেই। বারোশ কিলোমিটার ভৌগলিক দূরত্ব নিয়ে কোনো রাষ্ট্র গঠিত হতে পারে না। ১৯৪০ সালে আমাদের আরেক মহান নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক লাহোর প্রস্তাব পেশ করেছিলেন- যা ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূলভিত্তি। ১৯৪১ সালের ১৫ এপ্রিল মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে লাহোর প্রস্তাবকে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের গঠনতন্ত্রে একটি মৌল বিষয় হিসেবে সন্নিবেশ করা হয়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতা পর্যন্ত এটি লীগের প্রধান বিষয় ছিল। বঙ্গবন্ধুও বাঙালির জন্য পৃথক রাষ্ট্র চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে এর উল্লেখ রয়েছে। অথচ ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হয়ে গেল। যদিও দেশভাগের জন্য বাংলার মানুষ দায়ী নয়। বাংলার ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে দিল্লিতে। লর্ড মাউনব্যাটেন, কংগ্রেস, মুসলীম লীগের সমঝোতায় পাকিস্তান হয়েছে ১৯৪৭ সালে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন থেমে থাকেনি। ১৯৪৮ সালে শুরু হয় বাংলা ভাষার জন্য আন্দোলন, স্বাধীন বাংলাদেশের পথে মাইলফলক। এই ভাষা আন্দোলনেও নেতৃত্বে ছিলেন তরুণ শেখ মুজিব। ভাষা আন্দোলনের জন্য প্রথম কারাবন্দিদের একজন ছিলেন বঙ্গবন্ধু।

এর আগেই জাতীয় রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর সরব উপস্থিতি। ১৯৪৭ সালে শেখ মুজিবুর রহমান তরুণ বয়সে যখন মুসলিম লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন, সে সময় কলকাতায় ঘটে যায় ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সে দাঙ্গার বর্ণনা তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে তুলে ধরেছেন শেখ মুজিব। সেই দাঙ্গা শেখ মুজিবের মনে গভীর দাগ কেটেছিল। কলকাতার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় আক্রান্তদের রক্ষা করতে শহর চষে বেড়িয়েছেন তরুণ শেখ মুজিব ও তার রাজনৈতিক সঙ্গীরা। দাঙ্গার সময় শেখ মুজিব ও তার একজন রাজনৈতিক সহযোগী মোয়াজ্জম চৌধুরীর ওপর অন্যতম দায়িত্ব ছিল মুসলমান অধ্যুষিত একটি বস্তি পাহারা দেয়ার। পাকিস্তান গঠনের পর ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পক্ষে আন্দোলনের জন্য বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্ব বাতিল হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল ১৯৪৯ সালে, যখন তিনি আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন? চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ওই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগে তাকে এবং আরো চারজনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন নির্বাহী পরিষদ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু মুসলেকা দিয়ে ছাত্রত্ব ফিরে পেতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। বরং দৃঢ় চিত্তে ঘোষণা করলেন, আমি কোনো অন্যায় করিনি। তাই মুসলেকা দিয়ে ছাত্রত্ব ফিরে পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এমন স্বাধীনচেতা দৃঢ়চিত্তের বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালে ঘোষণা করলেন বাঙালি জাতির ম্যাগনাকার্টা ছয়দফা। সে সময় লাহোরে তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারত? কিন্তু একটি যুগান্তকারী কর্মসূচি ঘোষণার জন্য উপযুক্ত স্থান ও সময় নির্বাচনে ভুল করেননি। ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে আইয়ুব খান কাশ্মির জয় করতে পারেননি। পাকিস্তানের লোকরা জেনে যায়, যুদ্ধে পাকিস্তানের বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। সামরিক শক্তি ভেঙে গেছে। অর্থনীতি দুর্বল হয়েছে। এ কারণে ভারতের সঙ্গে তাসখন্দ চুক্তি করতে হয়। কিন্তু এ চুক্তিতেও তো কাশ্মির পাওয়া গেল না। সঙ্গত কারণে পাকিস্তানিদের মধ্যে বিস্তর ক্ষোভ। সরকারবিরোধী কয়েকটি দল এ সুযোগে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানকে হটাতে ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে লাহোরে বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের কনভেনশন আহ্বান করে। অন্তত ৬০০ লোকের সমাবেশ। পূর্ব পাকিস্তান থেকে মুসলিম লীগের দুটি গোষ্ঠী, নেজামে ইসলামী, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খানসহ ২০-৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। শেখ মুজিবুর রহমান কনভেনশন বর্জন করেন। পরের কয়েকটি দিন পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যস্ত সময় কাটান। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যে সব বাঙালি রয়েছে, তাদের সঙ্গে কথা বলেন। পাকিস্তানের ক্ষমতাসীনরা বুঝে যায়, এক নতুন যুগের সূচনা হয়ে গেছে। ছয় দফা প্রদানের পরপরই বঙ্গবন্ধু নিজের নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। ‘আমাদের বাঁচার দাবি ছয় দফা’ শিরোনামে। শহর-বন্দর-গ্রামে এ পুস্তিকা বিলি করা হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার গৌরবের ইতিহাসের সঙ্গে এ পুস্তিকাটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এরপর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্ত করা হয় এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) ১০ লাখ জনতার উপস্থিতিতে শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেন ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ।

বাঙালির রাজনৈতিক-সাহিত্যিক-ঐতিহাসিক বিবর্তন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ৬ দফার প্রেক্ষাপট ও সময় শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শিতার ফসল। ৬৫-র ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পরের বছর। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা প্রণয়ন কোনো সাধারণ ব্যাপার ছিল না। পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতি এবং নিজস্ব নিরাপত্তা বিষয়ে সতর্ক মুজিবের ৬ দফা খুব স্বাভাবিকভাবেই বাঙালির বাঁচার দাবিতে রূপান্তরিত হয়েছে। ৬ দফা ঐতিহাসিক ঘটনা এই কারণে যে, তা বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। মাত্র ৪-৫ বছরের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ জনতার বাঁচার দাবিই ১৯৭০-এর নির্বাচন এবং ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত গড়িয়েছে। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কঠোরভাবে প্রচারমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করছিল। এবং ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান ছিল সরকারের বিরুদ্ধে বিরাট জবাব।

পাকিস্তান বুঝতে পারে বঙ্গবন্ধুর অমিত তেজ ও ক্ষমতা। এজন্য অবিভক্ত পাকিস্তানের পূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী হলেও বঙ্গবন্ধু ও তার দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে তালবাহানা করে কালক্ষেপণ করে। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এর মাধ্যমেই মূলত বাংলার স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বাঙালি বার্তা পেয়ে যায়। আর একাত্তরের ২৬ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হওয়ার আগে স্বাধীনতার ডাক দেন বঙ্গবন্ধুÑ যা চট্টগ্রামে কালুরঘাট থেকে প্রচারিত হয়। বঙ্গবন্ধুর ডাকে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেলাম প্রাণপ্রিয় স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।

স্বাধীনতার জন্য ইস্পাত-কঠিন মনোবল বঙ্গবন্ধুকে আগুয়ান রেখেছে। কর্মী ও সাধারণের জন্য ভাবনা বলি আর উৎকণ্ঠাই বলি, তা সর্বদা চিন্তনে রাখতেন বলেই তিনি পেরেছিলেন অসম্ভবকে সম্ভব করতে। কর্মীবান্ধব বঙ্গবন্ধু তাই ‘কারাগারের রোজনামচা’য় লিখেছেন, ‘আমার নিজের ওপর বিশ্বাস আছে, সহ্য করার শক্তি খোদা আমাকে দিয়েছেন। ভাবি শুধু আমার সহকর্মীদের কথা (উৎস : কারাগারের রোজনামচা, শেখ মুজিবুর রহমান, পৃষ্ঠা-৬৮)।’ তিনি চেয়েছিলেন এ দেশের জনগণের কষ্ট লাঘব করতে এবং তাদের আত্মপরিচয়ে বলীয়ান করতে। তিনি দৃপ্তকণ্ঠে বলেছিলেন, ‘নিজের জীবনের বিনিময়ে যদি এ দেশের ভাবী নাগরিকদের জীবনকে কণ্টকমুক্ত করে যেতে পারি, আজাদী আন্দোলনের সূচনাতে এ দেশের মানুষ মনের পটে যে সুখী-সুন্দর জীবনের ছক এঁকেছিল, সে স্বপ্নের বাস্তব রূপায়ণের পথ কিছুটাও যদি প্রশস্ত করে যেতে পারি, তাহলেই আমার সংগ্রাম সার্থক মনে করব (সূত্র : বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, শেখ হাসিনা, পৃষ্ঠা-৫২)।’

বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ফসল বাংলাদেশ। সেই বাঙালি জাতীয়তাবাদ ছিল পাকিস্তানবাদী সাম্প্রদায়িক মুসলিম জাতীয়তাবাদের প্রতিবাদ। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের সৃষ্টিতত্ত্বের ইতিহাস দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। মূলত, কর্মসম্পাদনে গণমানুষকে সম্পৃক্ত করার জন্য আবেদন সৃষ্টিকারী ও উদ্বুদ্ধকরণ সত্তার জাগরণ ঘটানোর কঠিন মনোবল থাকতে হয়। এই অনুধাবন ও চিন্তাকর্ষণে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং মানবহিতৈষী মনোভাব যে বাঙালির মুক্তির উপায় তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু অনুধাবনই করেছেন তাই নয়, তিনি হৃদয়ে ধারণ করে, বাস্তবে প্রতিফলন ঘটিয়ে বাঙালির মণিকোঠা স্পর্শ করে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে তিনি কতটা অনন্য সাধারণ। তাইতো এই মহান নেতার আহ্বান আপামর জনতার কাছে শুধু আহ্বানই নয়, এ এক আজ্ঞা পালনের ব্রত। তাইতো তিনি মাত্র ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করে বিশ্বে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। আর তা সম্ভব হয়েছে শুধু বঙ্গবন্ধুর দক্ষ নেতৃত্ব, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কারণেই। বঙ্গবন্ধু এমনই দূরদর্শিতার সঙ্গে বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা প্রণয়ন করেনÑ যা পরবর্তী সময়ে এক দফায় পরিণত হয় এবং তার ডাকে, প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় সমগ্র মুক্তিকামী জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ে যুদ্ধে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, বঙ্গবন্ধুর প্রেরণায়, বঙ্গবন্ধুকে আশ্রয় করে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়েই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের স্বাধীনতা। কিন্তু বাংলাদেশ জন্মের প্রায় সাড়ে তিন বছর পরই এ দেশের কপালে ঘোর অমানিশার কালো টিপ যেমন পরতে হয়েছে স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানপ্রেমীদের দ্বারা। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী ও মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি বিশেষের ষড়যন্ত্রের নীল নকশা অনুযায়ী একদল ঘাতক ও খুনি সেদিন শুধু রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতিকেই হত্যা করেনি, আমাদের জাতির পিতা এবং স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতিকেই হত্যা করে। হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের ভিত্তিকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে পাকিস্তানি সামরিক, বেসামরিক ও সাম্প্রদায়িক ধারায় দেশকে ফিরিয়ে নেয়া। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ছিল বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। হত্যাকারীরা রাষ্ট্রদ্রোহী ও মানবতার শত্রু। দুই বার ফাঁসির দণ্ড থেকে বেঁচে ফিরে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু স্বাধীন দেশে পরাজিত শত্রুরা তাকে হত্যা করে। তেমনি আজ জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ মুজিববর্ষে এবং স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে এসে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে হাত দেয়ার দুঃসাহস করে। এরা একাত্তরের রাজাকার। যে বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আজও বাঙালিরা স্বাধীন হতো না, পাকিস্তানের গোলাম হয়ে থাকতে হতো, সেই স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে হাত দেয়া মানে বাংলাদেশের অস্তিত্বে আঘাত করা। কারণ মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ আজ অভিন্ন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের ঠাঁই হবে না। এবারের মহান বিজয় দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App