×

সারাদেশ

করোনার সুযোগে মাদকে ডুবছে রামগতি কমলনগর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ০২:০২ পিএম

করোনার সুযোগে মাদকে ডুবছে রামগতি কমলনগর

প্রতীকী ছবি

করোনা মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। অন্যান্য পরিবহন বন্ধ থাকায় ইয়াবার চালান আসছে নদীপথে। প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা। মাদক ব্যবসা নিয়ে ঘটছে সংঘর্ষও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নে মাদকের শতাধিক স্পট রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ স্পটই সংখ্যায় বেশি। পুরুষ ও নারী যৌথভাবে এসব স্পটে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রামগতি উপজেলার বালুরচর, জনতাবাজার বেড়ীর উপর, জমিদারহাট মহিলা কলেজ এলাকা, আশ্রম পোলের গোড়া,চরসেকান্তর রাস্তার মাথা,সুফিরহাট এলাকা,রামগতি পৌরসভার সামনে,আলেকজান্ডার বাসস্টেশন, উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন প্রশিকা অফিস,রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে,হাজিগঞ্জ ছাত্রী ছাউনি, বিবিরহাট যাত্রী ছাউনি ও গরুর হাটা এলাকা,রামদয়াল দক্ষিণ বাজার,রামগতি বাজার মির রোড,কলেজ রোড,টাংকি বাজার, সেন্টাল মার্কেট, তেগাছিয়া বাজার,জয়নাল মুহরীর গোঁজ,তেমুহনী এলাকা,বিবিরহাট মাজার রোড ও কমলনগর উপজেলার করুনানগর,আনন্দ বাজার,হাজিরহাট মেঘনা সিনেমা হলের সামনে,মৌলভীরটেক,পাটারিরহাট,খায়েরহাট,চর ফলকন,হাজিরহাট বাজার তালপট্টি রোড চতুর্পাশে,চরলরেন্স,করইতলা,তোরাবগঞ্জবাজারের উত্তর মাথায় বেদে পল্লীর আখড়ায়, চরমার্টিন শান্তিরহাট,ইসলামগঞ্জ, রহিমগঞ্জ, রববাজার সরকারি পুকুর পাড়,ফজুমিয়ারহাট হাটের পুর্ব পাশে ও উত্তরে কাটাখালির মোড়, ভূলুয়া নদীর দু পাশে মাছের প্রজেক্টে,ফজুমিয়ারহাট চরঠিকা আছিয়ার বাপের সমাজে,চরঠিকা আছিয়ার বাপের খেয়া সংলগ্ন আশ্রয়ন প্রকল্পে,চরবসু বাজার ও বটতলী এলাকায় মাদক সেবন ও ক্রয় বিক্রয়সহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয় অপরাধীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোকজন জানায়, মাদক বিকিকিনি ও সেবনকারীরা রাতের বেলায় ব্যপক তৎপর হয়ে উঠে।রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে বেড়ে উঠে অচেনা লোকজনের আনাগোণা। আবার কখনো মটর সাইকেল কখনো সিএনজি হয় মাদক সাফ্লাইয়ের বাহন। একাধিক সূত্র জানায়, দু'উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঢেড়া বানিয়ে বাস করছে বেদে সম্প্রদায়ের লোকজন। মাদক কারবারের সাথে এরাও পুরোপুরি জড়িত।এরা সাপের বাক্সে করে অভিনব কায়দায় গ্রামের বিভিন্ন যায়গায় মাদক সরবরাহ করে থাকে।আবার বড় বড় ডিলাররা পাইকারদের কাছে মাদক পৌছে দেয়ার কাজে বেদে পল্লীর লোকজনকে কাজে লাগায় বলে জানান তারা।

সচেতন মহলের মতে, একসময় রামগতি-কমলনগরে ফেনসিডিল, গাঁজা ও মদের ব্যবসা করতেন গুটিকয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী। তাও খুব গোপনে বেচাকেনা হতো। এখন গাঁজা-মদের পাশাপাশি চলছে মরণনেশা ইয়াবা ট্যাবলেটের রমরমা ব্যবসা। তবে রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালীরাও এ কাজে জড়িত, প্রসাশন এদেরকে আটক করার পর রাজনৈতিক দলের নেতাদের ফোন আবার উপরের তদবীরের যাতাকলে ছাড়া পেয়ে যায় অপরাধীরা। আবার হাজতে পাঠালেও অজানা কারনে বেড়িয়ে এসে আরো বেপরোয়া মাদক বানিজ্য শুরু করে দেয়।

টাংকি এলাকার ব্যবসায়ী এজাজ উদ্দিন বলেন, পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও মাদক ব্যবসায় ঝুঁকছে। পুরুষরা নারীদের শেল্টার দিচ্ছে। এসব লোকজন যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই দলের নাম ভাঙিয়ে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ করে।

" মজার ব্যপার অনেক নামিদামি সমাজসেবকরা মানবসেবকের তকমা লাগিয়ে তাদের পোষ্য বাহীনিকে দিয়ে গোপনে চালাচ্ছেন ভয়াবহ মাদক ব্যবসা, তবে কুখ্যাত এই মাদক ব্যবসায়ী জনসেবকরা থেকে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে"।

কমলনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল আবছার ও রামগতি থানার ওসি মুহাম্মদ সোলায়মান বলেন, মাদকের সঙ্গে কোনো আপস নেই। মাদককে নিয়ন্ত্রনে আনতে জিরো টলারেন্স নীতি চালু রয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও করেছে। মাদক বিকিকিনির সাথে জড়িত কাউকে ছাড় নয় বলে জানান দুই ওসি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App