×

বিনোদন

নয়নের মণি হয়ে আছেন আমজাদ হোসেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০৯:২৪ এএম

নয়নের মণি হয়ে আছেন আমজাদ হোসেন
নয়নের মণি হয়ে আছেন আমজাদ হোসেন
যাদের শ্রমে, ঘামে ও সৃজনশীলতায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র পায়ের নিচে শক্ত জমি পেয়েছে আমজাদ হোসেন তাদেরই একজন। তিনি দশকের পর দশক ধরে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের তৃষ্ণা মিটিয়েছেন। তার নির্মিত ছবিগুলোর অধিকাংশই ক্ল্যাসিকের মর্যাদা পেয়েছে। তিনি হলেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেন। ১৪ ডিসেম্বর তার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। এই মহান শিল্পীকে ভোরের কাগজের শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমজাদ হোসেন ছিলেন একজন অভিনেতা, লেখক ও চলচ্চিত্র পরিচালক। ব্যতিক্রমধর্মী এই চলচ্চিত্র নির্মাতা তার কর্মজীবনে ১২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ৬টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ছয়টি ভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন এবং এক আয়োজনে পাঁচটি বিভাগে (গোলাপী এখন ট্রেনে চলচ্চিত্রের জন্য) জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। আমজাদ হোসেন ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুর জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। লেখালেখির মাধ্যমেই তার সৃজনশীল জীবন শুরু। ছড়া দিয়ে সাহিত্যের অঙ্গণে তার প্রবেশ। ছোটদের জন্যও তিনি লিখেছেন বহু গল্প, ছড়া এবং উপন্যাস। ১৯৬১ সালে ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় দিয়ে তার চলচ্চিত্রে আগমন। একই বছর মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ ছবিতে অভিনয় করেন। পরিচালক সালাহ্উদ্দিন তার রচিত নাটক ‘ধারাপাত’ অবলম্বনে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ১৯৬৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ধারাপাত তার রচিত প্রথম চলচ্চিত্র এবং তিনি এই চলচ্চিত্রে একটি প্রধান চরিত্রে অভিনয়ও করেন। পরবর্তীকালে তিনি জহির রায়হানের দলে যোগ দেন ও তার সহকারী হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুন নিয়ে খেলা’ (১৯৬৭)। তিনি এটি নুরুল হক বাচ্চুর সঙ্গে যৌথভাবে নির্মাণ করেন। একক পরিচালক হিসেবে তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘জুলেখা’ (১৯৬৭)। ১৯৭০ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত তার লেখা চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’, পরবর্তীতে বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৭০-এর দশকে তিনি ‘নয়নমনি’ (১৯৭৬), ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ (১৯৭৮), ‘সুন্দরী’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ১৯৮০-এর দশকে ‘কসাই’ (১৯৮০), ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’ (১৯৮২), ‘দুই পয়সার আলতা’ (১৯৮২), ‘ভাত দে’, (১৯৮৪) ‘সখিনার যুদ্ধ’ (১৯৮৪) কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রে তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালকের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভ‚ষিত করে। ব্রেন স্ট্রোক করে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। তিনি চলে গেছেন ঠিকই কিন্তু তার কাজের মধ্য দিয়ে অমর হয়ে আছেন চলচ্চিত্র প্রেমীদের অন্তরে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App