×

সারাদেশ

মণিরামপুরে ১২ প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০, ০৯:১৮ পিএম

মণিরামপুরে ১২ প্রাথমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ

ছবি: প্রতিনিধি

যশোরের মণিরামপুরে ১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় বেশ আগে ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস। ইতিমধ্যে কয়েকটি বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ হাতে নিয়েছে ওই অফিস।

জরাজীর্ণ ভবনগুলো নিলামের জন্য নোটিশও জারি করেছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। কিন্তু হঠাৎ করেই নিলাম কাজ বন্ধ করে দেন ইউএনও। ফলে পরিত্যক্ত ভবন অপসারণ না হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে উন্নয়ন কাজ।

জানা যায়, উপজেলার কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খেদাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেঘরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঁধাঘাটা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাড়ালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হেলাঞ্চি কৃষ্ণবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পলাশী রাজবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুড়াগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সালামতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজরাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাকোশপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে করোনার আগে। পরিত্যক্ত ভবনগুলো সরিয়ে সেখানে নতুন ভবন নির্মাণের কথা রয়েছে। সেইলক্ষ্যে ভবনগুলো নিলাম ডাকের জন্য চলতি বছরের ১৯ অক্টোবর বিকাল ৩ টায় নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেহেলী ফেরদৌস। ১১ অক্টোবর তিনি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই নিলাম কাজ ১৯ অক্টোবর বেলা দেড় টায় বন্ধ ঘোষণা করেন ইউএনও। সেই থেকে বন্ধ রয়েছে ভবনগুলোর নিলাম কাজ।

এদিকে কয়েকটি বিদ্যালয়ে পুরনো ভবনগুলোর জায়গায় নতুন ভবন নির্মাণের জন্য উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস থেকে স্ব স্ব বিদ্যালয়ের সামনে সাইনবোর্ড ঝুঁলিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো তালিকাভুক্ত হওয়ার কাজ চলমান রয়েছে। সাইনবোর্ড ঝুলানো স্কুলগুলোর নতুন ভবনের কাজ আগামী বছরের মাঝামাঝি শেষ করার কথা রয়েছে। চলতি বছরের আগষ্টে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুধু সাইনবোর্ডেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

সোমবার (৭ ডিসেম্বর) সরেজমিন উপজেলার বাকোশপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির একটি ভবন জরাজীর্ণ। ভবনটি নির্মাণের জন্য স্কুলের সামনে রাস্তার পাশে সাটা রয়েছে সাইনবোর্ড। গত আগস্টে কাজ শুরু হয়ে আগামী পহেলা মে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি আজও।

জানতে চাইলে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক গৌতম কুন্ডু বলেন, পরিত্যক্ত ভবনটিতে দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হতো। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ রয়েছে। নতুন ভবনের টেন্ডার হয়েছে। পুরনোটা না ভাঙায় নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়নি।

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর পদটি শূন্য থাকায় নতুন ভবনের কাজ শুরু না হওয়ার ব্যাপারে তেমন কোন তথ্য জানা যায়নি। তবে অফিসের কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, পুরাতন ভবন বা গাছ সরানো না হওয়ায় কাজ বন্ধ রয়েছে।

নিলামের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেহেলী ফেরদৌস বলেন, নিলাম কমিটির সভাপতি ইউএনও। আগামী বছরের মার্চে ইউপি নির্বাচন। ভোটকেন্দ্র হওয়ায় নির্বাচনে এই ভবনগুলো ব্যবহৃত হয়। এখন ভবন ভাঙা পড়লে ভোটের আগে নতুন ভবনের কাজ শেষ হবে না। ফলে ইউএনও নিলাম কাজ স্থগিত রেখেছেন।

তবে এই ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু জানাতে চাননি মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান। তিনি বলেন, অনির্দিষ্ট কারণে পুরাতন ভবনের নিলাম কাজ বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয়রা ইউপি নির্বাচনের জন্য পুরাতন ভবন নিলান বন্ধের বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। একই বাউন্ডারিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন আছে। স্থানীয় আরও একজন বলেন, নির্বাচনের জন্য নিলাম বন্ধ এটা মেনে নেওয়া যায় না। অন্য কোন কারণ থাকতে পারে। কোন মহল সরকারের উন্নয়ন কাজে বাধা সৃষ্টি করতেই এই সব খোঁড়া অজুহাত দেখাচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App