×

সারাদেশ

গ্রামপুলিশদের কাছ থেকে কমিশন নিলেন অফিস সহকারী!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২০, ০৭:৫৯ পিএম

গ্রামপুলিশদের কাছ থেকে কমিশন নিলেন অফিস সহকারী!

অফিস সহকারী মনির আলম

গ্রামপুলিশের যাতায়াত ভাড়ার টাকায় ভাগ বসানোর অভিযোগ উঠেছে চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে। তার নাম মনির আলম। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এ উপজেলায় চাকরি করেন। এরপরে ওয়ান ইলেভেনের সময়ে বদলি হয়ে এক বছর লালমোহন নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে চাকরি করেন। পরে অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে আবারো চরফ্যাশন উপজেলায় বদলি হয়ে আসেন তিনি।

এর মধ্যে কিছুদিন উপজেলা ভূমি অফিসে কাজ করেন। সেখান থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বদলি করা হয় স্থানীয় সরকার শাখায়। দুই যুগ ধরে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও দাপ্তরিক বদলির মধ্য দিয়েই অভিযোগ চাপা পড়ে থাকে। হয়নি কোনো তদন্ত। এমনটাই বলছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কর্মকর্তা ও সেবাগ্রহীতারা।

রবিবার ( ৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার মাদ্রাজ ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ তাজুল ইসলামসহ একাধিক গ্রামপুলিশ অভিযোগ করে বলেন, দূর্গম এলাকায় দায়িত্ব পালনে সরকারি যাতায়াত ভাতার টাকা প্রায় ৩ বছর ধরে ২২ মাস ধরে আটকা। ওই টাকা গেল বৃহস্পতিবার আনতে উপজেলায় গেলে অফিস সহকারী মনির আলম ২৬ হাজার ৪ শত টাকা থেকে ২ হাজার ৪ শত টাকা প্রতিজন গ্রামপুলিশের কাছ থেকে রেভিনিউ স্টাম্পে সাইন নিয়ে রেখে দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামপুলিশ বলেন, ৩২ মাস ধরে আমাদের যাতায়াত ভাতার টাকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আটকা আছে। আমাদের গ্রামপুলিশের সংগঠনের সদস্যরা মিলে যাতায়াত ভাতাগুলো কীভাবে পেতে পাড়ি এ নিয়ে মনির আলমের সঙ্গে আলোচনা করি। তিনি আমাদের “অনারিয়াম” দেয়ার প্রস্তাব দেন।

আরেক গ্রামপুলিশ কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, যাতায়াত ভাতা বাবদ প্রতি মাসে ১২ শত টাকা করে দেয়ার কথা থাকলেও ৩২ মাস ধরে ওই টাকা পাইনি। প্রতি ৩ মাস অন্তর অন্তর ওই ভাতার টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও সেখান থেকে মনির আলম টাকা কেটে রেখেছে।

ওই গ্রাম পুলিশ ক্ষোভ করে আরো বলেন, আসলে মনির আলমরা শুধু আমাদের যাতায়াতের ভাতায় ভাগ বসায়নি। তারা আমাদের মতো শত শত গরিবদের পেটও কেটে দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ২ শত গ্রামপুলিশের মধ্যে ১৮৩ জনের জন্য ২২ মাসের যাতায়াত ভাতা বাবদ ৪৬ লাখ ৫১ হাজার ২ শত টাকা বরাদ্দ হয়। এদের মধ্যে ১৫ জনের জনপ্রতি ১৪ হাজার ৪ শ টাকা ও ১৬৮ জনের জন প্রতি ২৬ হাজার ৪ শত টাকা করে বরাদ্দ আসলেও অভিযোগকারীদের মাঝে গেল ৫ ডিসেম্বর শনিবার জনপ্রতি ২৪ হাজার টাকা করে বিতরণ করা হয়।

এ অভিযোগ অস্বীকার করে মনির আলম বলেন, রেবেনিউ স্টাম্পের খরচ ছাড়া গ্রামপুলিশদের কাছ থেকে “অতিরিক্ত” টাকা নেয়ার কোনোও সুযোগ নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, গ্রামপুলিশরা কোনো অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও ওই গ্রামপুলিশদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। মনির আলমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App