×

জাতীয়

৬ চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ, শ্রমিকদের কর্মবিরতির ডাক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ০৭:৪৩ পিএম

৬ চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ, শ্রমিকদের কর্মবিরতির ডাক

সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা/ছবি: ভোরের কাগজ

৬ টি চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ করার প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে দেশের ১৫টি চিনিকল চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশন ও বাংলাদেশ চিনিশিল্প কর্পোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন। সংগঠন দুইটি ৭ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন দেশের সব চিনিকলের মিল গেট এলাকায় দুই ঘন্টা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে।

শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় স্বাধীনতা হলে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় সংগঠন দুইটি। এ সময় জানানো হয়, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি আদায় না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি দিবেন তারা।

বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী বাদশা লিখিত বক্তব্যে বলেন, সরকারের কাছে আগামী মাড়াই মৌসুমে ১৫ টি চিনিকলের মাড়াই অব্যাহত রাখার দাবি জানাচ্ছি। লোকসানের নামে ৬টি মিলের আখ মাড়াই বন্ধ করার চলমান প্রক্রিয়া আমাদের হতাশ করেছে। এটা করা হলে হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারী চাকুরি হারাবে এবং লক্ষ লক্ষ আখচাষি আখচাষ করা থেকে বঞ্চিত হবে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সংগঠন দুইটির কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে শাহজাহান আলী বাদশা বলেন, সাত ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন প্রত্যেক মিল গেট এলাকায় আখচাষি ও শ্রমিক কর্মচারী সমন্বয়ে দুই ঘন্টা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। ৯ ডিসেম্বর প্রতিটি চিনিকল এলাকার মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক ( ডিসি) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএন)র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠিসহ স্বারকলিপি দেয়া হবে। ১৫ ডিসেম্বররের মধ্যে দাবী আদায় না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেব আমরা। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ছয়টি চিনিকল বন্ধ না রেখে ১৫ টি চিনিকলই চালু রাখার আবেন জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা চিনি শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেন। পঞ্চগড় এক আসনের সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের সভাপতি মজাহারুল হক প্রধান বলেন, ৬ টি চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ করলে। কৃষকরা আখ চাষ করবে না। আর আখ না থাকলে এমনিতেই এ মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। বেকার হয়ে পরবে হাজার হাজার শ্রমিক। আমরা এটা হতে দিতে পারি না। এক বার কোন মিল বন্ধ হলে আর চালু হয় না।

মজাহারুল হক প্রধান বলেন, আমাদের চিনিকলে উৎপাদিত চিনির স্বাস্থ্যসম্মত এর ব্যপক চাহিদা রয়েছে। এটাকে সঠিকভাবে বাজারজাত করতে হবে। তিনি অভিযোগ করেন, চিনিকলের লোকসানের বিষয় সরকারকে একটি মহল ভুল বোঝাচ্ছে। তারা এ থেকে সুবিধা নিতে চাচ্ছে। চিনিশিল্প করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, আধনিকতার নামে চিনিকল বন্ধ হতে দেয়া যাবে না। চিনিকল চালু রেখেই একে আধুনিক করতে হবে। পুরনো যন্ত্রপাতি মেরামত ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হলে এসব কারখানার উৎপাদন ব্যয় কমবে। আখে চিনি আহরণের মাত্রাও বাড়বে। এসময় তিনি বলেন, কেরু অ্যান্ড কোম্পানির মতো প্রতিটি চিনিকলেই ভিনেগার সহ অন্য পণ্য উৎপাদনে জোর দিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে চিনিশিল্প করপোরেশন শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়াররুল হক, প্রথম সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখন।

প্রসঙ্গত, গত ১ ডিসেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন চিনিকলে লোকাসান কমিয়ে আনার লক্ষ্যে চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১৫ টি চিনিকলের মধ্যে ৯টি চিনিকলে উৎপাদন পরিচালনা করা হবে। আর অবশিষ্ঠ ৬টি চিনিকলে উৎপাদিত আখ নিকটস্থ চিনিকলে সমম্বরয়পূর্বক মাড়াই করার বিষয় সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে। আখ মাড়াই স্থগিত করা চিনিকলগুলোর মধ্যে রয়েছে, পাবনা সুগার মিল, কুষ্টিয়া সুগার মিল,পঞ্চগড় সুগার মিল, শ্যামপুর সুগার মিল, রংপুর সুগার মিল ও সেতাবগ্ঞ্জ সুগার মিল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App