×

জাতীয়

টিকার আগমনী বার্তায় আশায় বুক বাঁধছে বিশ্ব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২০, ০৯:২৮ এএম

করোনা টিকার আগমনী বার্তা শোনা যাচ্ছে দিকে দিকে। আর আশায় আশায় বুক বাঁধছে বিশ্ব! শীর্ষ বাছাই যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড টিকা চ‚ড়ান্ত পরীক্ষায় ৯০ নম্বর পেয়ে ইতোমধ্যেই পাস। ৯৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে আগেই পাস করে বসে আছে মার্কিন কোম্পানি ফাইজার। সে দেশের মডার্নাও তাই। অক্সফোর্ড টিকার সাফল্যকে ‘কল্পনাতীত’ হিসেবে অভিহিত করে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক তার দেশবাসীকে অভয় দিয়ে বলেছেন, ইতোমধ্যেই ১০ কোটি ডোজের অর্ডার দিয়ে রেখেছেন তারা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, দারুণ খবর! অসাধারণ ফলাফল! ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও গত রবিবার জানান, ঘরোয়া পর্যায়ে ভারত বায়োটেকের উদ্ভাবিত একটি টিকার চ‚ড়ান্ত ট্রায়াল আগামী এক-দুই মাসের ভেতর সম্পন্ন হবে। এদিকে রাশিয়ার স্পুটনিক-ফাইভ এর নির্মাতারা দাবি করেছেন, ফাইজার এবং মডার্নার চেয়ে কম হবে তাদের টিকার দাম। একেকটি টিকার দাম পড়বে ১০ মার্কিন ডলার বা ৮৫০ টাকা। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ফের নিশ্চিত করেছেন, ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই টিকা প্রয়োগের কাজ শুরু করা হবে সে দেশে। দুই কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হবে প্রথম মাসের মধ্যেই। এরপর প্রতি মাসে তিন কোটি মানুষকে আনা হবে টিকার আওতায়। তবে ফাইজার ও জার্মান বায়োএনটেকের তৈরি টিকা আমেরিকার আগেই, ১ ডিসেম্বর ছাড়পত্র পেতে যাচ্ছে ব্রিটেনে। দুনিয়াজুড়ে ভ্যাকসিন দৌড়ে মার্কিন কোম্পানি ফাইজার ও মডার্নার চেয়ে এখনো হয়তো কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘চ্যাডক্স১ এনকোভ২০১৯’ নামের টিকা। কিন্তু এই টিকাটির দিকেই তাকিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারতসহ অধিকাংশ উন্নয়নশীল কিংবা গরিব দেশ। অক্সফোর্ড টিকার বাড়তি সুবিধাÑ এটির দাম তুলনামূলক কম, সহজে পরিবহনযোগ্য এবং সহজলভ্য। ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানির এ টিকা ভারত এবং ব্রাজিলসহ আরো বহু দেশে একযোগে উৎপাদন করা হবে। ২০২১ সালের মধ্যেই টিকার ৩০০ কোটি ডোজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তাদের। তাছাড়া ‘কতটা নিরাপদ’ সে পরীক্ষায় এক শতে একশ পেয়েছে ‘চ্যাডক্স১ এনকোভ২০১৯’। টিকাটি সাধারণ ফ্রিজেই কমপক্ষে ছয় মাস মজুত রাখা যাবে। এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া যাবে। এখন ভারত, আমেরিকা, কেনিয়া ও জাপানে এই টিকার ট্রায়াল চলছে। অক্সফোর্ড-উদ্যোগের অন্যতম সহযোগী ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান আদার পুনাওয়ালা এ খবরটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, আগামী জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারির মধ্যেই টিকা বাজারে চলে আসবে। জুলাইয়ের মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ কোটি ডোজ উৎপাদনের টার্গেট আছে আমাদের। তবে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই ১০ কোটি ডোজ সরবরাহ করতে পারব। টিকার সর্বোচ্চ দাম পড়বে এক হাজার টাকা। তবে সরকারের কাছে বিক্রি করা হবে ২৫০ টাকায়। বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছে বিক্রি হবে ৫০০-৭০০ টাকায়। এদিকে গরিব দেশগুলোর টিকাপ্রাপ্তি নিয়ে জি-২০ নেতারা আশ্বাস দিয়েছেন, করোনা টিকার সুষ্ঠু বণ্টন ও বিতরণ নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে ‘মাঠ পর্যায়ের কাজে কোনো অগ্রগতি নেই’ বলে ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল। এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, টিকা কেনার টাকা মজুত রাখা হয়েছে। যেখানেই আগে পাওয়া যাবে, দেশের মানুষের জন্য টিকা আনা হবে। অন্যদিকে গরিব দেশগুলোর টিকার চাহিদা মেটানোর জন্য দ্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস এন্ড ইমুনাইজেশন (গ্যাভি) ও কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের (সিইপিআই) সঙ্গে যৌথভাবে একটি উদ্যোগ গড়ে তুলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর নাম রাখা হয়েছে, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গেøাবাল অ্যাকসেস বা কোভ্যাক্স। এরা টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানির কাছ থেকে বিনামূল্যে বা স্বল্প মূল্যে টিকা কিনে মজুত করবে এবং পরবর্তী সময়ে ইউনিসেফের নেতৃত্বে বিশ^ব্যাপী বিতরণ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App