×

সারাদেশ

বিরোধে বাউফলের ঘাটে ভিড়ছেনা ঢাকার লঞ্চ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২০, ০৩:৪৪ পিএম

বিরোধে বাউফলের ঘাটে ভিড়ছেনা ঢাকার লঞ্চ

সুন্দরবন যাতায়াতকারী পর্যটকবাহী নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

লঞ্চ কোম্পনীগুলোর বিরোধ, ইজারাদার কর্তৃক অতিরিক্ত বার্থিং চার্জ দাবি এবং নতুন করে লাইনে আসা লঞ্চ প্রত্যাহারের দাবির জেরে বাউফলের অন্যতম বগা লঞ্চঘাট পল্টুনে ভিড়ছে না ঢাকা যাওয়া-আসার দোতলা লঞ্চ। বৃহষ্পতিবার (১৯ নভেম্বর) পর্যন্ত চার দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও এর কোন সমাধান না হওয়ায় শত শত যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। জানা গেছে, পটুয়াখালী-ঢাকা নৌ রুটে প্রতিদিন ৬টি দোতলা লঞ্চ চলাচল করছে। এরমধ্যে দৈনিক ঢাকা থেকে ৩ টি এবং পটুয়াখালী থেকে ৩টি লঞ্চ ছাড়া হয়। তবে রোটেশনের মাধ্যমে এই রুটে মোট ১১ টি লঞ্চ যাতায়াত করছে। ওই লঞ্চগুলো যাওয়া-আসার সময় বাউফলের অন্যতম লঞ্চঘাট বগা পল্টুনে ভিড়তো। এই ঘাটটি দিয়ে দৈনিক প্রায় দেড় হাজার যাত্রী যাওয়া-আসা করেন। চলতি মাসে শুরুতে এই রুটে রয়েলক্রজ নামের একটি বিলাসবহুল দোতলা লঞ্চ চলাচল শুরু করে। রয়েলক্রুজ লঞ্চটি বিলাসবহুল, অন্য লঞ্চ থেকে যাত্রীভাড়া কিছুটা কম এবং কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছায় বলে বেশিরভাগ যাত্রীরা এই লঞ্চটিতে যাতায়াত করতে শুরু করেন। ফলে অন্য লঞ্চগুলোতে যাত্রীসংখ্যা হৃাস পায়। অপরদিকে ইজারাদার কর্তৃক বগা পল্টুনে বার্থিং চার্জ এক হাজার সাত শত টাকার পরিবর্তে সারে তিন হাজার টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে অন্যান্য লঞ্চগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এনিয়ে ইজারাদার, রয়েলক্রুজ লঞ্চ এবং অন্যান্য লঞ্চ কোম্পানীর মধ্যে ত্রিমূখী মতবিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে গত ১৬ নভেম্বর থেকে রয়েলক্রজ বাদে অন্যান্য লঞ্চগুলো একজোট হয়ে বগা পল্টুনে লঞ্চ ভিড়ানো বন্ধ করে দেয়। একই সাথে রয়েলক্রুজ লঞ্চকে এই রুট থেকে প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়। বর্তমানে লঞ্চগুলো বগা পল্টুনে না ভিড়ে নদীর পশ্চিম পাড়ের চরগড়বদী পল্টুনে ভিড়ছে। লঞ্চগুলো বগা লঞ্চঘাট পল্টুনে না ভেড়ার ফলে বাউফল, দশমিনা এবং গলাচিপাসহ দক্ষিণাঞ্চলের শত শত যাত্রীরা খেয়া নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হয়ে আসা-যাওয়া করছেন। ব্যাবসায়িরা ঝামেলায় পড়েছেন লঞ্চে আনা মালামাল লোড-আনলোড করা নিয়ে। এদিকে লঞ্চগুলো বগা পল্টুনে না ভেড়ার কারণে বেকায়দায় পড়েছেন ঘাট ইজারাদারও। প্রতিদিনই তাদের কয়েক হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। এদিকে ব্যাবসায়িক কাজে নিয়মিত ঢাকা যাওয়া-আসা করা বাউফলের একাধিক ব্যবসায়িরা জানান, এই রুটে রোটেশন পদ্ধতিতে লঞ্চগুলো চলাচল করায় যাত্রীরা লঞ্চগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সময় যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়াও আদায় করা হয়। রয়েলক্রুজ লঞ্চটি চালু হওয়ায় জিম্মি হওয়া থেকে যাত্রীরা রেহাই পেয়েছে। অন্যান্য লঞ্চগুলোর বেআইনী অঘোষিত দাবি কোনভাবইে মেনে নেয়া যায় না। এদিকে এমভি ছত্তার খান লঞ্চের সুপারভাইজার নূরুল আলম জানান, বিষয়টি নিয়ে লঞ্চ মালিক সমিতি বিআইডাব্লুটিএ’র পরিচালক বরাবরে দরখাস্ত দেয়া হয়েছে। বগা পল্টুনে ইজারাদার কর্তৃক নিয়োজিত লোকাদের আচরণ অত্যন্ত লজ্জাজনক। বিষয়টি বাউফল উপজেলা চেয়ারম্যান মিমাংসা করে দিতে পারেন বলেও তিনি জানান। চারদিনেও বিষয়টির সন্তোষজনক মিমাংসা কেন হচ্ছে না জানতে চাইলে পটুয়াখালী বিআইডাব্লুটিএ’র সহকারি পরিচালক খাজা সাদিকুর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন, এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। তবে শুনেছি। লঞ্চগুলোর ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ি বার্থিং চার্জ করা হয়। তবে অতিরিক্ত বার্থি চার্জ করা বেআইনী। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মিমাংসা করার চেষ্টা করবো। এবিষয়ে বগা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বর্তমান বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, অতিরিক্ত বার্থি চার্জ চাওয়ার কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত: রয়েলক্রুজ লঞ্চটি চলাচল করায় অন্যান্য লঞ্চগুলো প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে বগা পল্টুনে লঞ্চগুলো ভিড়াচ্ছে না। আমি  বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করছি। বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি জেনেছি। সকল পক্ষকে এক জায়গায় বসানোর জোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App