×

সম্পাদকীয়

ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২০, ০৮:৪০ পিএম

প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা প্রস্তুতি; দুর্যোগ মোকাবিলায় আনবে গতি- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গতকাল থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে ফায়ার সপ্তাহ-২০২০। ২১ নভেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী এই সপ্তাহ উদযাপিত হবে। প্রতি বছর নিয়মমাফিক ফায়ার সপ্তাহ পালিত হলেও স্টেশন বাড়ানো ছাড়া এই সংস্থার সক্ষমতা বাড়ানো বিষয়ে মনোযোগ নেই। অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও অব্যবস্থাপনায় রাজধানীতে প্রতিদিন ঝুঁকি বাড়লেও সেভাবে উন্নয়ন ও বিকাশ হচ্ছে না আগুন নির্বাপক কর্তৃপক্ষের কর্ম ও ক্ষমতার পরিধির। এ কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে প্রায় সবখানেই। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতার দুর্বলতা আরো স্পষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে গত ৫ নভেম্বর রাজধানীর ডেমরায় কোনাপাড়ায় ১০তলা ভবনে অগ্নিকাণ্ডের পর সেটি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে। ১৬ ইউনিটের ১০ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে পুড়ে যায় ভবনটির ছয়টি তলা। শুধু এই একটি ঘটনা নয়, গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও একই বছরের ২৮ মার্চ বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে ঘটনাতেও হিমশিম খেতে দেখা যায় ফায়ার সার্ভিসকে। জনবল না থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। দিন দিন ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের কাজের পরিধি বাড়লেও বাড়েনি উপযোগী সক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা। জনবল সংকট, সরঞ্জাম থাকলেও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবলের অভাবসহ নানা সমস্যার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই বাহিনীর। ফলে ফায়ার সার্ভিসের পরিপূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জনগণ। ১০ বছর আগে সারাদেশে ২০৪টি ফায়ার স্টেশন থাকলেও বর্তমানে এর সংখ্যা ৪৩৬টি। অথচ বর্তমানে এ অধিদপ্তরের প্রাধিকারপ্রাপ্ত মোট জনবল ১৩ হাজার ১১০ জন। কর্মরত আছেন ১০ হাজার ৮৯৩ জন। যার মধ্যে ফায়ারম্যানের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এদিকে রাজধানীসহ সারাদেশে অসংখ্য ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও কারখানা থাকলেও তার সঠিক হিসাব নেই ফায়ার সার্ভিসের। এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্ণয়ের পর চিঠি দিয়ে সাবধান করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না তাদের। অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন, ২০০৩-এর ৭ ধারা অনুযায়ী অগ্নিনির্বাপণ ছাড়পত্র ছাড়াই তৈরি হয়েছে অনেক বহুতল ভবন। এর প্রধান কারণ আইন অনুযায়ী ৭ তলার উপরে (২০ ফিট) গেলে সেটির ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন দরকার। কিন্তু রাজউক ১০তলা পর্যন্ত অনুমোদন দিয়ে থাকে। ফলে ফায়ার সার্ভিস অ্যাকশনে গেলে রাজউকের অনুমোদন দেখে কিছু করার থাকে না। আবার আইন কার্যকর করতে হলে অন্য কোনো সংস্থার সহায়তা নিতে হয়। মাঝে একবার ফায়ার সার্ভিস রুলস অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট চালানোর পরিকল্পনা থাকলেও উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার পর সেই পরিকল্পনাও বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষের ক্ষমতার পরিধি বাড়ানোও খুবই দরকার। জোগান দিতে হবে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির, আধুনিক প্রযুক্তির। বাড়াতে হবে প্রশিক্ষিত লোকবল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App